সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংঘের প্রভাব ছেড়ে বিজেপি অনেকাংশে মোদি নির্ভর হয়ে উঠছে। এতদিন এ কথা শোনা যেত বিরোধীদের মুখে। এবার খোদ বিজেপিরই প্রথম সারির সাংসদ নিশিকান্ত দুবের মুখে শোনা গেল সেই স্বীকারোক্তি। তিনি মেনে নিলেন, মোদিকে বিজেপির প্রয়োজন। তিনি না থাকলে গোটা দেশে দেড়শো আসনও পাবে না বিজেপি।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিশিকান্ত দুবে বলেছেন, "২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর বিজেপির একটা নতুন ভোটব্যাঙ্ক তৈরি হয়েছে। সেই ভোটব্যাঙ্ক আগে বিজেপির ছিল না। বিশেষ করে গরিব শ্রেণির মানুষের সমর্থন বিজেপির দিকে ঘুরে গেছে। সেই আস্থা এখনও অটুট। মোদির প্রতি ওই ভোটারদের আস্থা আছে বলেই তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী।" দুবের সাফ কথা, মোদির ভোটে জিততে বিজেপিকে প্রয়োজন পড়বে না। কিন্তু মোদিকে বিজেপির প্রয়োজন। গোড্ডার বিজেপি সাংসদ বলছেন, "আগামী অন্তত ১৫-২০ বছর নেতা হিসাবে আমি শুধু মোদিকেই দেখছি।"
নিশিকান্তর এই বার্তা আরএসএসের উদ্দেশে হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। একটা সময় জল্পনা শোনা যাচ্ছিল, পঁচাত্তরে মোদিকেও অবসরে পাঠাতে পারে আরএসএস। যদিও বিজেপি সেই ‘গুজব’ উড়িয়ে জানিয়ে দিয়েছে, মোদিই মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। কিন্তু তাতে জল্পনা কমছে না। সেই জল্পনায় নতুন করে ইন্ধন জুগিয়েছেন সংঘপ্রধান মোহন ভাগবত নিজে। সম্প্রতি সংঘের এক অনুষ্ঠানে আরএসএস প্রধান বলেন, “যখন ৭৫ বছর বয়সে আপনাকে কেউ অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে অভিনন্দন জানাতে আসবে, তখনই বুঝে যাবেন এবার আপনাকে থামতে হবে। অন্যের জন্য কাজের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে।” সংঘ প্রধানের এমন মন্তব্য মোদিকে বার্তা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আসলে গত এক দশকে বিজেপি যে অনেকটাই মোদি নির্ভর, সেটা মেনে নিচ্ছে সংঘের একাংশও। সেকারণেই সংঘ পরিবার গেরুয়া শিবিরের অন্দরে মোদির প্রভাব কমিয়ে সংঘের প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। এদিকে আরএসএসের এই ভূমিকা আবার না পসন্দ বিজেপির। গেরুয়া শিবির আপাতত মোদিকেই সর্বোপরি বলে মনে করছে। দলের সাফল্যের কৃতিত্বও তাঁকেই দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে নিশিকান্তর বার্তা আরএসএসের উদ্দেশে করা বলেই মনে করা হচ্ছে।
