সংবাদ প্রতিদিন ডিডিটাল ডেস্ক: সিডনি বন্ডি সৈকতের হামলাকারী সাজিদ আক্রমের হায়দরাবাদ যোগ প্রকাশ্যে। আগেই জানা গিয়েছিল আক্রম ভারতীয় পাসপোর্টে ফিলিপিন্সে গিয়েছিল। এবার জানা গেল, আড়াই দশক আগে হায়দরাবাদ ছেড়ে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দিয়েছিল সাজিদ। যদিও পুরাতন হায়দরাবাদের বাসিন্দা পরিবারটির দাবি, বহু বছর আগেই সাজিদের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়। যেহেতু সে একজন খ্রিস্টান মহিলাকে বিয়ে করে। উল্লেখ্য, বাবা-ছেলে সাজিদ ও নাভিদ ইহুদিদের উৎসবে হামলা চালিয়ে ১৫ জনকে হত্যা করেছে।
হায়দরবাদের বাসিন্দা সাজিদ আক্রমের দুই ভাই। তাঁদের একজন জানিয়েছেন, ১৯৯৮ সালে ভারত ছেড়ে অস্ট্রেলিয়া যান সাজিদ। সেখানে একজন খ্রিস্টান মহিলাকে বিয়ে করেন। অস্ট্রেলিয়াতেই ছেলে নাভিদের জন্ম হয়। ভিন্ন ধর্মের মহিলাকে বিয়ের পরেই সাজিদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে পরিবার। গত ২৭ বছরে মাত্র তিনবার ভারতে এসেছিল বন্ডি সৈকতের হামলাকারী প্রৌঢ়। শেষবার ২০২২ সালে ভারতে এসেছিল সে। আক্রম পরিবারের পরিচিত এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, ২০০৯ বাবার মৃত্যু হলেও সাজিদ ভারতে ফেরেননি। সাজিদের এক ভাই জানান, মা অসুস্থ হলেও সে খোঁজ নেয়নি।
ফিলিপিন্সের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাবা-ছেলে জঙ্গি গত ১ নভেম্বর ভারতীয় পাসপোর্টে সে দেশে ঢুকেছিল। সেখানে সাতাশ দিন কাটিয়ে ২৮ নভেম্বর ফিলিপিন্স ছাড়ে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সফরের শেষ প্রান্তে দাবাও নামের একটি জায়গায় ছিল সাজিদ-নাভিদ। সেখান থেকে ম্যানিলা হয়ে সিডনি ফেরে তারা। ফিলিফিন্স প্রশাসন জানিয়েছে, দুই জঙ্গির গতিবিধি বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে তারা।
সিডনির বন্ডি বিচে ইহুদিদের হানুকা উৎসবে হামলা চালানো বাবা-ছেলের গাড়িতে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের পতাকা পেয়েছেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বিশ্বজুড়ে ত্রাস ছড়ানো এই জঙ্গি সংগঠনের মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিল তারা। মঙ্গলবার এই হামলা সম্পর্কে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ জানান, “আমাদের অনুমান ইসলামিক স্টেটের মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে। এই মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে হিংসা ছড়ানোর এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। গত এক দশক ধরে এরা মানুষকে কট্টরপন্থার পথে চালিত করছে।” পুলিশের তরফেও জানানো হয়েছে, হামলাকারীদের গাড়িতে আইএস-এর পতাকা ও কিছু আইইডি বিস্ফোরক পাওয়া গিয়েছে।
উল্লেখ্য, রবিবার দুপুরে সিডনির অদূরে বিখ্যাত বন্ডি বিচে ‘হানুকা’ উৎসবে অন্তত ১০০০ জন শামিল হয়েছিলেন। উৎসব চলাকালীন দুই বন্দুকবাজ ঢুকে পড়ে সেখানে। এরপরই ভিড়ে ঠাসা ওই অঞ্চলে শুরু হয় গুলিবৃষ্টি। নিমেষে রক্তে লাল হয়ে যায় সোনালি বেলাভূমি। একে একে ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। শিশু, মহিলা কাউকেই রেয়াত করা হয়নি। ইহুদিদের উৎসবে হামলা চালানো দুই জঙ্গি হল সাজিদ আক্রম (৫০) ও তার পুত্র নাভিদ আক্রম (২৪)। সম্পর্কে এরা পিতা-পুত্র এবং পাক বংশোদ্ভূত। সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর থেকেই এরা অস্ট্রেলিয়া এসেছিল। অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৯৯৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বাবা এসেছিল। পরে ধাপে ধাপে তা রেসিডেন্ট ভিসা পেয়ে তারা সে দেশেই থেকে যায়। তার পুত্র নাভিদের জন্ম এখানেই। তদন্তে জানা গিয়েছে, হামলাকারী বাবা-ছেলে ‘শখের শিকারি’ বলে পরিচয় দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় করেছিল। লাইসেন্স পেতে ঘোরাঘুরিও করছিল। ৫০ বছরের বাবা একটি গানক্লাবের সদস্য।
