স্মৃতি মন্ধানা ও পলাশ মুচ্ছলের বিয়ে ভেঙে গেল। কেন? সোশাল মিডিয়ায় কিছু মানুষ ভীষণ কৌতূহলী জানতে। ব্যর্থ বিয়ে-খবর বেশি বিকোয়!
‘বিয়ে’ একটি সম্ভাবনা। একটি এমন অধ্যায়, যা মানুষের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। বিয়ে যেমন সফল হতে পারে, তেমনই ব্যর্থও হতে পারে। বিয়ে যে করেছে, সে বিয়ে করে পস্তায় অনেক সময়ই কেন বিয়ে করলাম ভেবে। আবার যে বিয়ে করেনি, সে অনালোকিত অভিজ্ঞতার বৃত্তেই বাস করে। এবং পস্তায়। বিয়েকে এজন্য ‘দিল্লি কা লাড্ডু’ বলা হয়। বিয়ে ও যৌনতা পরস্পরের সঙ্গে জড়িয়ে। ভারতীয় উপমহাদেশে একদা বিয়ে-পূর্ব যৌনতাকে সুনজরে দেখা হত না। ধরে নেওয়া হত, দু’টি পূর্ণবয়স্ক মানুষের মধ্যে যৌনতার সম্পর্ক হতে পারে সামাজিক অনুমোদন পেলে। বিয়ে, ছিল, সেই সামাজিক অনুমোদনের ইনস্ট্রুমেন্ট। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিয়ের ধারণা বদলেছে। তাতে পরত যোগ হয়েছে, আবার পরত খসেও পড়েছে। ‘হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট’-এ স্ত্রী বর্তমান থাকাকালীন পুরুষ অন্য কোনও বিয়ে করতে পারবে না, নিয়ম হয়েছে। রেজিস্ট্রি করার উপর জোর বেড়েছে।
বিয়ে যখন সফল হয় না, বা একটি বিবাহিত সম্পর্কে যখন তৃতীয় ব্যক্তির ছায়াপাত ঘটে, তখন বিয়ে ঘিরে জল্পনা ঘনায়। ‘বিয়ে’ নামক প্রতিষ্ঠানটি কতখানি টেকসই তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কয়েক দিন আগে জয়া বচ্চন মন্তব্য করেছিলেন যে, তিনি চান না তঁার নাতনি বিয়ে করুক। এই মন্তব্য ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়া উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। সামান্থা রুথ প্রভু দ্বিতীয়বার বিয়ে করে আলোচনার কেন্দ্র উঠে আসেন। এবার বিয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রতি অনাস্থা দেখায়নি কেউ, বরং কথা উঠেছে, সামান্থার পূর্বতন বিয়ে ও পূর্বতন সঙ্গীকে নিয়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা কিসিমের মানুষের সহাবস্থান।
একটি শ্রেণি পরোক্ষে এই তুল্যমূল্য হিসাব কষতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল যে, সামান্থা আগের সম্পর্কে আগের বিয়েতে কতখানি সুখী ছিলেন বা ছিলেন না, বা আগের বিয়েটি টেকেনি কেন, সে কি সামান্থার জন্যই? বিয়ের সঙ্গে লেপ্টে থাকা যৌনতার পরিসর পেরিয়ে এই ধরনের আলোচনা আসলে ব্যক্তির চরিত্রহননের অছিলা। স্মৃতি মন্ধানা ও পলাশ মুচ্ছলের বিয়ে শেষ পর্যন্ত ভেঙে গেল। যে-বিয়ে প্রায় ছাদনাতলা পর্য়ন্ত গড়িয়েছিল, তা ভেঙে যাওয়ার নেপথ্যে বড় কারণ থাকবে, বলা বাহুল্য। এবং সেই কারণটি যে অতি ব্যক্তিগত তাও বলার অপেক্ষা রাখে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় অতি সক্রিয় কিছু মানুষ চান, এ কারণটি আগাগোড়া জানতে। জেনে আখেরে তঁাদের কী হবে, বা তঁারা এই সমস্যার কোনও সমাধান দিতে পারবেন কি না, এসব নিয়ে তঁাদের স্পষ্ট ধারণা নেই, তাও রহস্যসন্ধানী গোয়েন্দার মতো আচরণ করেই চলেছেন।
মনস্তত্ত্বের দিক থেকে দেখলে, সফল বিয়ে একটি দম্পতির জীবনে যেসব মাত্রা যোগ করে, তাতে অন্যের আগ্রহ তৈরি হয় না। অসফল বিয়ে একটি দম্পতিকে ভোগায়, কোনও দিশায় পৌঁছে দেয় না, কিন্তু খবর হিসেবে মুখরোচক বলে তা অন্যান্য মানুষের আগ্রহ তৈরি করতে পারে। আর, সোশ্যাল মিডিয়া সেই মুখরোচক খবরাখবরকে করে তুলতে পারে আরও ঘিনঘিনে, ক্লেদাক্ত ও বিক্রয়যোগ্য। সেজন্য একটি ব্যর্থ ‘বিয়ে’-ও বিনোদন-মহিমায় সম্ভাবনাযুক্ত।
