সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি নিজে কংগ্রেসের টিকিটে সাংসদ হয়েছেন, বিধায়ক হয়েছেন, তিনবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, রাজ্যসভাতেও গিয়েছেন। কিছুদিন আগে পর্যন্ত নিয়মিত বিজেপি-আরএসএসের দিকে কটাক্ষের তিরও ছুঁড়তেন। সেই দিগ্বিজয় সিং এখন আর কংগ্রেসের সংগঠনে আস্থা রাখতে পারছেন না। তাঁর মনে হচ্ছে, একজন সাধারণ কর্মী থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়া, যেটা নরেন্দ্র মোদি করেছেন, সেটা আরএসএসের মতো সংগঠনেই সম্ভব।
দিগ্বিজয় সদ্য এক্স হ্যান্ডেলে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবানীর পায়ের কাছে মাদুর পেতে বসে রয়েছেন। দিগ্বিজয় বলছেন, "এই ছবিটা খুব শক্তিশালী। কীভাবে আরএসএস তথা জনসংঘের একজন সাধারণ কর্মী নেতার পায়ের কাছে বসে থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তথা প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। এটাই সংগঠনের শক্তি।" তাৎপর্যপূর্ণভাবে কদিন আগে এই সোশ্যাল মিডিয়াতেই নিজের দল কংগ্রেসের সংগঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। সোজা রাহুল গান্ধীকে ট্যাগ করে বলে দিয়েছিলেন, সংগঠনের বিকেন্দ্রীকরণ দরকার। অথচ শীর্ষ নেতৃত্ব সেটা বুঝতেই পারছে না।
দিগ্বিজয়য়ের এই সংঘপ্রশংসা, স্বাভাবিকভাবেই লুফে নিয়েছে বিজেপি। বিজেপির এক মুখপাত্র বলছেন, "সত্যি প্রকাশ্যে এনে বোমা ফাটিয়েছেন দিগ্বিজয়। একমাত্র বিজেপিতেই যোগ্য সম্মান পান তৃণমূল স্তরের কর্মীরা। পরিবার সর্বস্ব কংগ্রেসে সেটা সম্ভব নয়।" বস্তুত দিগ্বিজয়ের এই পোস্টকে সরাসরি রাহুল গান্ধীর দিকে নিশানা বলে দাবি করছে গেরুয়া শিবির।
যদিও মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পরে নিজের মন্তব্যের পক্ষে সাফাই দিয়েছেন। তাঁর দাবি, তিনি শুধু আরএসএসের সংগঠনের প্রশংসা করেছেন। সংঘের নীতি বা আদর্শের নয়। আজন্ম তিনি আরএসএসের নীতি এবং আদর্শের বিরোধিতা করে এসেছেন, আগামীদিনেও তেমনটাই করবেন। কিন্তু জল্পনা তাতেও কমছে না। আসলে দিগ্বিজয় ইদানিং মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে বড্ড কোণঠাসা। গত বিধানসভা ও লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর মধ্যপ্রদেশে নেতৃত্ব বদলে তরুণ মুখেদের তুলে এনেছেন রাহুল গান্ধী। আর সেই তরুণদের ভিড়ে দিশেহারা দিগ্বিজয় সম্ভবত নিজের জন্য পুনর্বাসন খুঁজছেন।
