shono
Advertisement
Major Mohit Sharma

ছদ্মবেশে ডেরায় ঢুকে বন্ধুত্ব পাতিয়ে দুই হিজবুল জঙ্গিকে খতম! চর্চায় 'ধুরন্ধর' সেই মেজর মোহিত শর্মা

Dhruandhar: পরিচালক আদিত্য ধরের 'ধুরন্ধর' ছবি নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই চর্চায় ভারতের বীর সেনা মেজর মোহিত শর্মার সেই গোপন অভিযান।
Published By: Monishankar ChoudhuryPosted: 03:52 PM Dec 10, 2025Updated: 04:04 PM Dec 10, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছদ্মবেশে ঢুকে পড়েছিলেন হিজবুল মুজাহিদিনের ডেরায়। বন্ধুত্বও পাতিয়েছিলেন দুই জঙ্গির সঙ্গে। তারপর সুযোগ বুঝে তাদের গুলি করে হত্যা! পরিচালক আদিত্য ধরের 'ধুরন্ধর' ছবি নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই চর্চায় ভারতের বীর সেনা মেজর মোহিত শর্মার (Major Mohit Sharma) সেই গোপন অভিযান।

Advertisement

গত ৫ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে 'ধুরন্ধর'। কিন্তু বিতর্ক এখনও অব্যাহত। ঝলকমুক্তির পর থেকেই হিংসার দৃশ্য নিয়ে আলোচনা শুরু হয় বিভিন্ন মহলে। পরে বিতর্কের জন্ম হয় ছবির বিষয়বস্তু নিয়েও। অভিযোগ ওঠে, ছবিটি মেজর মোহিত শর্মার জীবনের উপর তৈরি। এই অভিযোগ তুলে দিল্লি হাইকোর্টেরও দ্বারস্থ হয় শর্মা পরিবার। যদিও উচ্চ আদালত ছবিমুক্তিতে স্থগিতাদেশ দেয়নি। ফলে শেষমেশ ছবিটি মুক্তি পায়। বিতর্কের আবহে পরিচালক আদিত্য স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছিলেন, ছবিটি মোটেই মেজরের জীবন থেকে 'উদ্বুদ্ধ' নয়। তাঁর সংযোজন, "আমরা ভবিষ্যতে যদি ওঁর বায়োপিক তৈরি করি, ওঁর পরিবারের অনুমতি নিয়ে করব। এমন ভাবে তৈরি করব যাতে ওঁর ত্যাগকে সম্মান জানানো যায়।"

১৯৭৮ সালের ১৩ জানুয়ারি হরিয়ানার রোহতকে একটি হিন্দু পরিবারে মোহিতের (Major Mohit Sharma) জন্ম। যদিও তাঁর পৈতৃক বাড়ি উত্তরপ্রদেশের মেরঠ জেলার রসনা গ্রামে। মোহিতের বাবা রাজেন্দ্রপ্রসাদ শর্মা এবং মা সুশীলা শর্মা। শর্মা পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন মোহিত। ডাকনাম ছিল চিন্টু। ১৯৯৫ সালে গাজ়িয়াবাদের একটি বেসরকারি স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়াশোনা শেষ করে ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি বা এনডিএ-র পরীক্ষা দেন মোহিত। পাশাপাশি, মহারাষ্ট্রের শেগাঁওয়ের শ্রী সন্ত গজানন মহারাজ কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এও ভর্তি হন। কলেজে পড়তে পড়তেই এনডিএ-তে যোগদানের ডাক পান। এককথায় ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে স্বপ্নপূরণের জন্য এনডিএ-তে যোগ দিয়েছিলেন মোহিত। প্রশিক্ষণের সময় তিনি সাঁতার, বক্সিং এবং ঘোড়সওয়ারিতে দক্ষতা প্রমাণ করেন। এনডিএ-র বন্ধুরা তাঁকে ডাকতেন মাইক নামে। প্রশিক্ষণ শেষে ১৯৯৮ সালে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমি (আইএমএ)-তে যোগ দেন মোহিত। সেখানে তিনি ‘ব্যাটালিয়ন ক্যাডেট অ্যাডজুট্যান্ট’ নিযুক্ত হন। রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি কেআর নারায়ণনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন মোহিত। মোহিতের প্রথম পোস্টিং ছিল হায়দরাবাদে পঞ্চম ব্যাটালিয়ন দ্য মাদ্রাজ রেজিমেন্টে। তারপর জম্মু-কাশ্মীরে ৩৮ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসে যোগ। পরে প্যারা কমান্ডো হিসাবে যোগ দেন ১ প্যারা এসএফে।

শোনা যায়, ২০০৪ সালে হিজবুল মুজাহিদিনের দুই জঙ্গিকে খতম করে সেনা মহলে চর্চিত হয়ে ওঠেন মেজর মোহিত শর্মা। দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ানে ইফতিকার ভট্ট নাম ভাঁড়িয়ে আবু তোরারা এবং আবু সাবজার নামে ওই দুই জঙ্গির সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করেছিলেন তিনি। জঙ্গিদের আস্থা অর্জন করতে গল্পও ফেঁদেছিলেন। জঙ্গিদের বলেছিলেন, তাঁর ভাইকে ভারতীয় সেনা খুন করেছে। তিনি তার বদলা নিতে চান। মেজর মোহিতের সেই কথায় বিশ্বাসও করেছিলেন জঙ্গিরা। এর পরেই ভারতীয় সেনার উপর হামলার ছক কষা হয়। আনানো হয় বন্দুক-গ্রেনেডও। এ সবের মধ্যেই সুযোগ বুঝে তোরারা এবং সাবজারকে গুলি করে হত্যা করেন মেজর মোহিত শর্মা। ওই ঘটনার পাঁচ বছর পর জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়ারায় একটি জঙ্গিদমন অভিযানে গিয়ে শহিদ হন তিনি। তবে মৃত্যুর আগে চার জঙ্গিকে নিকেশ করেছিলেন মোহিত। দুই সতীর্থকেও উদ্ধার করেছিলেন। মৃত্যুর পর মোহিতকে মরণোত্তর অশোক চক্রে ভূষিত করা হয়।

হিজবুলের দুই জঙ্গিকে নিকেশ করার পর ২০০৫ সালের ১১ ডিসেম্বর মেজর হিসাবে পদোন্নতি হয় মোহিতের। শোনা যায়, ২০০৮ সালে কাশ্মীরে কর্মরত থাকার সময় পাকিস্তানে ঢুকে বেশ কিছু গোপন অভিযান পরিচালনা করেছিলেন তিনি। সীমান্তের ওপারে তিনি ‘ইকবাল’ নামে গোপনে কাজ করতেন বলেও দাবি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • গত ৫ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে 'ধুরন্ধর'।
  • কিন্তু বিতর্ক এখনও অব্যাহত।
  • পরিচালক আদিত্য ধরের 'ধুরন্ধর' ছবি নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই চর্চায় ভারতের বীর সেনা মেজর মোহিত শর্মার সেই গোপন অভিযান।
Advertisement