ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: একইদিনে পরপর দুটি মৃত্যু। গত সাতদিনে রোজ অন্তত একজনের ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে। বস্তুত এমন লাগামছাড়া সংক্রমণে রাশ টানতে এই সপ্তাহেই রাজ্যের ৫ জেলায় বিশেষজ্ঞদের পাঠাচ্ছে স্বাস্থ্যভবন। তাঁরা গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে।
শুক্রবার পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দা ১০ বছরের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছিল ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে। সেদিনই উত্তর ২৪ পরগনায় (North 24 Parganas) মধ্যমগ্রামের বাদুর বাসিন্দা কাবেরী চক্রবর্তী নামে এক গৃহবধূ ডেঙ্গু (Dengue) সংক্রমণে প্রাণ হারান। আর রবিবার সকালে দমদমের নাগেরবাজারের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে শিল্পী রায় নামে আরেকজনের প্রাণ কাড়ে ডেঙ্গু। পরিবারের অভিযোগ, বুধবার ডেঙ্গু পজিটিভ হয়ে তিনি ভরতি হন। অবস্থা ক্রমশ ভাল হচ্ছিল। কিন্তু নার্সিংহোমের অবহেলাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে নার্সিংহোমের নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে একপ্রস্ত বিতণ্ডা হয়।
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতের সঙ্গে হবে বেশ কয়েকটি পুরসভার ভোটও, জানিয়ে রাখলেন ফিরহাদ]
উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, হুগলি – এই ৫ জেলাতে ডেঙ্গু সংক্রমণ কার্যত লাগামছাড়া। ঘটনাচক্রে এই পাঁচ জেলাতেই জলাশয়ের পরিমাণ অনেক বেশি এবং বেশিরভাগ জলাশয়ের আশেপাশে মশার আঁতুড়ঘর। স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাক্তার সিদ্ধার্থ নিয়োগী রবিবার জানিয়েছেন, ”অবস্থা কিছু নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে সবাই যদি নিজের বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখে, তবে ডেঙ্গু অনেকটাই কমবে।” জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার যোগীরাজ রায়ের বক্তব্য, ”জাঁকিয়ে শীত পড়লে ডেঙ্গু কমবে।”
[আরও পড়ুন: মারধর করে পঞ্চায়েত দখল নয়! কামারহাটির সভায় কর্মীদের কড়া বার্তা বিধায়ক মদন মিত্রের]
শহরের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই ডেঙ্গুর থাবা চওড়া করছে গ্রামবাংলায়। মুর্শিদাবাদের লালগোলা ব্লকে প্রথম থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল সবচেয়ে বেশি। এখনও সেই অবস্থার উন্নতি হয়নি। একই ছবি উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাট ব্লকে। জলপাইগুড়ির মাল ব্লক একটা সময়ে সংক্রমণের শীর্ষে থাকলেও এখন সেখানে কমেছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। অবস্থার উন্নতি হয়েছে হাওড়ার বালি-জগাছা, কালিম্পঙের গোরুবাথান এবং মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা-১ ব্লকের। কিন্তু উলটো ছবি মুর্শিদাবাদেরই (Murshidabad) জিয়াগঞ্জ ও দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারজঞ্জ ব্লকে। ধীরে হলেও সেখানে ঊর্ধ্বমুখী ডেঙ্গুর লেখচিত্র। ডেঙ্গু অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে নিয়ম করে বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল টিম পাঠাচ্ছে স্বাস্থ্যভবন।