shono
Advertisement
ISL

এফএসডিএল যতক্ষণ না এগিয়ে আসছে, লিগ শুরুর সম্ভাবনা কম

রবিবারের মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের প্রতিনিধিও।
Published By: Prasenjit DuttaPosted: 09:49 AM Dec 29, 2025Updated: 09:52 AM Dec 29, 2025

দুলাল দে: যেদিন মনে হচ্ছে সব কিছু বোধহয় ভালোয় ভালোয় মিটে গেল। ঠিক তার পরের দিনই যেভাবে ইস্যু তৈরি হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে যে শর্ট টার্ম হোক কিংবা লং টার্ম, আইএসএল শুরু করতে গেলে কমার্শিয়াল পার্টনার হিসাবে সবার আগে নিশ্চিত হতে হবে এফএসডিএলের দায়িত্ব নেওয়া। কারণ, যতক্ষণ না কমার্শিয়াল পার্টনার হিসেবে কেউ নিশ্চিত হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত লিগ শুরু হবে বলে মনে হচ্ছে না। আর বলাই বাহুল্য, ইতিমধ্যেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, এফএসডিএল ছাড়া এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবলে এমন কোনও সংস্থা নেই যারা আইএসএলের কমার্শিয়াল পার্টনার হিসাবে এগিয়ে আসবে। যে কারণে, রবিবারের মিটিংয়ে যখন মোটামুটি সব ক্লাবের প্রতিনিধিরা কমার্শিয়াল পার্টনারের কথা জানতে চাইছেন, ঠিক তখনই ফেডারেশনের তিন সদস্যর কমিটির অন্যতম সদস্য, কেরল ফুটবল সংস্থার সভাপতি নাভাস মিরান সরাসরি ক্লাবদের বলেন, “কমার্শিয়াল পার্টনার হওয়ার জন্য, আপনারা (ক্লাবরা) কথা বলুন না এফএসডিএলের সঙ্গে।” 

Advertisement

ঠিক ছিল, শুক্রবার একপ্রস্থ কথা বলার পর ২৯ ডিসেম্বর সোমবার সব ক্লাবের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে এই মরশুমের ইন্ডিয়ান সুপার লিগের তারিখ ঘোষণা হবে। কিন্তু শুক্রবারই ফেডারেশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল সত্যনারায়ণ এবং তিন সদস্যর কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বসেন মোটামুটিভাবে আইএসএলের সব ক্লাবের প্রতিনিধিরাই। রবিবারের মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের প্রতিনিধিও। আর সেখানেই এদিন আলোচনায় নতুন করে দু’টি পয়েন্ট তোলেন ক্লাব প্রতিনিধিরা।

আগেরদিন ফেডারেশনের কমিটির তরফে এই মরশুমের শর্ট টার্ম লিগ চালানোর জন্য যে বাজেটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তাতে দেখানো হয়েছিল, খরচ ৭০ কোটি টাকা। এদিন আলোচনায় ক্লাবরা জানায়, শর্ট টার্ম লিগের খরচ কমালে ভালো হয়। তারজন্য ক্লাবগুলি জানায়, লিগের বাজেট ৪০ কোটির মধ্যে করলে ক্লাবগুলির খেলতে সুবিধা হয়। মিটিংয়ের মধ্যেই ওড়িশা এফসি'র প্রতিনিধি জানান, ওড়িশা আইএসএল খেলতে চায়। কিন্তু খেলার জন্য কোনও টাকা দিতে পারবে না।

এরপরই ক্লাবগুলি জানতে চায়, ফেডারেশনের কমিটির প্রস্তাব মতো কমার্শিয়াল পার্টনারের যে ৩০ শতাংশ শেয়ার রাখা হয়েছে। এই মুহূর্তে কমার্শিয়াল পার্টনার ঠিক না করে খেলা শুরু করলে সেই ৩০ শতাংশ শেয়ারের টাকা কি ফেডারেশন দেবে? একেই খরচ কমাতে চাইছে ক্লাবগুলি। তার উপর কমার্শিয়াল পার্টনারের খরচ ক্লাবগুলি কীভাবে বহন করবে? আসলে ফেডারেশন চেয়েছিল, ফ্রেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে শর্ট টার্ম আইএসএল শুরু করে দেবে। পাশাপাশি ২০ বছরের চুক্তির জন্য টেন্ডার ডাকার প্রক্রিয়া শুরু করবে। কিন্তু যা মনে হচ্ছে, ক্লাবগুলি শর্ট টার্ম লিগে খেললেও আগে কমার্শিয়াল পার্টনারের নাম জানতে চাইছে। আর সেটা সম্ভব, খুব দ্রুততার সঙ্গে ফেডারেশন যদি আইএসএলের কমার্শিয়াল পার্টনারের জন্য টেন্ডার ঘোষণা করে। যতদূর খবর, টেন্ডারের পয়েন্টগুলি তৈরি করাই আছে। সোমবার কমিটি নিজেদের মধ্যে ফের আলোচনায় বসে, পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে।

