প্রসূন বিশ্বাস: আইএফএ শিল্ড ফাইনালে ডার্বি হারের পরেই 'গৃহযুদ্ধ' ইস্টবেঙ্গলে। গোয়ায় সুপার কাপের ম্যাচ খেলতে গিয়েই যত বিভ্রাট। কোচ অস্কার ব্রুজোর সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পদত্যাগ করলেন গোলকিপার কোচ সন্দীপ নন্দী। আর তারপরই বিস্ফোরক লাল-হলুদের আশিয়ান জয়ী গোলকিপার। তাঁর সাফ বক্তব্য, অস্কার ব্রুজো ইস্টবেঙ্গলকে 'ধ্বংস' করছেন।
কিন্তু কী ঘটল গোয়ায়? আসলে শিল্ড ফাইনালের ডার্বি হারের পরেই গোলকিপিং কোচ নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলের হেড কোচ অস্কার ব্রুজো। প্রভসুখন গিলকে তুলে শুধুমাত্র টাইব্রেকারের জন্য দেবজিৎ মজুমদারকে নামানো হয়। যা কাজে লাগেনি। সেটা ছিল সন্দীপেরই সিদ্ধান্ত। তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন অস্কার। যদিও সন্দীপের দাবি, তিনি বারবার ক্ষমা চেয়ে নেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও সুপার কাপের জন্য গোয়া যেতেই সব প্লেয়ারের সামনে সন্দীপকে অপমান করা হয়। তারপরই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত।
ক্ষুব্ধ সন্দীপ জানান, "কোচ যেভাবে সবার সামনে এয়ারপোর্টে অসম্মান করল, তা একেবারেই মানা যায় না। এই বিদেশি কোচেরা এমন কিছু নয়, যাদের পায়ে জল দিতে হবে। আইএফএ শিল্ডে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তার জন্য আমি ক্ষমা চেয়েছি। ম্যাচের পর বলেছি, পরেও ক্ষমা চেয়েছি।" কিন্তু শুধু কি শিল্ড ফাইনালের ভুলের জন্য? নাকি ভিতরে অন্য অঙ্ক রয়েছে? সন্দীপ বলেন, "আজও গোয়া এয়ারপোর্টে ভালোভাবেই কথা হল। তারপরই বলল, 'এটা তুমি কার অঙ্গুলি হেলনে করলে?' ওর সমস্যা হল, আমাকে ক্লাব থেকে সুপারিশ করেছে। সেই জন্য ওর আমাকে নিয়ে সংশয় ছিল। আমাকে অনুশীলন করানোর সময় দেয়নি। সন্দেহ করত, আমি হয়তো খবর রিপোর্টারদের কাছে ফাঁস করে দিচ্ছি। আমি এই পরিস্থিতিতেও ইস্টবেঙ্গলের জন্য কাজ করেছি।"
লাল-হলুদের সদ্য প্রাক্তন গোলকিপার কোচ আরও জানান, "এত খারাপ লোক আমি দেখিনি। ইস্টবেঙ্গলকে ধ্বংস করছে এই কোচ। আমারও সম্মান আছে। আমি কোচকে বলি যে, আপনারও তো সব সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি। তখন ও বলছে, এই কাজের জন্য নাকি আমি যোগ্য নই। আপনিই বা টাইব্রেকারের জন্য কী প্রস্তুতি নিয়েছেন। আমিও ভয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারিনি। আমি টাইব্রেকারের প্রস্তুতি নিলে আপনি ভাবতেন সন্দীপ ৯০ মিনিটে জয় চায় না। দলের ভালো চায় না। আমি ২০-২৫ বছর সম্মানের সঙ্গে এখানে খেলেছি। উনি অপমান করার কে?"
তারপরই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন সন্দীপ। এরপর? সন্দীপ জানান, তিনি ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, "যেখানে সম্মান নেই, সেখানে থাকব না। এই কোচ যোগ্য নয়।" ফুটবল মরশুম এখনও সেভাবে গতিই পায়নি। এর মধ্যে গন্ডগোল বেঁধে গেল ইস্টবেঙ্গলে।
