সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) জৌনপুরে এক বৃদ্ধের করুণ ছবি ভেসে উঠল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ওই বৃদ্ধের স্ত্রী সম্প্রতি মারা যান হাসপাতালে। করোনার (Corona Virus) ভয়ে গ্রামবাসীরা এলাকায় তাঁর শেষকৃত্য করতে দেয়নি। বাধ্য হয়ে সাইকেলে করে স্ত্রীর নিষ্প্রাণ দেহ কয়েক কিলোমিটার দূরে বয়ে নিয়ে যান সেই বৃদ্ধ স্বামী। সেই ঘটনার দু’টি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তারপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন তৈরি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, জৌনপুরের অম্বরপুর নামে এক এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধ তিলকধারী সিংয়ের স্ত্রী রাজকুমারী (৫০) বেশ কিছু দিন ধরে রোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে উমানাথ সিং জেলা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সোমবার সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁর দেহ গ্রামে পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গ্রামবাসীরা কেউ এগিয়ে আসেননি ওই মহিলার শেষকৃত্যে সাহায্য করতে। উলটে তাঁরা বাধা দেন। তাঁদের মনে হয়েছিল ওই মহিলা করোনা আক্রান্ত ছিলেন। তাই তাঁরা রাজকুমারীর শেষকৃত্য গ্রামে সম্পন্ন করতে দেননি। যদিও ওই মহিলার মৃত্যু করোনায় হয়েছে কিনা তা সরকারি ভাবে জানা যায়নি।
গ্রামবাসীরা বাধা দেওয়ায় বাধ্য হয়ে স্ত্রীর দেহ সাইকেলে চাপিয়ে দূরে এক জায়গায় নিয়ে যেতে হয় তিলকধারীকে। সেই সময় কেউ একজন ‘শেষযাত্রা’র সেই ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে কী ভাবে ক্লান্ত হয়ে তিলকধারী রাস্তার ধারে বসে রয়েছেন। আর সাইকেল-সহ স্ত্রীর দেহ পড়ে রয়েছে রাস্তায়। পুলিশ পরে জানতে পেরে রামঘাট নামে দূরের একটি জায়গায় শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করে।
[আরও পড়ুন: একটি বাড়তি ডোজ নিলেই করোনার বিরুদ্ধে আজীবন ইমিউনিটি! দাবি ভারত বায়োটেকের]
করোনা কেড়ে নিচ্ছে কাছের মানুষকে। কিন্তু তাঁর জন্য যে দুঃখ প্রকাশ করবে তার অবকাশ নেই। শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য যে হয়রানি পোহাতে হচ্ছে, তা এককথায় নজিরবিহীন। তাতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন প্রিয়জন। সম্প্রতি হায়দরাবাদের এক মর্মান্তিক ঘটনায় আঁতকে উঠছে দেশবাসী।
এদিকে একই রকম আরও একটি ঘটনা সামনে এসেছে তেলেঙ্গানার কামারেড্ডি এলাকা থেকে। সেখানে করোনা সংক্রমণে এক মহিলার মৃত্যু হয়। কিন্তু অর্থের অভাবে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্স কিছুই পাননি ওই মহিলার স্বামী। শেষে স্ত্রীর কাপড়েই তাঁকে জড়িয়ে, মৃতদেহ কাঁধে তুলে কাঁদতে কাঁদতে ৩ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে শ্মশানে নিয়ে যান তিনি।
[আরও পড়ুন: অবশেষে খোঁজ মিলল! কেন্দ্রীয় বাহিনীকে চরকি পাক খাইয়ে তারাপীঠ মন্দিরে অনুব্রত]
জানা গিয়েছে, মহিলার নাম নাগলক্ষ্মী। স্বামীর সঙ্গে কামারেড্ডি রেলস্টেশনের কাছে থাকতেন। করোনা আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। রবিবার নাগলক্ষ্মীর মৃত্যু হয়।