এর বাইরে ক্লাবগুলি এদিন আরও একটি দাবি জানিয়েছে। ফেডারেশন ভেবেছিল, বাংলা এবং গোয়া, দুই জায়গায় ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে আইএসএল করবে। সেভাবে হলে এএফসি'র স্লটের জন্য ২৪টি ম্যাচ করা সম্ভব। এদিন ক্লাবগুলি কমিটির সদস্যদের জানিয়েছে, ফেডারেশনের উচিত, আইএসএলের ফরম্যাট ঠিক করার আগেই এএফসি'র সঙ্গে কথা বলে নেওয়া। কারণ, এএফসি যদি ভারতীয় ফুটবলের সাম্প্রতিক সমস্যার কথা ভেবে এএফসি'র স্লটের জন্য ম্যাচ সংখ্যা কমিয়ে দেয়, তাহলে ২৪টা ম্যাচ খেলবেই না ক্লাবগুলি। খরচ কমানোর জন্য এএফসি'র ঠিক করে দেওয়া সংখ্যা অনুযায়ী ম্যাচ খেলবে। আর এএফসি যদি ২৪টি ম্যাচ খেলতে হবে বলে, তাহলে সেভাবেই খেলবে। কিন্তু প্রসঙ্গ হল, এএফসি'র থেকে স্লটের পুরো বিষয়টি নিশ্চিত করতে গেলে আরও কিছুদিন সময় যাবে। কারণ, এরপরেই শুরু হয়ে যাবে নতুন বছরের উদযাপন। সবাই এখন উৎসবে ব্যস্ত। ফলে কমার্শিয়াল পার্টনার এবং এএফসি'র স্লট দু'টি বিষয় নিয়েই এই মুহূর্তে ফেডারেশনের কাছে সরকারিভাবে কোনও উত্তর নেই। আর এর উত্তর পেতে গেলে এখনও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। ফলে তার আগে এই মরশুমের লিগ শুরুর দিনক্ষণ জানানো সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছ না। এই সব কিছুর জবাব পাওয়ার জন্যই সোমবার নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসছে তিন সদস্যের কমিটি।

ক্লাবগুলি মিটিংয়ে জানিয়েছে, ফেডারেশন কর্তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নিন। সেক্ষেত্রে দু’দিন পরেই ফের কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বসা যাবে। তবে মিটিংয়ের মধ্যেই কমিটির অন্যতম সদস্য নাভাস মিরান যেভাবে ক্লাবগুলিকে কমার্শিয়াল পার্টনার হিসেবে এফএসডিএলের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন, সেই ঘটনায় অবাক হয়ে গিয়েছেন অনেকেই। টেন্ডার না ডেকে কোনও সংস্থার সঙ্গেই সরকারিভাবে কথা বলার কথা বলতে পারেন না ফেডারেশন কর্তারা। অনেকেই বেসরকারিভাবে এফএসডিএলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এদিন মিরান যেভাবে মিটিংয়ের মধ্যেই এফএসডিএলের নাম বলে দিয়েছেন, তখন আর কারও বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না, এইটা অন্তত সবাই বুঝে গিয়েছেন, কমার্শিয়াল পার্টনার হিসেবে এফএসডিএল যতক্ষণ না এগিয়ে এসে ভারতীয় ফুটবলের দায়িত্ব নিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আইএসএল শুরু হওয়া নিয়ে সমস্যা রয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • যেদিন মনে হচ্ছে সব কিছু বোধহয় ভালোয় ভালোয় মিটে গেল। ঠিক তার পরের দিনই নানান ইস্যু তৈরি হচ্ছে।
  • ইতিমধ্যেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, এফএসডিএল ছাড়া এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবলে এমন কোনও সংস্থা নেই যারা আইএসএলের কমার্শিয়াল পার্টনার হিসাবে এগিয়ে আসবে।
  • রবিবারের মিটিংয়ে যখন মোটামুটি সব ক্লাবের প্রতিনিধিরা কমার্শিয়াল পার্টনারের কথা জানতে চেয়েছিলেন।
Advertisement