সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাকুম্ভকে 'মৃত্যুকুম্ভ' বলে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে সমর্থন করেছেন শংকরাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। প্রকৃত ব্যবস্থাপনার করা হয়নি বলেই যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।
সংবাদসংস্থা ANI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "৩০০ কিলোমিটার লম্বা যানজট। এটা অব্যবস্থা নয় তো কী? পুণ্যার্থীদের জিনিসপত্র নিয়ে ২৫-৩০ কিলোমিটার হাঁটতে হয়েছে। পুণ্যস্নান ভেবে যেখানে ডুব দিয়েছেন পুণ্যার্থীরা সেখানে মিশেছে অপরিষ্কার জল। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এই জল স্নানের যোগ্যই নয়। অথচ সেখানেই কোটি কোটি মানুষকে স্নান করতে বাধ্য করা হচ্ছে। সুতরাং উচিত ছিল জল পরিশুদ্ধ করা। কারণ, ১২ বছর অন্তর মহাকুম্ভ হয়, তাহলে কেন আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হল না?"
তিনি আরও বলেন, "যখন জানা গেল বহু মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন অথচ জায়গা কম। সেক্ষেত্রে বিকল্প ভাবনাচিন্তা করা প্রয়োজন ছিল। অথচ কোনও পরিকল্পনা করা হল না। ১৪৪ বছরের মহাযোগ নিয়ে অতিরঞ্জিত প্রচার করা হচ্ছে। অথচ ভিড় সামাল দেওয়া, পুণ্যার্থীদের সাহায্যে কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। তার ফলে যখন পুণ্যার্থীদের প্রাণহানি হচ্ছে তখন তা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। সেটা আরও ঘৃণ্য অপরাধ। এই পরিস্থিতিতে যদি কেউ কোনও নাম বলে তার বিরোধিতা করব কীভাবে?"
উল্লেখ্য, প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। কখনও পদপিষ্ট হয়ে পুণ্যার্থীদের মৃত্যু হচ্ছে। কখনও আগুন লাগছে। কখনও আবার মহাকুম্ভের পথে ট্রেনে উঠতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। মহাকুম্ভে একের পর এক দুর্ঘটনা নিয়ে বিধানসভা থেকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “মহাকুম্ভের কথা বলে লাভ নেই। ওটা এখন মৃত্যুকুম্ভ হয়ে গিয়েছে।” তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর শোরগোল। তবে শংকরাচার্যের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, "শংকরাচার্যও ব্যবস্থাপনার সমালোচনা করেছেন। তাহলে বিজেপি, সুকান্ত বলুন যা বলছেন তিনি তা ভুল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে মহাকুম্ভের গরিমা নষ্ট হয়নি। অব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ওই কথা (মৃত্যুকুম্ভ) বলেছেন।" গঙ্গাসাগরকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরে কুণাল আরও বলেন, "আমরাও তো গঙ্গাসাগর করি। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী জলপথ পেরিয়ে আসেন। কই সেখানে এমন অঘটন তো ঘটে না।" গেরুয়া শিবির নিজেদের অবস্থানে অনড়। 'মৃত্যুকুম্ভ' বিতর্ককে হাতিয়ার করে ময়দানে নামছে তারা। বিজেপি পরিষদীয় দল আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার গোটা বিধানসভা জুড়ে মিছিল করবে। ওই মিছিল যাবে রাজভবনে। রাজ্যপাল বোসের কাছে অভিযোগ জানাবে গেরুয়া শিবির।