সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কর্ণাটক বিধানসভা (Karnataka Assembly Elections 2023) নির্বাচনে বিরাট ব্যবধানের এই হার চলতি বছর বিজেপির জন্য দ্বিতীয় বড় ধাক্কা। কিন্তু এখানেই কি শেষ? নাকি ২৪-এর লোকসভার আগে আরও ধাক্কা বাকি আছে? এখন থেকেই প্রমাদ গোনা শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।
চলতি বছরের শেষেই আরও অন্তত পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন। এর মধ্যে রাজস্থান, ছত্তিশগড়ে এখন ক্ষমতায় কংগ্রেস (Congress)। মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় বিজেপি (BJP)। তেলেঙ্গানায় এখন রয়েছে কেসিআরের (KCR) ভারত রাষ্ট্র সমিতি, মিজোরামে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট। এ বছর ভোট হতে পারে কাশ্মীরেও। সেটা অবশ্য আপাতত রাষ্ট্রপতি শাসিত। লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের কর্ণাটক জয় দেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ এর প্রভাব পরবর্তী পাঁচ রাজ্য রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও জম্মু কাশ্মীর ছাড়াও লোকসভা নির্বাচনে পড়তে বাধ্য।
[আরও পড়ুন: সাত মাসে ৪ রাজ্যে হার, চাপ নাড্ডার উপর! খাড়গে সভাপতি হতেই সাফল্যের সরণিতে কংগ্রেস]
কংগ্রেসের দাবি, চলতি বছর এই পাঁচ-ছয় রাজ্যেই ভাল ফল করবে তাঁরা। কর্ণাটকে যে হাওয়া উঠেছে, সেই হাওয়া অন্য রাজ্যগুলিতেও পড়বে। ছত্তিশগড়ে এখন ক্ষমতায় কংগ্রেস। রাজনৈতিক মহলের দাবি, সেরাজ্যে আবারও সরকার গড়ার মতো জায়গায় আছে হাত শিবির। সেরাজ্যে বিজেপির সংগঠন ভঙ্গুর। কিছুদিন আগে এক জনমত সমীক্ষা ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসকেই এগিয়ে রেখেছে। রাজস্থানে ক্ষমতায় কংগ্রেস। সেখানে পাঁচ বছর পর ক্ষমতা বদলের রীতি থাকলেও শেষ মুহূর্তে কি হয় এখনই নিশ্চিত নন মোদি-শাহরা। সেখানেও জনমত সমীক্ষায় এই মুহূর্তে এগিয়ে কংগ্রেস। ২০১৮ সালে পিছনের দরজা দিয়ে মধ্যপ্রদেশ দখল করেছিল বিজেপি। করোনাকালে দল ভাঙিয়ে রাজের দখল নেন অমিত শাহরা (Amit Shah)। এই রাজ্যেও কর্ণাটকের মতো জনরোষের প্রতিফলন ভোটবাক্সে হতে পারে।
[আরও পড়ুন: ‘পিকে’র সঙ্গী থেকে রাহুলের ‘মেঘনাদ’, চিনে নিন কংগ্রেসের কর্ণাটক জয়ের নেপথ্য নায়ককে]
এবার আসা যাক তেলেঙ্গানায়। কর্ণাটকের পড়শি এই রাজ্যে নতুন করে সংগঠন গড়ে তুলেছে বিজেপি। কংগ্রেসকে সরিয়ে সেরাজ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসাই মূল লক্ষ্য গেরুয়া শিবিরের। কিন্তু কর্ণাটকের এই হারে সেই লক্ষ্যেও বড়সড় ধাক্কা খেতে পারে গেরুয়া শিবির। কারণ এতদিন কর্ণাটকে ঘাঁটি গেঁড়েই তেলেঙ্গানায় প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছিল গেরুয়া শিবির। সেই কর্ণাটকই এখন বিজেপির হাতছাড়া। তেলেঙ্গানাতেও তাই ধাক্কা খেতে পারে বিজেপি। আর কাশ্মীরে যদি মোদি-শাহরা সাহস দেখিয়ে ভোট ঘোষণা করেনও, সেখানেও যা জনরোষ তাতে বিরাট সাফল্য গেরুয়া শিবির হয়তো আশা করবে না।
এই পাঁচ রাজ্যের ফলাফল বিপক্ষে গেলে লোকসভা ভোটের আগে গোটা দেশে নেতিবাচক বার্তা যাবে বলে মনে করছে বিজেপি শীর্ষনেতৃত্ব। কিন্তু ২৪ সালে কেন্দ্রের সরকার দখলে রাখতে প্রধানমন্ত্রী কোনও ঝুঁকি নেবেন না বলেও মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সংগঠনের শীর্ষে থাকা নেতৃত্ব মোদি-শাহদের রোষের মুখে পড়তে হবে। আর নাহয় দেশপ্রেম এবং ধর্মের জিগির তোলার চেষ্টা করবে বিজেপি। এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।