সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জমিতে চাষ করার জন্য পাথর সরানোর দরকার ছিল। কালো রঙের সেই বড় বড় পাথরের চাঁই সরিয়ে কর্নাটকের এক দলিত চাষি সেসব দিয়ে দেন এক ঠিকাদারকে। ভাস্কর অরুণ যোগীরাজ, তার থেকে একটি বেছে নেন রামলালার মূর্তি তৈরি করার জন্য। শেষ পর্যন্ত, যোগীরাজের তৈরি মূর্তিই নির্বাচিত হয় অযোধ্যার রামমন্দিরের গর্ভগৃহের জন্য। আজ, ২২ জানুয়ারি সেই মূর্তি প্রতিষ্ঠার দিন। না, রামদাস এইচ নামে দলিত সেই চাষি, অযোধ্যার বর্ণাঢ্য উদ্বোধনে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ পাননি। কিন্তু তাতে কী!
পেশায় শরীরশিক্ষার শিক্ষক, বছর সত্তরের রামদাস ঠিক করেছেন, তাঁর গ্রাম গুজ্জিগৌদানাপুরায় রামের একটি মন্দির তৈরি করবেন। আর তার জন্য দান করবেন নিজের জমির একটি অংশ। যে অর্থ উঠবে, তাতেই তৈরি হবে মন্দির। মাইসুরু থেকে কাছেই গুজ্জিগৌদানাপুরা। রামদাসের গ্রাম। বৃদ্ধ মনে করেন, রামলালার মূর্তি তৈরি হয়েছে, তাঁর জমির পাথর দিয়ে–এ তাঁর পরম সৌভাগ্য ছাড়া আর কিছুই নয়।
তাঁর কথায়, “আমার ২.৪ একর জমি ছিল। চাষবাস করব বলে জমি পরিষ্কার করতে লোক ডাকি। কিন্তু বড় বড় পাথরের চাঁই সরিয়ে কোথায় রাখব? তাই ঠিকাদারকে বলি, নিয়ে যেতে। পরে জানতে পারি, সেখান থেকেই একটি পাথর যোগীরাজ বেছে নিয়েছেন মূর্তি তৈরি করতে।” তাঁর সংযোজন, “আমি ঠিক করেছি, আমার জমি থেকে চার গুণ্টা অংশ দান করব রামমন্দির তৈরির জন্য। সেই মন্দিরের বিগ্রহও যোগীরাজই তৈরি করবেন। আমরা ওঁকেই বলেছি, তৈরি করতে।”
এদিকে, রামদাসের জমি থেকে পাথর নিয়ে যোগীরাজকে দিয়েছিলেন যে ঠিকাদার, সেই শ্রীনিবাস নটরাজ জানিয়েছেন, তিনিও রামমন্দির উদ্বোধনে আমন্ত্রণ পাননি। তবে তাঁর সংগ্রহ করা পাথর থেকেই যে রামলালার মূর্তি তৈরি হয়েছে, সেই খবরে তিনি খুশি। তাঁর কথায়, “বাকি পাথরের চাঁইগুলোও নষ্ট হয়নি। তা দিয়ে ভরত-লক্ষ্মণ এবং শত্রুঘ্নর মূর্তি তৈরি হয়েছে।” তবে একটি বিষয়ে তিনি ক্ষুব্ধ। আর তা হল, জমিতে অবৈধ খনন চালানোর জন্য খনি ও ভূতত্ত্ব বিভাগের তরফে তাঁকে ৮০,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়। নটরাজের দাবি, কালো পাথর অযোধ্যায় পৌঁছে দিতে তাঁরা ৬ লক্ষ টাকা খরচ করেছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেবল ১.৯৫ লক্ষ টাকাই ফেরত পেয়েছেন।