সঞ্জয় সেন: ভারতীয় ফুটবলের ডামাডোলের মাঝে আইএফএ শিল্ডের ডার্বিকে ঘিরে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে উন্মাদনা থাকাটা স্বাভাবিক। তবে আমার দৃষ্টিভঙ্গি একটু অন্যরকম। আইএসএল কবে হবে কেউ জানে না। এশিয়ান কাপে ভারতীয় দলের লজ্জাজনক পরিণতি, তার মাঝেই ১৮ অক্টোবরের ডার্বিকে বাংলা ফুটবলের জন্য কিছুটা ইতিবাচক দিক বলতে হবে।
এবার ইস্টবেঙ্গলকে বেশ উজ্জীবিত মনে হচ্ছে। তবে আমি মোহনবাগান দল নিয়েই বিশ্লেষণ করব। এই লেখা যখন লিখতে বসছি, তখনও পুরোপুরি জানি না জাতীয় দলের ফুটবলারদের কি পাওয়া যাবে ফাইনালে? শুভাশিসদের পাওয়া গেলে পূর্ণ শক্তি নিয়ে নামবে। আর না পাওয়া গেলে অন্যরকম ভাবে ভাবতে হবে মোলিনাকে। ইউনাইটেড ম্যাচে উনি যে দল নামিয়েছিলেন সেই একই দল ইস্টবেঙ্গলের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে থাকবে না সেটা এখনই বলা যায়। অতীতে যে রক্ষণ নিয়ে যাবতীয় সাফল্য এসেছে, সেই চার ফুটবলারকে শিল্ড ফাইনালে পরিবর্তন করবেন বলে মনে হয় না। সেন্টার ব্যাকে টম অলড্রেড ও আলবার্তো রদ্রিগেজ জুটির দু'দিকে শুভাশিস আর আশিস রাইকেই ভাববেন আশা করি। গ্রুপ পর্বের দু'টো ম্যাচ নিয়ে আর আলোচনায় যেতে চাই না।
এর পরেও বলব ডার্বিতে কোন ফর্মেশনে কারা নামবে তা দেখার বিষয়। ইস্টবেঙ্গল যদি প্রথম থেকেই দীর্ঘদেহী হিরোশিকে নামিয়ে দেয়, তার জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে। গত দুই বছরের বহু কঠিন ম্যাচে মাথা ঠান্ডা রেখে জয় ছিনিয়ে এনেছে শুভাশিসরা। দলটার গভীরতা অনেক। তাই বলতে পারি, পূর্ণশক্তির মোহনবাগানকে হারানো কঠিন, যদিও অসম্ভব নয়। কারণ, ডার্বি বহু বিশেষজ্ঞকেই অতীতে ভুল প্রমাণ করেছে। কাউকে কখনই ফেভারিট ধরে বিশ্লেষণে যাওয়া ভুল কাজ হবে।
ইস্টবেঙ্গলকে জিততে হলে কঠিন কাজটাকে সহজ করতে হবে। তবে বহুদিন পর চোটমুক্ত ইস্টবেঙ্গলকে দেখছি। আমার মনে হয়, মোহনবাগান ৪-১-৪-১ এই ফর্মেশনে খেলাতে পারে। গোলে বিশাল। রক্ষণের কথা আগেই বলেছি। ডিফেন্ডারদের সামনে আপুইয়া থাকতে পারেন। দুই উইংয়ে মনবীর ও লিস্টন। মাঝে অনিরুদ্ধ থাপা ও রবসন। সামনে ম্যাকলারেন। এই ফর্মেশনে সুবিধা হল যে কোনও সময় অনিরুদ্ধকে নামিয়ে দিয়ে ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে চলে যাওয়া যায়। আবার খেলার পরিস্থিতি অনুযায়ী ফুটবলার পরিবর্তন করে ফর্মেশনের বদল করা যায়। কী অঙ্কে কীভাবে খেলবে তা একমাত্র কোচের পক্ষেই বলা সম্ভব। মাথায় রাখতে হবে এই দলে যারা রিজার্ভে থাকবে সেই কামিংস, পেত্রাতোস, দীপক টাংরি, মেহতাব সিং, কিয়ানরাও একেক জন ম্যাচ উইনার। শেষে বলি, ইরানে খেলতে না যাওয়া প্রভাব পড়েছে গত ম্যাচের শেষে। শিল্ড জিতে মোহনবাগান ফুটবলাররা এই ট্রফিটা উৎসর্গ করুক সমর্থকদের।
