shono
Advertisement

বর্ষার মরসুমে ছোট মাছ চাষে বাড়ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ

বৈজ্ঞানিকভাবে চাষে বাড়বে উৎপাদন। The post বর্ষার মরসুমে ছোট মাছ চাষে বাড়ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 11:30 AM Jul 19, 2018Updated: 12:00 PM Jul 19, 2018

রঞ্জন মহাপাত্র:  ছোট মাছকে অবাঞ্ছিত হিসেবে গণ্য না করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষের আওতায় আনলে সামগ্রিকভাবে মাছের উৎপাদন বাড়বে। প্রচলিত মাছ চাষের ধারণাকে বদলে কার্প জাতীয় মাছের সঙ্গে এমন মাছের মিশ্র চাষ করা যেতে পারে। ফলে একদিকে যেমন গ্রামীণ এলাকার জলাশয়গুলির ব্যবহার হবে তেমনই এ থেকে প্রাণীজ পুষ্টির জোগান সম্ভব হবে। পাশাপাশি রক্ষা পাবে জলজ বাস্তুতন্ত্র। বাড়বে গ্রামীণ কর্মসংস্থানও। এমনটাই মত হলদিয়া ব্লক মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমনকুমার সাহুর।

Advertisement

 

[অন্ধ্রের দাদাগিরি ভাঙতে বড় মাছ চাষে নামছে রাজ্য]

আগে বিজ্ঞানসম্মত মাছ চাষ হিসাবে বলা হত, পুকুর প্রস্তুতির সময় পুকুরের মহুয়ার খোল প্রয়োগ করে সব প্রাণী নষ্ট করে ফেলা হত। এর পর জলে চুন দেওয়ার পর রুই, কাতলা ও মৃগেল জাতীয় মাছের চারা ছাড়া হত। কিন্তু দেখা গিয়েছে, এই সব ছোট মাছ যেগুলি বাণিজ্যিক চাষের আওতার বাইরে রাখা হত এরা পুষ্টিগুণে ভরপুর। তাই একই সঙ্গে কার্প জাতীয় অর্থাৎ রুই, কাতলা ও  মৃগেল  প্রভৃতি মাছের সঙ্গে লাভজনক মিশ্রচাষ করা যায়। তাই বর্তমানে মৎস্য বিজ্ঞানীরা জলশয়ে মহুয়ার খোল দিতে মানা করছেন। বরং ছোট মাছের চাষে মৎস্যচাষিদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

[বিকল্প হিসাবে পাঙ্গাস মাছ চাষে গুরুত্ব হলদিয়ার মৎস্যচাষীদের]

এই সমস্ত ছোট মাছকে স্মল ইন্ডিজেনাস স্পিসিস বা সংক্ষেপে এসআইএস বলা হয়। আবার এই ছোট মাছগুলি নিজেরাই পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রজনন ঘটিয়ে বংশ বিস্তার করে। সেজন্য এদের সেলফ রিক্রুটিং স্পিসিস বা সংক্ষেপে এসআরএস বলা হয়। এই জাতীয় মাছের বার বার ডিমপোনা ছাড়তে হয় না। এমন মাছের সবচেয়ে বড় উদাহরণ দেশি চুনো মাছ। মাছে-ভাতে বাঙালির কাছে এই চুনো মাছের গুরুত্ব অপরিসীম। এই চুনো মাছ চাষে বর্তমানে তৎপর হয়েছে হলদিয়া ব্লক মৎস্য দপ্তর। বাঙালির পাতে দেশিয় চুনো মাছ ফেরাতে অভিনব পদ্ধতিতে ক্যালেন্ডার প্রচারপত্র ও একাধিক অলোচনাচক্রের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ শুরু হয়েছে।

[মাছে মিশছে দেদার ফরম্যালিন, টাটকা মাছ চিনবেন কীভাবে?]

এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে ছোট মাছ বলতে কাকে বোঝায়? যেসব মাছ পূর্ণবয়স্ক অবস্থায় ন’ইঞ্চি বা ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত আকারের লম্বা হয় সাধারণত সেগুলিকেই ছোট মাছ বলা হয়। যেমন মৌরলা, পুঁটি, খয়রা, চাঁদা, খোলসে, পাবদা, বেলে, ট্যাংরা, কই, শিঙ্গি ও  মাগুর ইত্যাদি। এসব মাছ বহুদিন ধরেই দেশের মানুষের বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য তালিকার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে। পরিবেশের পরিবর্তন ও মানুষের সৃষ্ট নানা কারণে এসব প্রজাতির মাছ আজ বিলুপ্তির পথে। এদের বিলুপ্তি ঠেকাতে ধানক্ষেত, মুক্ত জলাশয়ে সরকারিভাবে বিষাক্ত কীটনাশক প্রয়োগে নিষেধাজ্ঞা লাগু করা হয়েছে।

[বাজার ছেয়ে গিয়েছে ‘নকল’ কই মাছে, লোক ঠকাচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা]

ছোট মাছকে অবাঞ্ছিত মাছ হিসেবে গণ্য না করে সেগুলি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ ও চাষের আওতায় আনার বিষয়ে মাছ চাষিদের সচেতন করা হচ্ছে। প্রচার করা হচ্ছে জলজ পরিবেশের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ছোট মাছের বংশ বিস্তারের সুযোগ সৃষ্টি করে এর উৎপাদন বাড়ানোর। ছোট মাছের প্রজননের সময় বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাস। এ সময় প্রাকৃতিক জলাশয়ে মাছ ধরা বন্ধ রাখা উচিত। এছাড়া, মৌসুমী জলাভূমিগুলির কিছু অংশ খনন করে প্রজননক্ষম মাছ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। যাতে তারা বর্ষা মৌসুমে ডিম পাড়তে পারে। বাঙালি যদি ছোট মাছ আবার বাজারে কিনতে থাকেন তবে এর চাষের চাহিদাও দিন দিন বাড়বে।

The post বর্ষার মরসুমে ছোট মাছ চাষে বাড়ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement