ইস্টবেঙ্গল: ০
এফসি গোয়া: ০
টাইব্রেকারে ৬-৫ গোলে জয়ী এফসি গোয়া
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাণ্ডবীর জলে নিভল মশাল। ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে সুপার কাপ নিজেদের কাছে রাখল গোয়া। দুই মরশুম আগে হোম দল ওড়িশাকে হারিয়ে সুপার কাপ জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। এবারও গোয়ার মাটিতে গোয়াকে হারিয়ে সুপার কাপ জয়ের হাতছানি ছিল। সেমিফাইনালে লাল কার্ড দেখায় এই ম্যাচে ডাগআউটে ছিলেন না ইস্টবেঙ্গলের হেডকোচ অস্কার ব্রুজো। গ্যালারি থেকেই দলের পরাজয় দেখলেন তিনি। আইএফএ শিল্ডে টাইব্রেকারে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল তাঁদের। গোয়াতেও ৫-৬ গোলে হেরে ফিরল দুঃস্বপ্নের সেই স্মৃতি।
শুরুতেই অবশ্য কর্নার পেয়ে গিয়েছিলেন গত বারের চ্যাম্পিয়নরা। ইস্টবেঙ্গলের কেভিন সিবিলে সজাগ থাকায় বিপদ হয়নি। ৬ মিনিটে ফ্রিকিক পেলেও সুবিধা নিতে পারেনি লাল-হলুদ। ১১ মিনিটে সুযোগ আসে গোয়ার। পালটা আক্রমণে সুযোগ তৈরি করে ব্রুজোর ছেলেরাও। আনোয়ার আলির পাস সোজা চলে আসে মিগুয়েলের কাছে। বাঁ উইং বরাবর ছুটে গোলের কাছাকাছি পৌঁছেও বাইরে মারেন।
২০ মিনিট বিপিন সিংয়ের দুর্দান্ত ক্রস জালে জড়াতে ব্যর্থ হন নাওরেম মহেশ। ৩৮ মিনিটে সুযোগ পায় গোয়া। ৪২ মিনিট বিপিন সিংয়ের পাস সোজা চলে আসে নাওরেমের কাছে। তাঁর নেওয়া শট বাঁচান গোয়ান গোলরক্ষক হৃতিক তিওয়ারি। বিরতির ঠিক আগে আবারও একটা সুযোগ চলে আসে নাওরেমের কাছে। সাঙ্গয়ানের ট্যাকেলে বিপদ এড়ায় গোয়া। আধিপত্য নিয়েও গোল করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য অবস্থায়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ায় গোয়া। খেলার গতির বিরুদ্ধে গিয়ে ৬২ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলও। বিপিন সিং ঠিকানালেখা পাস বাড়িয়েছিলেন হিরোশিকে লক্ষ্য করে। তাঁর হেড আটকাতে অবশ্য বেশি কসরত করতে হয়নি হৃতিককে। ৭৪ মিনিটে পিভি বিষ্ণুর শট গোল লাইন থেকে ফেরান গোয়ার গোলরক্ষক। ৭৬ মিনিটে বড় বাঁচান বেঁচে যায় ইস্টবেঙ্গল! ব্রাইসনের শট ডান পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ৭৭ মিনিটে ওপেন নেট মিস করেন বোরহা। লক্ষ্যভ্রষ্ট তাঁর হেড। ৮০ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের গোল লক্ষ্য করে মাঝমাঠ থেকে উঁচিয়ে নেওয়া শট নেন পোল মোরেনো। লাল-হলুদ গোলকিপার কিছুটা এগিয়ে থাকায় সুযোগ এসে গিয়েছিল গোয়ার কাছে। যা অবশ্য পোস্টে লাগে।
নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর্যন্ত কোনও প্রতিপক্ষই গোল না দিতে পারায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। প্রথমার্ধে বল দখলের লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে ছিল গোয়া। ১০২ মিনিটে বিপিনের জায়গায় নামেন হামিদ আহদাদ। তাতেও অবশ্য গোল হয়নি। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম দু'মিনিটে অন্তত তিনিটি সহজ সুযোগ নষ্ট করে গোয়া। প্রভুসুখন সিং গিল না থাকলে ইস্টবেঙ্গলের কপালে দুঃখ ছিল। ড্রাজিচ বক্সের বাইরে থেকে একটি শট নেন। সেভ করেন গিল। ফিরতি বল চলে আসে অরক্ষিত সিভেরিওর কাছে। তাঁর শটও দুরন্ত দক্ষতায় বাঁচান লাল-হলুদ গোলরক্ষক। ১২০ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য থাকায় ম্যাচ যায় টাইব্রেকারে।
প্রথম শট মারেন ইস্টবেঙ্গলের কেভিন সিবিলে। গোল করতে ভুল করেননি তিনি। গোয়ার হয়ে প্রথম শট মারেন বোরহা। কিন্তু তিনি বারে মারেন। লাল-হলুদের সল ক্রেসপো কিন্তু সেই ভুল করলেন না। ঠান্ডা মাথায় জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি। তবে গোয়ার সিভেরিও ব্যবধান কমান। এরপর ইস্টবেঙ্গলের মিগুয়েলও গোল করেন। তবে গোয়ার ড্রাজিচের শট সেভ করতে পারেননি গিল। কিন্তু কে জানত রশিদ বারের উপর দিয়ে বল উড়িয়ে দেবেন? এরপর নেমিল গোয়াকে সমতায় ফেরালেন। আনোয়ার গোল করে আশা বাঁচিয়ে রাখলেন। তিমোর ফের সমতা ফেরালেন। এরপর হামিদ ঠান্ডা মাথায় গোল করলেন। গোয়ার উদান্তও একই কাজ করলেন। তবে ইস্টবেঙ্গলের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতলেন পিভি বিষ্ণু। তিনিও বারের উপর দিয়ে বল ওড়ালেন। আর শেষে সাহিল তাভোরা গোল করে গোয়াকে ৬-৫ গোলে জেতালেন। গোয়ার মাটিতে গোয়াকে হারিয়ে মরশুমে প্রথম ট্রফিজয়ের সুযোগ হাতছাড়া করল লাল-হলুদ।
