সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আবহে সংসদের বাদল অধিবেশন (Monsoon session of Parliament)। তার ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগেই ‘পেগাসাস প্রজেক্ট’ অর্থাৎ দেশের মন্ত্রী, নেতা, বিচারপতি-সহ প্রায় শ তিনেক হাইপ্রোফাইল ব্যক্তির ফোনে ‘আড়ি পাতা’ কাণ্ডে উত্তপ্ত দেশ। সংসদের অধিবেশনে এই বিষয়টি বড়সড় ঝড় তুলতে পারে বলে আশঙ্কা। তার আঁচ হয়ত টের পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও (PM Narendra Modi)। তাই সকালে সংসদে প্রবেশের আগে বার্তা দিতে গিয়ে তাঁর আবেদন, ”সরকার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে তৈরি। কিন্তু সংসদ কক্ষের শান্তি বজায় রেখে সরকারে সেই উত্তর দিতে দিন।” সংসদের বাইরেও দলনেতাদের সঙ্গে নানা আলোচনা চান বলেও জানালেন তিনি। জোর দিলেন সাংসদদের টিকাকরণের উপর। বললেন, ”বাহুতে টিকা নিলেই করোনার বিরুদ্ধে বাহুবলী হয়ে ওঠা যাবে।”
বাদল অধিবেশন একাধিক ইস্যুতে তোলপাড় হওয়ার আশঙ্কা ছিলই। বিশেষত পেট্রোপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তৃণমূল (TMC) যে বিরোধিতার কৌশল নিয়েছে, তাতে অশান্তি হতে পারে, এমন আঁচ পাওয়া গিয়েছিল। হলও তাই। সোমবার সাইকেলে চড়ে সাউথ অ্যাভিনিউ থেকে সংসদ ভবনের দিকে যাওয়ার পথে তৃণমূল সাংসদদের (MP) ব্যারিকেড করে আটকানো হল। তাঁদের সাইকেলের সামনে প্রতিবাদমূলক পোস্টার লাগানো ছিল। বৃষ্টিভেজা দিল্লিতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও ব্রায়েন, শান্তনু সেনদের পথ আটকাতে দেখে প্রতিবাদও করলেন তাঁরা। সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ”এটা মোদি-অমিত শাহদের স্বৈরাচারী মনোভাবের পরিচয়। পেট্রল, ডিজেলের দাম এত বেড়েছে। আমরা তার প্রতিবাদে সাইকেল নিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তাতেও বাধা। কোনও প্রতিবাদই সহ্য করছে না কেন্দ্রের সরকার।”
এদিকে, পেগাসাস ইস্যুর আঁচ ইতিমধ্যেই পড়েছে সংসদে। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধী সাংসদরা ফোনে আড়ি পাতা কাণ্ডে আলোচনা চেয়ে নোটিস দিয়েছে। সংসদের দুই কক্ষে আলোচনার দাবিতে শামিল সিপিএম, সিপিআই, আপও। এই পদক্ষেপ গ্রহণের আগে অবশ্য সকালে কংগ্রেস সংসদীয় দল বৈঠক সেরেছে বর্ষীয়ান সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গের নেতৃত্বে। এছাড়া লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরীও জানিয়েছেন, ”বিষয়টি জাতীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে বড় ঝুঁকির। আমি সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করে জবাব চাইব।” ফলে করোনা ভ্যাকসিন বণ্টন নীতি, পেট্রোপণ্যের দামবৃদ্ধির মতো জনজীবনে প্রভাব ফেলার মতো জরুরি ইস্যু ছাড়াও সংসদের বাদল অধিবেশন তোলপাড় করতে পারে ‘পেগাসাস’ প্রসঙ্গ (Pegasus spying)।