সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কর্মক্ষেত্রে ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে টলিউডে গঠিত হয়েছে ফোরাম। আর জি কর কাণ্ডে এই বাংলা দেখেছে নারীদের রাত দখল। তবে বাস্তবে কর্মক্ষেত্রে নারীদের হেনস্থার ছবিটাতে যে খুব বিশেষ বদল ঘটেনি তা ফের প্রমাণিত হল। দিনের পর দিন কাজ না পেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন টলিউড শিল্পী তনুশ্রী দাস। গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন জনপ্রিয় এই কেশশজ্জা শিল্পী (হেয়ার ড্রেসার)। তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। এই ঘটনায় ইন্ডাস্ট্রির কয়েকজনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিয়ে সোশাল মিডিয়ায় সরব হলেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী। রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, 'এই ঘটনার শেষ দেখে ছাড়ব।'
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, কোনও কারণে তনুশ্রীকে সাসপেন্ড করেছিল গিল্ড। এর পর থেকে টলিউডে কোনও কাজ করতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। পাশাপাশি অন্য কোথাও কাজ করতে গেলে সেখানেও বাধা দেওয়া হয়। মাসের পর মাস কাজ না পেয়ে বিপুল ঋণে জর্জরিত হয়ে শেষ পর্যন্ত গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। কোনও মতে তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা যাচ্ছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শিল্পীর পাশে দাঁড়িয়েছেন অন্যান্য কলাকুশলীরা। হাসপাতালে তনুশ্রীকে দেখতে যান সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।
গোটা ঘটনার বিবরণ দিয়ে শনিবার সোশাল মিডিয়ায় সুদিপ্তা চক্রবর্তী লেখেন, 'আমাদের ইন্ডাস্ট্রির কেশশজ্জা শিল্পী তনুশ্রী দাস (তনু)। আমার হাত ধরেই এই ইন্ডাস্ট্রিতে যার আসা, এই মুহূর্তে হাসপাতালের ইমারজেন্সি তে শুয়ে। সুইসাইড নোট লিখে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কোনরকমে ঠেকানো গেছে। ওকে বাঁচানো গেছে। চিকিৎসা চলছে। সন্ধ্যেবেলা মেসেজ করে আমার সাহায্য চেয়েছিল। ক্লাসে ছিলাম। সময়মত উত্তর দিতে পারিনি। নিজেকে ক্ষমা করতে পারছি না। কর্মক্ষেত্রে হেনস্থা কোন পর্যায়ে যেতে পারে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ এই মুহূর্তে আমার চোখের সামনে। আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো তনু। কথা দিলাম।'
পাশাপাশি তনুশ্রীর এক অডিও বার্তা প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে শিল্পীদের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে তিনি জানিয়েছেন, 'আমাকে ৩ মাস সাসপেন্ড করেছিল। আমার অপরাধ কী আমি জানি না এই ৩ মাসে আমার দেনা হয়ে গেছে। আমার স্বামী অসুস্থ, মেয়ের পড়াশুনা রয়েছে। কাজ ধরলেও আমাকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। সেক্রেটারি আমায় কাজ করতে দেয়নি। স্পষ্ট বলা হয়েছে আমি নিজে কাজ ধরে কাজ করতে পারব না। আমার কাল কাজ শুরু। আজ আমায় জানানো হয়েছে, আমি ওখানে কাজ করতে পারব না। গিল্ড থেকে ফেডারেসনকে জানিয়েছে, যাতে কাজে না নেওয়া হয়। গিল্ড যে কাজ দেবে তার বাইরে অন্য কোনও কাজ করা যাবে না। তোমরা বল আমরা কী করব? আত্মহত্যা ছাড়া আমার কাছে অন্য পথ খোলা নেই।' একইসঙ্গে তনুশ্রী জানান, 'আমি যদি আত্মহত্যা করি তার জন্য দায়ী থাকবে এই কমিটি।'