সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেন (Ukraine) সমস্যা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে যখন মেরুকরণে যোগদানের তোড়জোড় চলছে, ঠিক সেই সময়ে দাঁড়িয়ে ব্যতিক্রমী একটি সিদ্ধান্ত নিল ভারত। আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে ইউক্রেন ইস্যুতে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকল ভারত। তবে বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন আমেরিকার আনা প্রস্তাবে সমর্থন না জানিয়ে পুরোন বন্ধু মস্কোর পাশেই দাঁড়িয়েছে নয়াদিল্লি।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ‘দুনিয়া বদলে দেবে’, মহাপ্রলয়রে হুঁশিয়ারি বাইডেনের মুখে]
রাষ্ট্রসংঘে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের বার্তা দিল ভারত। ইউক্রেন সম্পর্কিত উত্তেজনা অবিলম্বে হ্রাস করার আহ্বান জানিয়েছে ভারত। দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সমর্থন জানানোর কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে। শান্তিপূর্ণ এবং গঠনমূলক কূটনৈতিক আলোচনার জন্য আমেরিকা ও রাশিয়ার উভয়ের কাছেই আবেদন করেছে ভারত। ইউক্রেনের ২০ হাজার ভারতীয়র নিরাপত্তাই ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে। ভারত শান্তির বার্তা দিলেও নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেন ইস্যুতে পরদ চড়ে আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে।
মিন্সক চুক্তি ও নরম্যান্ডি ফরম্যাটে আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে চলা আলোচনার পক্ষে সওয়াল করে রাষ্ট্রসংঘে ভারতের প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি বলেন, ‘ভারতের স্বার্থ হল এমন একটি সমাধান খুঁজে বের করা যা তাৎক্ষণিকভাবে উত্তেজনা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়। সমস্ত দেশের বৈধ নিরাপত্তা স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে এবং এই অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ করা উচিত।’ ভারত ছাড়া নিরাপত্তা পরিষদের আরও দু’টি দেশ ইউক্রেন ইস্যুতে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। কেনিয়া ও গ্যাবন। তবে যে ১০টি দেশ এই ইস্যুতে ভোট দিয়েছে, তাদের মধ্যে রাশিয়া ও চিন প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। এদিকে আমেরিকা-সহ আটটি দেশ প্রস্তাবনার পক্ষে ভোট দেয়।
উল্লেখ্য, পূর্ব ইউরোপের একাধিক ঘাঁটি থেকে ফৌজ সরাতে হবে আমেরিকা ও ন্যাটো জোটকে বলে দাবি করেছে তারা। বিশ্লেষকদের মতে, পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সম্প্রসারণে উদ্বিগ্ন মস্কো। এবার আমেরিকার নেতৃত্বে ওই সামরিক জোটে ইউক্রেন যোগ দিলে, রাশিয়ার সীমান্তের কাছে এসে পড়বে বিরোধী শিবির। তাই প্রতিরক্ষার কৌশলগত কারণেই ইউক্রেন দখল করে পূর্ব ইউরোপ ও নিজেদের মধ্যে একটি ‘বাফার জোন’ তৈরি করতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এহেন পরিস্থিতিতে পূর্ব ইউরোপে ফৌজ পাঠানোর কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।