সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিম(এমটিসিআর)-এ ভারতের অন্তর্ভুক্তি দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটাতে চলেছে৷ জুলাই মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার জেনারেল এরোনটিক্যাল সিস্টেম ইনকর্পোরেশনের কাছ থেকে ‘প্রিডেটর সি’ নাম জেট পাওয়ার্ড ‘আনম্যানড এরিয়াল ভেহিক্যাল'(ইউএভি) কিনতে চলেছে ভারত৷ এই অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ হলে ‘প্রিডেটর সি’-ই হতে চলেছে দেশের সবচেয়ে ঘাতক ড্রোন৷
গতবছরের সেপ্টেম্বরে ওই একই সংস্থার কাছ থেকে ‘প্রিডেটর এক্স পি’ নামে আরও একটি ড্রোন কিনতে চেয়েছিল ভারত৷ কিন্তু ওই ড্রোন শুধুমাত্র নজরদারির কাজে ব্যবহার করা যাবে জেনে ভারত আর কথাবার্তা এগোয়নি৷ কারণ, ভারতের দরকার পরমাণু বোমা পরিবহণে সক্ষম ‘আনম্যানড এরিয়াল ভেহিক্যাল’৷ জেট পাওয়ার্ড ‘প্রিডেটর সি’ ৬৫০০ পাউন্ড ওজনের পরমাণু বোমা বহন করতে সক্ষম৷ মাটি থেকে ৫০ হাজার ফুট উচ্চতায় একটানা ১৮০০ মাইল পর্যন্ত উড়তে পারে ওই ঘাতক ড্রোন৷
১৯৮৭ সালে মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিম (এমটিসিআর) তৈরি হয়। ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে সেই সময়ে বিশ্বে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল যে সব দেশ, তারাই এই সংগঠন গড়ে তোলে। ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি বিভিন্ন দেশের হাতে ছড়িয়ে পড়া রুখতেই ওই সংগঠনের জন্ম। ভারত সে সময় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা শুরু করে দিলেও, খুব একটা অগ্রগতি তখনও হয়নি। তাই ভারতকে এমটিসিআর-এর সদস্য হতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু গত দেড় দশকে মিসাইল টেকনোলজিতে ভারতের এত দ্রুত উত্থান ঘটেছে যে এমটিসিআর-এর সদস্য দেশগুলির অনেকের থেকেই এগিয়ে গিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির অস্ত্রাগারে এখন এত রকমের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে এবং সেগুলির বৈশিষ্ট্য এতই বিধ্বংসী যে আমেরিকা, চিন, রাশিয়া ছাড়া অন্য যে কোনও দেশের পক্ষে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্রের অনেকগুলির সঙ্গেই এঁটে ওঠা মুশকিল। ভারতের ব্রহ্মস কিন্তু আমেরিকা এবং চিনকেও টেক্কা দিয়ে দিয়েছে।
এই মুহূর্তে ভারতের দরকার অন্তত ১০০টি ড্রোন৷ তবে নৌ-সেনা চাইলে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ২৫০ তে৷ কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, “আমেরিকার কাছ থেকে এ ধরণের অস্ত্র কেনার প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ৷ তবে আমাদের কথাবার্তা চলছে৷ এমটিসিআর-এ প্রবেশ আমাদের প্রথম পদক্ষেপ৷” ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে ‘প্রিডেটর সি’ অ্যাভেঞ্জার প্রথম ডানা মেলে৷ মার্কিন নৌসেনা নজরদারি ও হামলার জন্য বরাদ্দ নৌবহরে ওই ঘাতক ড্রোন ব্যবহার করে৷ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিএইএ ওই ড্রোন ব্যবহার করে৷ হেল ফায়ার-২ ক্ষেপণাস্ত্র বহনেও সক্ষম অ্যাভেঞ্জার৷ ভারত তাদের এএএইচ৬৪ অ্যাপাচের জন্য ওই ক্ষেপণাস্ত্রও কেনার বরাত দিয়েছে মার্কিন সংস্থাকে৷ চলতি বছরের অক্টোবরে অ্যাভেঞ্জারের পাল্লা আরও বাড়বে৷ উন্নত ভার্সনের ড্রোনগুলিই ভারতের হাতে তুলে দেবে মার্কিন সংস্থাটি৷
The post পরমাণু ক্লাবে প্রবেশ নিশ্চিত জেনে ঘাতক ‘প্রিডেটর’ কিনছে ভারত appeared first on Sangbad Pratidin.