সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জনের প্রাণ যাওয়ার পাঁচ দিন পর আটক করা হয়েছে গোয়ার নাইটক্লাবের দুই মালিক গৌরব এবং সৌরভ লুথরাকে। বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডে আট করা হয়েছে দুই ভাইকে। এরপরেই সামনে এসেছে আরও বড় ঘটনা। জানা গিয়েছে, হোটেল ব্যবসায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত লুথরা ভাইদের বিরুদ্ধে বড় কর্পোরেট জালিয়াতির অভিযোগ উঠে আসছে।
জানা গিয়েছে, উত্তর দিল্লিতে একই ঠিকানায় কমপক্ষে ৪২টি কোম্পানির নাম নথিভুক্ত রয়েছে। বার্চ বাই রোমিও লেনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত লুথরা ভাইরা এগুলির সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, এই ৪২ সংস্থার মধ্যে বেশিরভাগের অস্তিত্বই শুধু কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ। নথির বাইরে এর কোনও অস্তিত্ব নেই।
কর্পোরেট রেকর্ড থেকে জানা গিয়েছে, লুথরা ভাইরা ৪২টি ভিন্ন কোম্পানি এবং এলএলপি-র ডিরেক্টর বা অংশীদার হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছেন। এই ধরণের নথিবদ্ধ হওয়া সংস্থা সাধারণত শেল কোম্পানি, লেয়ারিং, বেনামি লেনদেন এবং অর্থ পাচারের জন্য ব্যবহার করা হয়। লুথরা ভাইদের সংস্থাগুলির প্রচার থেকে জানা গিয়েছে থাইল্যান্ডের ফুকেটে একটি দোকান রয়েছে তাঁদের। যদিও, এখনও পর্যন্ত এর কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তবে, নথি থেকে বোঝা যাচ্ছে, থাইল্যান্ডে তাঁদের কোনও আউটলেট এবং কোনও যাচাইকৃত ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ব্লু কর্নার নোটিস জারি করে ইন্টারপোল। তারপর বুধবার দিল্লির রোহিণী কোর্টে লুথরাদের আইনজীবী দাবি করেন, রক্ষাকবচ পেলেই দেশে ফিরবেন দুই ভাই। যদিও সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি আদালত। বৃহস্পতিবার তাঁদের আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি হবে। সেই শুনানির আগেই অবশ্য থাইল্যান্ড পুলিশের জালে দুই ভাই। বুধবার গভীর রাতে লুথরাদের পাসপোর্টও বাতিল করে দেয় বিদেশ মন্ত্রক।
তদন্ত চলাকালীন জানা গিয়েছে, গোয়ার নাইটক্লাবে আগুন লাগার পর একঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে দুই ভাই থাইল্যান্ডের টিকিট কাটেন। যখন দমকল আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে ততক্ষণে দুই ভাই ফুকেটে গা ঢাকা দিয়েছেন। যদিও আইনজীবীদের দাবি, আগে থেকেই থাইল্যান্ড সফরের পরিকল্পনা ছিল দুই ভাইয়ের। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, দুই ভাই যেসময়ে দেশ ছাড়েন তখন হাজারে হাজারে উড়ান বাতিল করছে ইন্ডিগো। সেই ইন্ডিগোর বিমানেই কী করে থাইল্যান্ড পাড়ি দিলেন গৌরব এবং সৌরভ?
উল্লেখ্য, উত্তর গোয়ার আরপোরায় বাগা সুমদ্র সৈকতের কাছে অবস্থিত জনপ্রিয় নৈশক্লাবটিতে শনিবার পার্টি চলাকালীন আগুন ধরে যায়। এখনও পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে অগ্নিদগ্ধ হয়ে। ঘটনার তদন্তে জানা গিয়েছে, এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে একাধিক অনিয়ম। বেআইনি নির্মাণ, সংকীর্ণ এবং অপর্যাপ্ত প্রবেশপথ-সহ ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠেছে ওই ক্লাবের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন উঠছে, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কীভাবে দিনের পর দিন এই নাইটক্লাব রমরমিয়ে চলল? কেন ক্লাবটির বিরুদ্ধে আগেই ব্যবস্থা করা যায়নি?
