shono
Advertisement
AIFF

আইএসএলের ভবিষ্যৎ কী? নতুন লিগের পরিকল্পনা নিয়ে ক্লাবগুলির দরবারে কল্যাণ

ইন্টারভিউ না নিয়েই খালিদকে কোচ করা হয়েছে বলেও ক্ষোভ রয়েছে ফেডারেশনের অন্দরে।
Published By: Prasenjit DuttaPosted: 01:42 PM Aug 07, 2025Updated: 01:52 PM Aug 07, 2025

দুলাল দে: ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানকে বাদ দিয়ে বৃহস্পতিবার আইএসএলের আট দল ফেডারেশন সভাপতির সঙ্গে আলোচনায় বসছে, তাদের আইএসএলের ভবিষ্যৎ নিয়ে কী হবে তা জানতে। যদিও ফেডারেশন এই মুহূর্তে আইএসএল নিয়ে কিছু বলার জায়গায় নেই। ফেডারেশন যেহেতু ক্লাবগুলোর পেরেন্ট বডি, তাই সেই পেরেন্ট বডির কাছেই ক্লাবগুলো জানতে চাইবে, যে ফুটবলারদের তারা সই করাচ্ছে তাঁদের ভবিষ্যৎ কী? অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, ক্লাবগুলোও জানে ফেডারেশনের কোনও ক্ষমতাই নেই আইএসএল চালানোর বিষয়ে। শুধুমাত্র কল্যাণ চৌবের নেতৃত্বাধীন ফেডারেশনের উপর চাপ তৈরি করার জন্য এই বৈঠকে বসতে চলেছেন ক্লাবকর্তারা।

Advertisement

পালটা ফেডারেশন সভাপতি শিবির প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে, বৈঠকে তারাও ক্লাবগুলোকে বলবে, যেহেতু ডিসেম্বর পর্যন্ত এফএসডিএলের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, তাই এর মধ্যে কিছু করা সম্ভব নয়। এই বৈঠকেই ক্লাবগুলোর সামনে নতুন একটি লিগের প্রস্তাব রাখতে চলেছে তারা। বলা হবে, এই লিগ আয়োজনের জন্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকার মতো করে ক্লাবগুলোকে দিতে হবে। বাকি টাকা ফেডারেশন জোগাড় করবে। যদি আইএসএল না করে এফএসডিএল, তাহলে এই নতুন লিগ করবে বলে জানাবেন কল্যাণ চৌবেরা। যদিও অনেক ক্লাবই জেনে গিয়েছে, এই রকম একটা হাস্যকর প্রস্তাব আসতে চলেছে। কারণ, ইতিমধ্যেই কয়েকটি ক্লাব আইএসএলে পাঁচশো থেকে ছ'শো কোটি টাকা লগ্নি করে ফেলেছে। সেখানে নতুন ছোট্ট এই প্রতিযোগিতার প্রস্তাব যথেষ্টই হাস্যকর। ক্লাবগুলো জানেই, ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ রাজনীতিবিদদের মতো এইরকম একাধিক ফাঁকা আশ্বাস তাঁর সভাপতি হওয়ার সময় থেকেই দিয়ে আসছেন। যেমন ভার প্রযুক্তিকে ভারতীয় ফুটবলে আনা। আজ পর্যন্ত দিনের আলো দেখেনি ভার।

অনেকেই বুঝে গিয়েছেন ডিসেম্বরের মধ্যেই ফেডারেশনের নির্বাচন হয়ে যাবে। তার আগে এমন নতুন লিগের প্রস্তাব দেখিয়ে ফেডারেশন সভাপতি নিজেদের দিকে সমর্থন টানার কাজ করবেন। সবাই এখন তাকিয়ে স্পোর্টস বিলের দিকে। এই স্পোর্টস বিল প্রথমে লোকসভায় পাস হবে। তার পর রাজ্যসভায় পাস হবে। এই পুরো প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে লোকসভার বাদল অধিবেশনের ২১ আগস্টের মধ্যেই। এই প্রক্রিয়া শেষ হলেই সম্ভবত সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রকাশ হওয়ার কথা। যার উপর নির্ভর করবে ফেডারেশনের সংবিধান এবং আসন্ন নির্বাচন। সেদিকেই ভারতীয় ফুটবল মহল দাঁড়িয়ে। এর মধ্যেই আলোচনার মাধ্যমে সব পক্ষকে এক জায়গায় এনে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে অক্টোবরের শেষ দিকে আইএসএল শুরু করা যায়।

