রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: মন্দারমণি ও দিঘায় মধুচক্রের রমরমা! পুলিশি অভিযানের পরেও ঠেকানো যাচ্ছে না। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, সপ্তাহের শেষে বেশিরভাগ পর্যটকরা মন্দারমণি আসছেন মধুচক্রের টানে। রাতভর উদ্দাম পার্টি চালানোর পরে অবার ফিরে যাচ্ছেন। তাই শনি ও রবিবার মন্দারমণিতে সমস্ত হোটেলের রুম বুকিং থাকলেও সমুদ্র সৈকতে সেভাবে ভিড় নজরে পড়ে না। দিঘা-মন্দারমণির মতো পর্যটন কেন্দ্রকে হাতিয়ার করে একটি নয়, একাধিক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আর পুলিশ সেই চক্র ভাঙতে লাগাতার অভিযান শুরু করেছে।
দিঘা-মন্দারমণিতে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিন দফা অভিযানে প্রকাশ্যে এসেছে হোটেল ব্যবসার আড়ালে চলতে থাকা একাধিক বড়সড় সব মধুচক্রের হদিশ। দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনের নাকের ডগায় রমরমিয়ে চলছিল এই দেহ ব্যবসা। তবে এবার পুলিশি অভিযান শুরু হতেই একে একে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে এই অবৈধ কারবারের খুঁটিনাটি। যার জেরে নষ্ট হচ্ছে সৈকত নগরীর ঐতিহ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, মন্দারমণির দুই হোটেলে মধুচক্রের পর্দাফাঁস হওয়ার পর ওল্ড দিঘার একটি হোটেলেও একই ভাবে দেহ ব্যবসার হদিশ পাওয়া যায়। সেখানে অভিযান চালিয়ে ছয় যুবতীকে পুলিশ পাকড়াও করে। তবে পুলিশ অত্যন্ত গোপনে অভিযান চালালেও তাঁদের পৌঁছানোর আগেই হোটেলের ম্যানেজার-সহ কর্মীরা বেপাত্তা। কয়েকদিন আগে দু’দফায় মন্দারমণিতে মধুচক্রের বিরুদ্ধে অভিযান হয়েছে। প্রথম দফায় একটি হোটেল থেকে ম্যানেজার, কর্মী, এজেন্ট, খদ্দের মিলিয়ে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার এবং ছয় জন যুবতীকে উদ্ধার করেছিল মন্দারমণি উপকূল থানার পুলিশ। তার পর ৩১ জুলাই রাতে মন্দারমণিতেই ফের অভিযানে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার হয় পাঁচ যুবতী। এমনকী ইতিমধ্যে দিঘা সীমান্তের হোটেলে অভিযান চালিয়ে তিন যুবতী-সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে দিঘা থানার পুলিশ।
ফাইল ছবি
[আরও পড়ুন: পেট্রাপোল সীমান্তে গড়াল ট্রাকের চাকা, তিনদিন পর শুরু ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য]
সূত্রের খবর, একাংশ অসাধু হোটেল মালিক বিভিন্ন জেলা থেকে যুবতীদের মোটা টাকার বিনিময়ে এনে দেহ ব্যবসার কাজে লাগায়। মোটা টাকার বিনিময়ে ওই যুবতীদের হোটেলে পর্যটকদের ঘরে পাঠানো হয়। এমনকী, মোবাইলে ছবি পাঠিয়ে পছন্দমতো যুবতী সরবরাহ করা হয় বলেও অভিযোগ। বারবার এমন অভিযোগ ওঠায় মন্দারমণি-সহ উপকূলের বিভিন্ন থানার পুলিশ নড়েচড়ে বসেছে। উপকূলের থানাগুলির দায়িত্বে থাকা ডিএসপি ডিঅ্যান্ডটি আবু নূর হোসেন বলেন, ‘‘এই ধরনের বেআইনি কারবারের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান জারি রয়েছে। এলাকার বিভিন্ন হোটেলে নজরদারি জোরদার হয়েছে। বিভিন্ন মানুষ বাইরে থেকে আসেন এই দিঘা, মন্দারমণিতে। টাকার লোভে তাদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য এসব অবৈধ কাজ হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ শক্তহাতে এসবের মোকাবিলা করছে।’’