সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্লাবগুলির থেকে চাঁদা তুলে আইএসএল হবে? ভবিষ্যতে তেমন হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আইএসএল জট কাটাতে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ক্লাবগুলির কাছে সমাধান চেয়েছিল ক্রীড়া মন্ত্রক। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই লিগ পরিচালনার পূর্ণ স্বত্ব এবং মালিকানা চেয়ে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রকের কাছে প্রস্তাব পেশ করল সম্মিলিত ক্লাব জোট। আইএসএল করতে চেয়ে ১২টি ক্লাবের সম্মিলিত জোট কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক ও সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে এই মর্মে চিঠি পাঠাল। যদিও তাতে অবশ্য ইস্টবেঙ্গল নেই।
জানা গিয়েছে, বার্ষিক ১০ কোটি টাকা ফেডারেশনকে দিয়ে আইএসএল আয়োজন করতে চায় ক্লাব জোট। আর এই মর্মে ইস্টবেঙ্গল বাদ দিয়ে সই করেছে বাকি ক্লাবগুলি। মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে ক্লাবগুলি যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, এই অনুদান যাতে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে ব্যবহার করা হয়। সেখানে তারা এআইএফএফ-কে কেবল নিয়ন্ত্রক হিসাবে চায়।
শর্তাবলি পূরণ হলে ক্লাবগুলি ৪৫ দিনের মধ্যে আইএসএলের ২০২৫-২৬ মরশুম শুরু করার পরিকল্পনা করছে। তবে চলতি মরশুমের জন্য ফেডারেশনকে কোনও অর্থ দেওয়ার ইচ্ছা তাদের নেই। ২০২৬-২৭ মরশুমের পর থেকে এআইএফএফ-কে ১০ কোটি টাকা দিতে পারে ক্লাব জোট। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, 'ক্লাবগুলি স্বীকার করে প্রস্তাবিত পরিকাঠামোর জন্য এআইএফএফের সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে।' প্রসঙ্গত, ফেডারেশনের বিশেষ সাধারণ সভায় স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল নতুন সংবিধানকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো এই সংবিধান গ্রহণ করা হয়।
ক্লাবজোট যে বিষয়গুলির কথা তুলে ধরেছে সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ফেডারেশন কোনও সংস্থাকে স্থায়ী অধিকার দেবে। তবে ক্লাবগুলোর কাছেই সম্মিলিতভাবে মালিকানা থাকবে। সেখানে আইএফএফেরও বিশেষ শেয়ার থাকবে। ক্লাব চাইলে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অংশীদার আনতে পারবে। অন্যদিকে, ফেডারেশনের হাতে স্থায়ী পরিচালক মনোনয়নের মানদণ্ড থাকবে। এখানেই শেষ নয়, নিয়ম শৃঙ্খলার বিষয়টি দেখবে আইএফএফ। লাইসেন্সিং সংক্রান্ত খুঁটিনাটিও দেখবে তারা। রেফারি নিয়োগের বিষয়ও থাকবে তাদের আয়ত্তে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, জাতীয় দলের সূচি অনুযায়ী লিগের দিনক্ষণ ঠিক করা হবে। তাছাড়াও ক্লাব এবং লিগ কোম্পানির দায়িত্ব হল আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রেখে মিডিয়া, বিজ্ঞাপন এবং ডিজিটাল রাইটস সামলানো। একই সঙ্গে সেখানে থাকছে মানসম্মত সম্প্রচারের বিষয়ও।
এই পরিস্থিতিতে ক্লাবগুলি ফেডারেশনকে তাদের প্রস্তাবটি বিবেচনা করে ক্রীড়া মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ক্লাবদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠকে আলোচনায় বসেছিল কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশন কর্তারাও। এই বৈঠকে ক্লাবগুলির প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, আইএসএল করার বিষয়ে তাঁদের কোনও প্রস্তাব রয়েছে কি না। সেই প্রস্তাব ফেডারেশনের এজিএমে আলোচনা হবে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের তরফে এই বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কিছু দিনের মধ্যেই আইএসএল শুরু হবে। তবে এই প্রতিযোগিতা আয়োজনে কোনও রকম অর্থ দেবে না কেন্দ্র। শুধুমাত্র এই সমস্যা কাটাতেই সাহায্য করবে তারা। এখন দেখার, এই মরশুমের লিগ আয়োজন নিয়ে অচলাবস্থা কাটে কি না। জানা গিয়েছে, আইএসএল ক্লাবের এই একই প্রস্তাব নিয়ে ফেডারেশনের ২০ ডিসেম্বরের এজিএমে আলোচনা হতে পারে।