এর মধ্যেই সমস্যায় জাতীয় দল এবং খালিদ জামিল। যা জানা যাচ্ছে, খালিদ জামিলকে কোচ নির্বাচন করা হয়েছে কোনও রকম ইন্টারভিউ ছাড়াই। টেকনিক্যাল কমিটি যে তিনজনের নাম চূড়ান্ত করেছিল সেই তিনজন হলেন খালিদ, স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন ও স্টেফান তারকোভিচ। নিয়ম অনুযায়ী বাছাই করা চূড়ান্ত কোচেদের টেকনিক্যাল কমিটির সামনে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়। তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয় তাঁদের ভিশন কী? খালিদকে ডেকে জিজ্ঞাসা করা হয়নি, তাঁর ভিশন কী? জাতীয় দলকে নিয়ে কী ভাবছেন তিনি? সুনীল ছেত্রীর মতো ফুটবলাররা তাঁর পরিকল্পনায় আছেন কি না? জানতে চাওয়া হয়েছিল কত বেতন চান। খালিদ জবাব দিয়েছিলেন, তাঁর তিন বছরের চুক্তি চাই, সঙ্গে মাসিক দশ লক্ষ টাকা। আর স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন জানিয়েছিলেন, মাসিক কুড়ি হাজার ডলার চান তিনি। আর কোনও প্রশ্নই করা হয়নি। ফলে খালিদ নিজেও জানেন না জাতীয় দল নিয়ে তাঁর কী করণীয়। খালিদের সঙ্গে জামশেদপুরের চুক্তি রয়েছে। এদিকে ডুরান্ডে খেলছে জামশেদপুর। পাশাপাশি জাতীয় দল কাফা নেশন কাপে খেলবে। প্রথম ম্যাচ ২৯ আগস্ট। প্রতিপক্ষ তাজিকিস্তানের বিরুদ্ধে। ডুরান্ড ফাইনাল ২৩ আগস্ট। যদি জামশেদপুর ডুরান্ড ফাইনালে খেলে তা হলে কাফা নেশন কাপে নামার আগে খালিদ কত দিনের জাতীয় শিবির করবেন? তাহলে কি তিনি কাফায় থাকবেন না? যে কারণে খালিদকে সরকারিভাবে ফেডারেশন ঘোষণা করে দিলেও এখনও পর্যন্ত ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে খালিদের কোনও মন্তব্য প্রকাশ করা হয়নি। খালিদের সঙ্গে কত বছরের চুক্তি হয়েছে, তাও প্রকাশ করা হয়নি ফেডারেশনের তরফ থেকে। এর আগেও একাধিক বিষয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ পুড়েছে ফেডারেশনের। তা চার্চিলকে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হোক কিংবা ইগর স্টিমাচের বিদায়। এবার খালিদকে নিয়েও সেই পথেই হাঁটছে ফেডারেশন।

এখানেই শেষ নয়, যেদিন খালিদকে কোচ করা হয়েছে ফেডারেশনের সেই কার্যকরী কমিটির বৈঠক নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে ফেডারেশনের অন্দরেই। সেই কার্যকরী কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ চৌবের দুই পরামর্শদাতা প্রাক্তন কোচ বিমল ঘোষ ও প্রাক্তন কোচ আর্মান্দো কোলাসো। ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটির অনেক কর্তার বক্তব্য হল, এই দুই প্রাক্তন কোচ ফেডারেশন সভাপতির ব্যক্তিগত পরামর্শদাতা। কার্যকরী কমিটির পরামর্শদাতা নন। অথচ তাঁরা দু'জনই এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত থেকে কে কোচ হবেন, তা নিয়ে বক্তব্য পেশ করেন। এই ঘটনা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানকে বাদ দিয়ে বৃহস্পতিবার আইএসএলের আট দল ফেডারেশন সভাপতির সঙ্গে আলোচনায় বসছে।
  • যদিও ফেডারেশন এই মুহূর্তে আইএসএল নিয়ে কিছু বলার জায়গায় নেই।
  • ফেডারেশন যেহেতু ক্লাবগুলোর পেরেন্ট বডি, তাই সেই পেরেন্ট বডির কাছেই ক্লাবগুলো জানতে চাইবে, যে ফুটবলারদের তারা সই করাচ্ছে তাঁদের ভবিষ্যৎ কী?
Advertisement