সঞ্জয় সেন: আইএসএলের ডার্বি হচ্ছে এবার আট বনাম এগারোর। অর্থাৎ লিগ টেবিলে এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan) ১০ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে আর এসসি ইস্টবেঙ্গল ১৩ ম্যাচে ন’পয়েন্ট নিয়ে সবচেয়ে নিচে অর্থাৎ একাদশে রয়েছে। টানা তিনটে ম্যাচ কোভিডের (Coronavirus) কারণে খেলেনি সবুজ-মেরুন। তার পর গত ম্যাচে খেলতে নেমে ড্র করে বসেছে। উলটোদিকে এসসি ইস্টবেঙ্গল কোচ বদলের পর কিছুটা হতাশা কাটিয়ে উঠেছিল। কিন্তু শেষ ম্যাচ হায়দরাবাদের বিপক্ষে চার গোলে হেরে বিশাল ধাক্কা খেয়ে বসেছে। পুরো দলের মানসিকতা গিয়ে ঠেকেছে তলানিতে। বিপর্যস্ত ও বিধ্বস্ত শিবির। তবু প্রশ্ন জাগে, এবার কী হবে? গত ডার্বির প্রতিচ্ছ্ববি কি ফের ভেসে উঠবে? নাকি প্রতিশোধের আগুন জ্বেলে এসসি ইস্টবেঙ্গল ছিন্নভিন্ন করে দেবে প্রতিপক্ষকে?
এটিকে মোহনবাগানকে সকলেই ফেভারিট ধরে নিয়েছেন। এমন কী কট্টর লাল-হলুদ সমর্থকরাও তাঁদের দলকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে নারাজ। খাতায়-কলমে অবশ্যই এগিয়ে সবুজ-মেরুন। এমনকী আইএসএলের (ISL 2021) ধারাবাহিকতা ধরলে অবশ্যই এগিয়ে রয় কৃষ্ণরা। তাহলে তো ধরেই নেওয়া যায় আজও জিতছে এটিকে মোহনবাগান। তবে আমি এই বিশ্বাসের ভিত শক্তপোক্ত করতে রাজি নই। অতীতে বহুবার দেখেছি, ভাঙাচোরা দলের বিরুদ্ধেও ফেভারিটের তকমা থাকা দল এই খেলায় বিপর্যস্ত হয়েছে। বিশ্লেষণের ধার হয়ে গিয়েছে ভোঁতা। এবার যে ভবিষ্যদ্বাণী মিলবে তাও বলছি না। তবে এসসি ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কে একটা কথা এখনই বলা যায়, শনিবার চাপমুক্ত হয়ে খেলতে নামছে। কারণ, প্রত্যাশাহীন দল। তাই সকলে খোলা মনে খেলতে পারবে। কিন্তু মনের মধ্যে থেকে যাওয়া একরাশ জ্বালা-ব্যাথাকে কি ভুলতে পারবে? ভুলতে পারবে রক্তস্রোতে মিশে থাকা এতদিনের বদলা নেওয়ার চিত্রনাট্যকে? পারবে না।
[আরও পড়ুন: উত্তাপ বাড়ছে শনিবাসরীয় ডার্বির, আক্রমণে এগিয়ে রয় কৃষ্ণরা]
গত ডার্বিতে নাস্তানাবুদ হয়েছিল। তাই ওদের কাছে আজকের দিনটা হবে হিসাব মেটানোর পালা। এটিকে মোহনবাগানের কাছে এই ম্যাচটা তাই কঠিন হলেও হতে পারে। প্রয়াত প্রখ্যাত কোচ প্রদীপ বন্দোপাধ্যায় প্রায় বলতেন, ‘মরতা কিয়া নেহি করতা’। সুতরাং মরার আগে কে বলতে পারে আর একবার জ্বলে উঠবে না? মরণ কামড় দেওয়ার চেষ্টা করবে না? যদি তা করতে পারে তাহলে গোয়ার মাটিতে এই ম্যাচ আলাদা একটা মাত্রা পেতে বাধ্য। এসসি ইস্টবেঙ্গল (SC East Bengal) কোচ মারিয়ো রিভেরা এই ম্যাচে তাঁর নতুন দুই বিদেশিকে সম্ভবত মাঠে নামাতে চলেছেন। দুই বিদেশি বলতে ব্রাজিলিয়ান মার্সেলো ও স্প্যানিশ সোতা। সোতা হলেন মিডফিল্ডার। ডার্বিসিচের জায়গায় তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছে। চিমার বদলে এসেছেন মার্সেলো। গত ম্যাচে হায়দরাবাদের বিপক্ষে মার্সেলোর জন্য পেনাল্টি পেয়েছিল লাল-হলুদ শিবির। যদিও গোল পায়নি। তাই এই দু’জনকে কীভাবে বা কোন সময়ে ব্যবহার করেন রিভেরা তাও দেখার বিষয় হয়ে থাকবে। অচেনারা সবসময় ধাঁধায় ফেলে দিতে ওস্তাদ হয়।
[আরও পড়ুন: লাল-হলুদে থাকাকালীন দুটো ডার্বিতেই জয়, পুরনো ম্যাচের ভিডিওই হাতিয়ার রিভেরার]
এটিকে মোহনবাগানের কথায় এলে প্রথমেই বলব, কোচ সম্পূর্ণ দলকে নিয়ে মাঠে নামছেন। সন্দেশের প্রত্যাবর্তন যেমন ঘটবে। অন্যদিকে সাসপেনশন কাটিয়ে আবার মাঠে ফিরছে হুগো বুমোস। তিরি, হুগো, কার্ল, রয়, উইলিয়ামসের মধ্যে কোচ ফেরান্দো বাছবে চারজনকে। তাই ফেরান্দোর কাছে বিদেশি বাছাই কঠিন কাজ। এই প্রথম দেশের ডার্বিতে রিজার্ভ বেঞ্চে তিনি বসবেন। তাই তাঁর কাছে ম্যাচটা হবে অবশ্যই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। ফলে বাড়তি চাপ তাঁর উপর থাকবেই।