স্টাফ রিপোর্টার: ট্রেনের মধ্যে শুধু হয়রানিই নয়, ল্যাপটপ-সহ ব্যাগপত্তর উধাও হয়ে যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশে ঢোকার পরই। মহাকুম্ভ যাত্রায় হয়রানি ঠেকাতে কোনওরকম পদক্ষেপ নিচ্ছে না রেল, এমনটাই যাত্রীদের অভিযোগ। এবার ট্রেনের মধ্যেই চরম হেনস্তার শিকার বাংলার নাট্যকর্মীরা।
দমদমের 'বিশ্বরূপম' দলের অভিনেতারা ভোপাল থেকে শিপ্রা এক্সপ্রেসে ফিরছিলেন। রিজার্ভ করা সিট থেকে তাদের টেনে নামিয়ে দেওয়া হয়। কলকাতায় ফিরে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন নাট্যকর্মীরা। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের আমন্ত্রণে ও নাট্যদল গিয়েছিল মধ্যপ্রদেশের ভোপালে। সেখান থেকে ফেরার সময় পাথুরিয়া স্টেশনে হেনস্তার শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ। যার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথায়, "গোটা ঘটনাটি অত্যন্ত খারাপ। বাংলার একটি নাট্যদলকে ট্রেনে যেভাবে হেনস্তা করা হয়েছে সেটা অত্যন্ত আপত্তিকর। আমরা গোটা ঘটনার খোঁজ নিচ্ছি। দমদমের বিধায়ক তথা শিক্ষামন্ত্রী নাট্যকার ব্রাত্য বসুও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তিনিও সবটা খোঁজ নিচ্ছেন।"
নাট্যকর্মীরা জানাচ্ছেন, এসি কামরার ভিতরে ঢুকে পড়েছিল দুষ্কৃতীরা। তাদের হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়, ল্যাপটপ-সহ বেশ কয়েকটি ব্যাগ উধাও হয়ে যায়। তারা জানিয়েছেন, ভোপাল থেকে রিজার্ভ করা এসি কামরায় উঠেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, আচমকা ট্রেনে উঠে পড়ে একদল লোক। ওই দুষ্কৃতীরা কামরা দখল করার চেষ্টা করে। বাধা দিতে গেলে মারধর করা হয়, এমনকী ট্রেনের মধ্যে মহিলাদের হাত ধরে রীতিমতো টানাটানি করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। সাহায্যের জন্য আরপিএফ-কে ডাকলেও কোনও লাভ হয়নি। নাট্যকর্মী, বিশেষত মহিলারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাঁদের দাবি, ভয় পেয়ে রেলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। টুইট করেছিলেন, ফোনও করেছিলেন, কিন্তু কোনও সাহায্য তাঁরা পাননি। বরং সমঝোতা করার কথা বলে ফোন ছেড়ে দেওয়া হয়। কোনওক্রমে শেষে হাওড়ায় পৌঁছেছেন ওই নাট্যকর্মীরা।
জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত বলেন, পূর্ব রেল হাওড়া, মালদহ ও ভাগলপুর থেকে ৪৭ জোড়া কুম্ভের বিশেষ ট্রেন চালাচ্ছে। সমস্ত ভারত থেকে ৩৪০০টি বিশেষ কুম্ভের ট্রেন চলছে। পাশপাশি ১০,০২৮টি ট্রেন প্রয়াগরাজ হয়ে নিয়মিত চলছে। এত সংখ্যক ট্রেন চালিয়েও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হচ্ছে না বলে পূর্ব রেলের একটি সূত্রের মত। এদিকে ১২ ফেব্রুয়ারি পূর্ণিমার শাহি স্নানেও ভিড় উপচে পড়ছে ট্রেনগুলিতে। সোমবার হাওড়া থেকে প্রয়াগরাজগামী ট্রেনগুলিতে এতটাই ভিড় হয় যে, তার সামাল দিতে গিয়ে নাজেহাল হন আরপিএফ ও জিআরপি কর্মীরা। বহু পুণ্যার্থী সাধারণ টিকিট কেটেই এসিতে চড়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ, কোনওরকম পদক্ষেপ করছে না রেল।
