সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে বিতর্ক ও সমালোচনার চাপের মুখে রাজস্থানের জালোর জেলার গাজিপুর গ্রামে মহিলাদের স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হল। কিন্তু সেখান থেকে শিক্ষা না নিয়ে, উত্তর প্রদেশের বাগপত জেলার একটি খাপ পঞ্চায়েত 'পশ্চিমী প্রভাব' এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে কিশোর-কিশোরীদের জন্য স্মার্টফোন এবং ছেলে ও মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে হাফ প্যান্ট নিষিদ্ধ করার নির্দেশ জারি করেছে।
খাপ পঞ্চায়েতের নজর থেকে বাদ যায়নি বিয়ের অনুষ্ঠানও। বিয়ে সংক্রান্ত নির্দেশে, অতিথি তালিকা সীমাবদ্ধ করা এবং অতিরিক্ত ব্যয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, খাপ পঞ্চায়েতের এই সিদ্ধান্তগুলি সামাজিক সম্প্রীতি এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য করা হয়েছে।
বাগপতের খাপ পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্তে ১৮ থেকে ২০ বছরের কম বয়সী কিশোর-কিশোরীরা এবার থেকে স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবে না। পাশপাশি,ছেলে ও মেয়েদের হাফ প্যান্ট পরার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সেখানে আরও জানানো হয়েছে গ্রামে বা বাড়িতে বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে, কোনও বিশেষ হল বা অন্য জায়গায় অনুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে না। বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথি তালিকা সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। এছাড়াও, হোয়াটসঅ্যাপে আমন্ত্রণপত্র পাঠানোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে এই নির্দেশে।
বাগপতের খাপ পঞ্চায়েতের দাবি, উত্তরপ্রদেশজুড়ে অন্যান্য খাপ পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাজ্যজুড়ে এই ব্যবস্থা কার্যকর করতে চাইছে তাঁরা। পাশপাশি, রাজস্থানের পঞ্চায়েতে মহিলাদের স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকেও সমর্থন জানিয়েছে তাঁরা। তাঁরা জানিয়েছেন, 'সমাজের সিদ্ধান্তই সর্বোচ্চ। রাজস্থানে গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয়। আমরা ছেলেদের জন্য স্মার্টফোন এবং হাফ প্যান্ট নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনাও করছি। শিশুদের উচিত তাদের পরিবার এবং বয়স্কদের সঙ্গে বসে সঠিক শিক্ষা এবং সামাজিক শিক্ষা লাভ করা।' তাঁদের দাবি, ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সি ছেলেদের স্মার্টফোন দরকার নেই।
খাপের নেতা চৌধুরী ওমপাল সিংয়ের বক্তব্য, "মেয়েদের হাতে মোবাইল দিলে অনেক সময় খারাপ অভ্যাস তৈরি হয়। একই নিয়ম ছেলেদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ফোন বাড়িতেই রাখা উচিত।" বিয়ের প্রসঙ্গে তাঁর মত, গ্রামে বা বাড়িতে বিয়ে হলে সম্পর্কের মধ্যে সমস্যা কম হয়।
অন্যদিকে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, 'আমরা সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। নাবালকদের ফোন দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। স্কুলে মোবাইল ফোন ব্যবহার আলাদা, তবে বাড়িতে একে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী এবং উপযুক্ত।'
