দুলাল দে: ফ্যান বললে কম বলা হয়। যাকে বলে অন্ধ ফ্যান। হ্যাঁ, গায়ক-সঙ্গীত পরিচালক অনুপম রায়ের কথা বলছি। বিশ্বকাপ ফুটবলে তিনি যে জার্মানির সমর্থক, একথা সবাই জানেন। কিন্তু তিনি যে প্রাক্তন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লোথার ম্যাথাউজের পাগল ফ্যান একথা জানা ছিল না। ফলে ঘরের কাছে লোথার ম্যাথাউজ আসছেন শুনে তিনি চুপ করে থাকবেন কি করে?
আইএফএ এবং শ্রাচি স্পোর্টসের যৌথ উদ্যোগে বেঙ্গল সুপার লিগের ব্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হয়েছেন লোথার ম্যাথাউজ। সেই জার্মান অধিনায়ক, যাঁর হাতে ’৯০-এর ইতালি বিশ্বকাপ উঠতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন বিশ্বজোড়া মারাদোনার ফ্যানরা। ক্লিন্সম্যান, ফোয়েলারদের দলের সেই তারকা সম্পর্কে বলা হয়, বেকেনবাওয়ারের পর আর কোনও জার্মান সুইপার এই পরিমাণ জনপ্রিয়তা পাননি সারা পৃথিবী জুড়ে। এহেন লোথার ম্যাথাউজকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর বানিয়ে ‘বেঙ্গল সুপার লিগে’ হইচই ফেলে দিয়েছে শ্রাচি স্পোর্টস।
আপাতত যা ঠিক হয়েছে, আটটি জেলার দল নিয়ে ১৪ অথবা ১৫ ডিসেম্বর থেকে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে শুরু হবে বেঙ্গল সুপার লিগ। আপাতত আটটি দল খেলার জন্য সম্মতি দিয়ে দিয়েছে। আর পুরো প্রতিযোগিতাটি সম্প্রচার হবে ‘জি বাংলা সোনার’ চ্যানেলে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রবল প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে চ্যানেল এবং শ্রাচি স্পোর্টসের মধ্যে। জেলার ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরা ঘন ঘন বৈঠক করছেন, কোন ফুটবলারদের সই করাবেন সেই তথ্য জোগাড় করতে। আলভিটো, মেহতাব, মুসা, নবি, দীপঙ্কর সহ বেশ কিছু প্রাক্তন ফুটবলার এই মরশুমের কলকাতা লিগের খেলা দেখে বেশ কিছু ফুটবলার রিক্রুট করে রেখেছেন বেঙ্গল সুপার লিগে খেলানোর জন্য।
রবিবার সকালে শহরে এসে পড়ছেন ম্যাথাউজ। উদ্দেশ্য একটাই, উদ্বোধনের আগে বেঙ্গল সুপার লিগের উত্তেজনা বাড়িয়ে দেওয়া। রবিবার সকালেই বিশ্বজয়ী অধিনায়ক পৌঁছে যাবেন সাউথ সিটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। সেখানেই নামী দামী স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে ফুটবল খেলবেন, ফুটবল খেলা শেখাবেন তিনি। সাউথ সেখান থেকে সোজা চলে যাবেন বডি গার্ডের পুলিশ ফুটবলে। তারপর আইএফএ-র পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও। অনূর্ধ্ব ১৪ জয়ী বাংলার খুদে ফুটবলারদের সঙ্গে মিলিত হবেন। একবার ঘুরে আসবেন বেটন কাপের ফাইনালেও। আসলে বেটন কাপের প্রাচীনত্ব এবং ঐতিহ্যর সঙ্গে লোথার ম্যাথাউজের ঐতিহ্য মিলিয়ে দিতে চাইছেন সংগঠকরা। যে কারণে, মূলত বেঙ্গল সুপার লিগের প্রচারের জন্য নিয়ে আসা হলেও শ্রাচি স্পোর্টসের কর্তারা কলকাতার সবরকম ফুটবলের অনুষ্ঠানের সঙ্গেই জড়িয়ে দিতে চাইছেন। তবে আসল উদ্দেশ্য অবশ্যই বেঙ্গল সুপার লিগ।
ঠিক হয়েছে, পাঁচতারা হোটেলে যে ডিনারের আয়োজন হবে, সেখানেই গায়ক-সঙ্গীত পরিচালক অনুপম রায় একটা ছোট্ট সাক্ষাৎকার নেবেন তাঁর প্রিয় ফুটবল নায়কের। ছোট সাক্ষাৎকারের মাঝেই শোনাবেন রবীন্দ্রসঙ্গীত। কিন্তু কেন হঠাৎ রবীন্দ্রসঙ্গীত? দেখা গিয়েছে, রবীন্দ্রনাথ রচিত বেশ কিছু গানের সঙ্গে কিছু জার্মান গানের সুরের মিলও রয়েছে। সেই জার্মান সুরের রবীন্দ্রসঙ্গীতই গাইতে চাইছেন অনুপম রায়। তাহলেই একমাত্র গঙ্গাজলে গঙ্গাপুজো করতে পারবেন অনুপম রায়।
