সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয়, এশীয়, কৃষ্ণাঙ্গদের কৃতিত্ব এখনও ঠিক উদারভাবে গ্রহণ করতে পারেন না শ্বেতাঙ্গরা। আমেরিকায় (US) সম্প্রতি বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণগুলিই তার জলজ্যান্ত উদাহরণ। তবু বিদেশের মাটিতে মেধার জোরে মাথা উঁচু করে পায়ের তলার মাটি শক্ত করে নেওয়া মানুষের সংখ্যাও কম নয়। সেই তালিকাটাই আরেকটু দীর্ঘ করে দিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত ছাত্রী অপ্সরা আইয়ার। হার্ভার্ড ল রিভিউয়ের (Harvard Law Review) প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। আর ভাঙলেন ১৩৬ বছরের রেকর্ড। তিনিই প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভুত মহিলা (Indian Origin Girl), যিনি এত বড় পদে বসলেন।
অপ্সরার এই কৃতিত্ব কেন এতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝা যাবে হার্ভার্ড ল রিভিউ সম্পর্কে জানলে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংক্রান্ত এক প্রকাশনা সংস্থা হার্ভার্ড ল রিভিউ। ১৮৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রকাশনায় মূলত ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবেদন বা গবেষণা প্রকাশিত হয়। তাঁরাই চালান প্রকাশনাটি। সেই ১৩৬ বছরের ল রিভিউর শীর্ষে ভারতীয় বংশোদ্ভুত অপ্সরা (Apsara Ayer)! তিনি ১৩৭ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। আর উচ্চাকাঙ্ক্ষী অপ্সরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরই লক্ষ্য স্থির করে নিয়েছেন। তাঁর কথায়, ”প্রতিবেদন নির্বাচন, সম্পাদনায় আরও বেশি ছাত্রছাত্রীর অংশগ্রহণ চাই। এবং অবশ্যই মানোন্নয়ন। এত বছরের একটা প্রকাশনার যে সুনাম, তা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে আমি কাজ করব।”
[আরও পড়ুন: কলকাতাবাসীর ডায়রিয়ার জন্য দায়ী মস্কোর পরজীবী এন্টামিবা! উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা]
অপ্সরা নিজে ইয়েল (Yale)বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। সেখান থেকে ২০১৬ সালে স্নাতক হন। অঙ্ক, অর্থনীতি ও স্প্যানিশ ছিল তাঁর বিষয়। ২০১৮ সালে, আইনের ছাত্রী হওয়ার আগে তিনি চাকরি করতেন। তারপর নিজের কেরিয়ার অন্যদিকে নিয়ে যান। কর্মস্থল থেকে টানা ছুটি নিয়ে আইনের প্রথম বর্ষের পড়াশোনা শেষ করেন অপ্সরা। তাঁর মতো ছাত্রী পেয়ে আনন্দিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা। অপ্সরা সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন মানবাধিকার নিয়ে। এখন হার্ভার্ড ল রিভিউতে মানবাধিকার নিয়ে তাঁর নেতৃত্বে অনেক ভাল প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে আশা সংশ্লিষ্ট মহলের।
[আরও পড়ুন: ‘ভারতের জাতীয় সংগীতের সময়ে দাঁড়ালে তবেই হিজাব পরব’, ইরানের মাটিতে দাবি শাটলারের]
প্রাক্তন ছাত্রী সম্পর্কে বলতে গিয়ে সেখানকার এক অধ্যাপকের বক্তব্য, প্রথম থেকেই ওর নিজস্ব মেধা, ভাবনা, ক্ষুরধার যুক্তি প্রয়োগ করে কথা বলা অনেককে মুগ্ধ করেছিল। ওর কথায় অনেকের অনেক কিছুই বদলে গিয়েছে। আমি আশা করি, অপ্সরা এভাবেই নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।” সকলের মুখেই এক কথা।