সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেটিএম-র প্রতিষ্ঠাতা বিজয়শেখর শর্মার গোপন নথি প্রকাশের হুমকি দিয়ে দিন কয়েক আগেই গ্রেপ্তার হয়েছেন আপ্ত সহায়িকা সোনিয়া ধাওয়ান। অভিযোগ, আরও দুই সঙ্গীর সঙ্গে জোট বেঁধেই মালিকের থেকে ২০ কোটি টাকা দাবি করেন তিনি। এদিকে ধৃতার পরিবারের সদস্যদের দাবি, যদি গোপনতথ্য ফাঁসের ভয় দেখিয়ে মালিকের থেকে টাকা আদায়ের পরিকল্পনা থাকতো, তাহলে ২০ নয় ২০০কোটি টাকা চাইতেন আপ্ত সহায়িকা। কেননা মালিকের আপ্ত সহায়িকা হয়েই তাঁর মাসিক বেতন ছিল ছয় লক্ষেরও উপরে। এই মুহূর্তে ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে সোনিয়ার। তাই ২০ কোটি টাকার জন্য নিজেকে বিপদে ফেলার কোনও কারণ নেই।
এদিকে পেটিএম-র প্রতিষ্ঠাতার আপ্ত সহায়িকার বেতনের অঙ্ক দেখে অনেকেরই চোখ কপালে উঠেছে। ১৫ হাজার টাকা বেতনে কাজ শুরু করেছিলেন সোনিয়া ধাওয়ান। সেই তাঁরই কিনা মাসিক বেতন ছ’লক্ষেরও বেশি। কী এমন করতেন সোনিয়া, যাঁর জন্য গত তিন বছরে তাঁর বেতন এক ধাক্কায় এত বেড়ে গেল? বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও সোনিয়ার বোন রুপালীর দাবি, যে মেয়ে কর্মক্ষেত্রকেই ধ্যানজ্ঞান করেছিলেন, সেই তিনিই কিনা বসকে ব্ল্যাকমেল করে টাকা কামাবেন। যাঁর কাছে অফিসই ধ্যানজ্ঞান ছিল, পরিবার নয়। কোনও জায়গায় মার্কেটিং করতে গিয়ে পেটিএম-র সুবিধা দেখতে না পেলে সোনিয়া নিজে অফিসে ফোন করতেন। কর্মচারীদের বলে সংশ্লিষ্ট দোকানে পেটিএম-র সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করে দিতেন। বিজয় শেখর শর্মার পরেই তাঁর নাম আসে। আর ২০ কোটি টাকার জন্য এভাবে নিজের সম্মানহানি করবে মেয়ে মানতেই নারাজ সোনিয়ার মা রমাদেবী। তিনি মেয়ে জামাই ও একমাত্র নাতির সঙ্গে নয়ডাতেই থাকেন। তথ্য ফাঁসের অভিযোগে জামাই মেয়ের গ্রেপ্তারির পর রীতিমতো ভেঙে পড়েছেন তিনি। মেয়ের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মানতেই চাইছেন না।
[বিমানবন্দরের মধ্যেই নেতার উপর হামলা, ভাইরাল ভিডিও]
বোন রূপালীর অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই কর্মক্ষেত্রে বঞ্চনার শিকার হচ্ছিলেন সোনিয়া। অন্যায়ভাবে তাঁকে চেপে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। দিনরাত পরিশ্রম করেও প্রমোশন হচ্ছিল অন্য সহকর্মীর। এনিয়ে মুখ খুলেছিলেন সোনিয়া। সেই অপরাধেই তাঁকে ব্ল্যাকমেলিংয়ের অভিযোগে ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার করা হল।
উল্লেখ্য, পেটিএম-এর প্রতিষ্ঠাতা বিজয় শেখর শর্মার যাবতীয় গোপন নথির খবর জানতেন এই প্রাক্তন আপ্ত সহায়িকা। এই অভিযোগেই গত সোমবার স্বামী-সহ সোনিয়া ও তাঁর এক সহকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদের মধ্যে সোনিয়া ধাওয়ান পেটিএমের জন্মলগ্ন থেকেই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আরেক অভিযুক্ত দেবেন্দ্র কুমারও দীর্ঘ ৭ বছর পেটিএমে চাকরি করেছেন। তাঁরা দু’জনে মিলে অনেক গোপন নথি চুরি করেছেন বলে জানা গিয়েছে। এবং সেই তথ্যগুলি নাকি অত্যন্ত সংবেদনশীল। যা ফাঁস হয়ে গেলে বিপাকে পড়তে পারে সংস্থা।