সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আহমেদাবাদ এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ভেঙে পড়ে বৃহস্পতিবার বহু যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানিও। কিন্তু তিনি প্রথম নন। ৬৫ বছর আগে গুজরাতের আরও এক মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যু হয়েছিল বিমান দুর্ঘটনায়। আর তিনি ছিলেন তখন ক্ষমতাসীন মুখ্যমন্ত্রী। তবে কোনও দুর্ঘটনা নয়, তাঁর প্রাণ কেড়েছিল পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানের ঘাতক আক্রমণ। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের সময় কচ্ছ সীমান্তে একজন পাকিস্তানি বায়ুসেনা অফিসার বলবন্তরাই মেহতার বিচক্রাফট বিমানটিকে নজরদারি বিমান ভেবে গুলি করে ভূপতিত করে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই তাঁর স্ত্রী, তাঁর তিন কর্মী, একজন সাংবাদিক এবং দু’জন ক্রু মারা গিয়েছিলেন। এই বলবন্তরাই মেহতাকেই ভারতের ‘পঞ্চায়েতিরাজ-এর জনক’ বলে মনে করা হয়।
ঠিক কী ঘটেছিল ১৯৬৫-র ২৩ সেপ্টেম্বর? তখন ভারত-পাক যুদ্ধ চরমে। ২৫ বছর বয়সি পাকিস্তানি ফ্লাইং অফিসার কায়েস হুসেন একটি স্যাবর জেট উড়িয়ে ভুজ এবং পূর্ব সিন্ধুর উপর আকাশে টহল দিচ্ছিলেন। একটি বেসামরিক বিমান দেখতে পেয়ে হুসেন কন্ট্রোলের কাছে অনুমতি চান এবং অনুমতি পেয়েই বিচক্রাফটের দিকে গুলি চালান। যদিও বিচক্রাফটের চালক সতর্কতামূলক বার্তা দিয়েছিলেন। শত্রুর নজরদারি অভিযান ব্যর্থ করে দেওয়ার আনন্দে হুসেন করাচিতে তাঁর ঘাঁটিতে ফিরে আসেন। কয়েক ঘণ্টা পর যখন অল ইন্ডিয়া রেডিওর সন্ধ্যা ৭ টার বুলেটিনে ঘোষণা করা হয় যে, গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বলবন্তরাই মেহতা এবং সাত বেসামরিক নাগরিককে বহনকারী একটি বিমান পাকিস্তান গুলি করে ভূপতিত করেছে, তখন হুসেনের অহঙ্কার হতাশা, অবিশ্বাস এবং আজীবনের বোঝায় পরিণত হয়।
বিচক্রাফটের চালক ছিলেন জাহাঙ্গির ইঞ্জিনিয়ার, ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রাক্তন পাইলট। ৩৬ বছর পর একটি পাক সংবাদপত্রে সেই ঘটনার উল্লেখ দেখে অনুতপ্ত ও অবসরপ্রাপ্ত কায়েস হুসেন খুঁজে বের করেন জাহাঙ্গির ইঞ্জিনিয়ারের কন্যা ফরিদা সিংকে। তিনি মুম্বইয়ে থাকতেন। নিজের ভুলের জন্য ই-মেল করে ক্ষমাও চান কায়েস হুসেন। জবাবে তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়ার কথা জানান ফরিদা।
