সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবার মুক্তি পেল 'রান্নাবাটি'। ইতিমধ্যেই প্রতীম ডি গুপ্ত পরিচালিত ছবির প্রশংসায় পঞ্চমুখ সিনে সমালোচকমহল। এবার 'রান্নাবাটি' দেখে কলম ধরলেন টোটা রায়চৌধুরী।
অভিনেতা নিজেও ক্যামিও চরিত্রে রয়েছেন এই সিনেমায়। তবে প্রতীমের রন্ধন প্রণালীতে মুগ্ধ টোটা। সিনেমা দেখার পর বারো ঘণ্টা পেরলেও সেই রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেননি অভিনেতা। অগত্যা 'রহনাতৃপ্তি'র রিভিউ দিয়ে ফেললেন ঝটপট। টোটা লিখেছেন, "সাধারণত আমি কোনও ছবি নিয়ে লিখি না। বিশেষ করে সেই সব পরিচালকদের বা প্রযোজকদের ছবি নিয়ে, যাঁদের সঙ্গে আমি কাজ করেছি বা করছি। কারণ পাঠক আমায় পক্ষপাতদোষে দুষ্ট ঠাহর করতে পারেন এক্ষেত্রে! কিন্তু গত সন্ধেবেলায় যে ছবিটি দেখলাম, সেটি সম্বন্ধে কয়েক পংক্তি না লিখলে অন্যায় হবে। বারো ঘণ্টা অতিক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও যে মিষ্টি ভালোলাগার আবেশটি নিয়ে প্রেক্ষাগৃহ থেকে বেরিয়েছিলাম, সেটি এখনও মনকে আছন্ন করে রেখেছে। 'রান্নাবাটি' ছবিটি পরিচালনা করেছেন আমার অন্যতম প্রিয় পরিচালক প্রতিম ডি. গুপ্ত। যিনি ব্যক্তিজীবনেও উচ্চমার্গীয় খাদ্যরসিক! কোন রেস্তরাঁয় কী কী সুখাদ্য পাওয়া যায় সেটি তাঁর ঠোঁটস্থ, থুড়ি, জিভ-স্থ। অতীতেও তিনি বাঙালির দুটি অত্যন্ত প্রিয় বিষয়ের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন- খাদ্য ও চলচ্চিত্র। 'মাছের ঝোল' ছবিটি তার উৎকৃষ্টতম উদাহরণ। ওর পরিচালিত ছবি 'চালচিত্র' যেটি আদ্যপান্ত থ্রিলার ঘরানার, সেটিতেও আমার অভিনীত চরিত্রটিকে দু-দু'বার খাওয়ার টেবিলে বসিয়েছেন। একবার চাইনিজ সমেত এবং দ্বিতীয়টি মোগলাই! কাজেই উনি যে খাদ্য-চিত্রটিকে (ইয়ে, খাদ্য নিয়ে চলচ্চিত্র) সুপরিবেশন করবেন, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু যেটা উনি অত্যন্ত মুন্সিয়ানার সঙ্গে পরিবেশন করেছেন, সেটা হল রন্ধনশৈলীকে সম্পর্কের মূল সেতু হিসেবে উপস্থাপিত করা। ব্রিলিয়ান্ট!"
শুধু তাই নয়, অভিনেতাদের প্রত্যেকের নাম ধরে ধরে প্রশংসা করেছেন টোটা। তাঁর সংযোজন, "অভিনয়ে ঋত্বিক ও সোহিনী যেন সুমধুর সিম্ফনি। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির অহঙ্কার তাঁরা। তৎসহ আমার জটায়ু/একেন/হৃদয়ের টুকরো অনির্বাণ গ্রীষ্মের দখিনা বাতাস। শোলাঙ্কির স্নিগ্ধ উপস্থিতি মনোমুগ্ধকর। বরুণদা পর্দায় আসা মানেই সব নজর কেড়ে নেবেন। সায়ন অনবদ্য। রোজা দে স্বল্প পরিসরেও ছাপ ফেলে যান। তবে বিস্মিত করবে ইদা'র অভিনয়। ঋত্বিকের মতো সুঅভিনেতার সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করা পূর্ণবয়স্ক অভিনেতাদের পক্ষেই কষ্টসাধ্য, সেখানে এই কিশোরীর কতটা প্রতিভা থাকলে সে এই কাজটি অনায়াসে করতে পারে, সেটা প্রত্যক্ষ না করলে বিশ্বাস করতে পারবেন না।" শেষপাতে বাকি কলাকুশলীদেরও পিঠ চাপড়ে দিলেন টোটা রায়চৌধুরী। অভিনেতা লিখেছেন, "তূর্য'র ক্যামেরা, সংলাপের এডিটিং, রণজয়ের সঙ্গীত ও আনন্দের প্রোডাকশন ডিজাইন ছবিটিকে একটি অন্য মাত্রায় উন্নীত করে। আর অন্তর থেকে সাধুবাদ জানাই নন্দী ফিল্মস ও প্রদীপবাবুকে, শিক্ষিত অথচ স্নিগ্ধ বাঙালিয়ানা সম্পন্ন এই ছবিটি প্রযোজনা করার জন্য। পরিবারের সকলকে নিয়ে দেখার মতো এই ছবিটি চটজলদি দেখে নিন। কথা দিচ্ছি, হতাশ হবেন না। সবশেষে ডিরেক্টর সাহেবের জন্য গগন কাঁপানো হাততালি। ফাটায়ে দিসেন সাহেব।
