বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। যে কোনও কঠিন কাজও খুব সহজেই করা সম্ভব হয়। তা সে যাই হোক না কেন। ঠিক যেমন নদিয়ার হাঁসখালির প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। ভেবেছিলেন ইজরায়েলের আপেল দিয়ে সাজাবেন নিজের বাগান। নিজের কঠিন পরিশ্রমে আপেল চাষ করে সকলকে অবাক করে দিলেন তিনি। এই আপেল গাছই মুছে ফেলল ৬৫৩০ কিলোমিটার দূরত্ব!
দিল্লি বেড়াতে গিয়ে টবে আপেলগাছ দেখেছিলেন নদিয়ার হাঁসখালির প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। পণ করেছিলেন, তিনিও ফলাবেন ইজরায়েলের আপেল। যাকেই নিজের ইচ্ছার কথা বলেছেন, সেই অবাক হয়েছেন। “অসম্ভব।” হেসেছিলেন প্রসেনজিতের বন্ধুরা। প্রশ্ন করেছেন সুদূর ৬৫৩০ কিলোমিটার দূরত্বের আপেল ফলবে নদিয়ার মাটিতে? তবে প্রসেনজিৎ এককাট্টা। আপেল তিনি নিজের এলাকায় ফলাবেনই। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।
[আরও পড়ুন: বিপদ এখনও কাটেনি, বর্ষার সময় আবার ফিরে আসতে পারে পঙ্গপালের ঝাঁক]
১০ কাঠা জমিতে ৪০টি চারা লাগাবেন বলে স্থির করেন। আপেলবন্ধু বেলে-দোয়াঁশ মাটি। সেইরকম মাটি তৈরির কাজ শুরু করে দেন প্রসেনজিৎ। সাড়ে চার থেকে সাড়ে ছয়ের মধ্যে পিএইচ মাত্রা। এই গাছগুলি প্রায় ৬৫ ডিগ্রি উষ্ণতা সহ্য করতে পারে। তিন হাজার টাকা করে এক-একটি চারা কেনেন প্রসেনজিৎ। শুধু গাছ বসালেই তো হবে না। প্রয়োজন পরিচর্যারও। তাই নিয়মিত গোবর সার এবং জীবাণুনাশক স্প্রে করেন তিনি। আর তাতেই ম্যাজিক।
দশ কাঠা জমির এখন যেদিকেই চোখ যায় শুধুই আপেল গাছ। হাওয়ায় দুলছে কয়েকশো আপেল। প্রসেনজিৎ জানান, আমেরিকা ও ইজরায়েলের তিন জাতের আপেল রয়েছে তাঁর বাগানে। অত্যন্ত অধ্যবসায় ছাড়া যে এই আপেল বাগান তৈরি করা সম্ভব ছিল না তা স্বীকার করে নেন তিনি। তবে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে তাঁর সাধের আপেল বাগানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে বলে আপেক্ষও রয়েছে তাঁর। তবে তাঁর চেষ্টা বিফলে যাবে না বলেই আশাবাদী প্রসেনজিৎ।
[আরও পড়ুন: ঝাড়গ্রামের জমিতে তাণ্ডব চালাচ্ছে বিশেষ প্রজাতির পঙ্গপাল, বনদপ্তরের তথ্যে বাড়ছে আতঙ্ক]
The post গল্প নয় সত্যি, নদিয়ার মাটিতে ইজরায়েলের আপেল ফলিয়ে চমক বাংলার যুবকের appeared first on Sangbad Pratidin.