সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাদ্রাজ হাই কোর্টের বিচারপতি জিআর স্বামীনাথনের বিরুদ্ধে ‘ইমপিচমেন্ট’ প্রস্তাব আনায় এবার বিরোধীদের একযোগে তোপ দাগলেন ৫৬ জন প্রাক্তন বিচারপতি ও বিচারক। তাঁদের দাবি, এভাবে ইমপিচমেন্টকে হাতিয়ার করে আসলে বিচারব্যবস্থাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে বিরোধীরা।
মাদ্রাজ হাই কোর্টের বিচারপতি জিআর স্বামীনাথনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করছিল ডিএমকে। তামিলনাড়ুর শাসকদলের উদ্যোগেই বিরোধী শিবির ওই বিচারপতির ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব এনেছে। প্রস্তাবটিতে মোট ১২০ জন সাংসদ স্বাক্ষর করেছেন বলে খবর। ‘ইমপিচমেন্ট’ প্রস্তাবে অভিযোগ করা হয়েছে, বিচারপতি স্বামীনাথনের রায় পক্ষপাতদুষ্ট এবং রাজনৈতিক মতাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত। যা বিচার বিভাগের স্বচ্ছতাকে নষ্ট করে। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের একজন সিনিয়র আইনজীবী এবং অন্যান্য বেশ কয়েকজন আইনজীবীদের প্রতিও পক্ষপাত দেখানোর অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এধরনের কার্যকলাপ ধর্মনিরপেক্ষ সাংবিধানিক নীতি বিরুদ্ধ। ‘ইমপিচমেন্ট’ প্রস্তাবটি দেশের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তের কাছেও পাঠানো হয়েছে বলে খবর।
যদিও বিচারপতি জিআর স্বামীনাথনের ওই অপসারণ নিয়ে বিচারব্যবস্থার একাংশ ক্ষুব্ধ। পালটা চিঠি দিয়ে ৫৬ জন বিচারপতি বলছেন, 'এই পুরো বিষয়টা আসলে আমাদের বিচারব্যবস্থার মূলে আঘাত হানার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও ধরেও নেওয়া যায় বিচারপতির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সত্যি, সেটাও তাঁকে ইমপিচ করার জন্য যথেষ্ট নয়। এভাবে বিচারব্যবস্থাকে চাপ দেওয়া হলে সেটা আমাদের গণতন্ত্রের মূলে আঘাত হানবে। এবং বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।'
‘ইমপিচমেন্ট’ প্রস্তাব পেশ হওয়ার অর্থ হল অভিযুক্ত ওই বিচারপতির অপসারণ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ। সংবিধানের ১২৪(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সেই প্রস্তাবের পক্ষে সাংসদদের সই করে স্পিকারের কাছে জমা দিতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় সংসদের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে এই প্রস্তাব গৃহীত হতে হবে। তবে অভিযুক্ত যদি দোষী না হন সেক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না এবং প্রস্তাব বাতিল হবে। আর যদি দোষী সাব্যস্ত হন সেক্ষেত্রে প্রস্তাব পাশ হওয়ার পর বিচারপতিকে অপসারণের জন্য তা পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতির কাছে।
