সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শাশুড়ি হীরাবেন মোদির শেষকৃত্যে অংশ নিতে দেখা যায়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্ত্রী যশোদাবেনকে। সপ্তাহ পার করে তিনি নিজেই এ ব্যাপারে প্রশ্নের জবাব দিলেন। জানালেন, শাশুড়ির শেযকৃত্যে তাঁর যোগ দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। সেই মতো প্রস্তুতও হয়েছিলেন। কিন্তু গুজরাট পুলিশ তাঁকে ‘আটকে’ দিয়েছিল।
বিরাট পুলিশ বাহিনী সকাল-সকাল ঘিরে ফেলেছিল তাঁদের গোটা বাড়ি। যতক্ষণ না প্রধানমন্ত্রী মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করছেন, ততক্ষণ সপরিবার নিজের বাড়িতেই গৃহবন্দি ছিলেন তাঁরা। ভদোদরার একটি সংবাদমাধ্যমে যশোদাবেনের এই দাবি ঘিরে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য, ৩০ ডিসেম্বর ভোররাতে প্রয়াত হন হীরাবেন মোদি (Heeraben Modi)। সেদিন প্রধানমন্ত্রী মোদির কলকাতায় আসার কথা থাকলেও সফর বাতিল করে তিনি সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যে আমেদাবাদ পৌঁছে যান। তিনি সর্বক্ষণ পরিবারের সঙ্গেই ছিলেন। সকাল ১০টায় গান্ধীনগরে হীরাবেনের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। পরিবারের সকলে হীরাবেনের শেষকৃত্যে থাকলেও সেখানে দেখা যায়নি মোদির স্ত্রী যশোদাবেনকে। কেন শাশুড়ির শেষযাত্রায় দেখা যায়নি যশোদাবেনকে, সে নিয়ে রাজনৈতিক মহলে উঠেছিল গুঞ্জন। অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন মোদি-পত্নী। তবে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বা গুজরাট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
[আরও পড়ুন: ‘আমি ঈশ্বরের পত্নী’, দাবি করতেই যুবতীর চুল ধরে টেনে মন্দিরের বাইরে ফেললেন পুরোহিত]
শাশুড়ি হীরাবেনের প্রয়াণে শোকে ভেঙে পড়েছিলেন যশোদাবেন। একটি সংবাদমাধ্যমে সেদিন তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘দ্বিতীয়বার মাতৃহারা হলাম’। কিন্তু শেষবার চোখের দেখাটাও তিনি দেখতে পাননি শাশুড়িকে। ভদোদরার একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এই ব্যাপারে মুখ খুলেছেন যশোদাবেন এবং তাঁর ভাই অশোক মোদি। সেই ভিডিও শুক্রবার সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওর বিবরণ অনুযায়ী, ভাই অশোক মোদি ও ভাইপো-ভাইজিদের সঙ্গে নিয়ে গান্ধীনগর যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন যশোদাবেন। কিন্তু বাড়ির বাইরে পা রাখামাত্র তাঁদের ঘিরে ধরে বিরাট পুলিশ বাহিনী।
জানিয়ে দেওয়া হয়, গান্ধীনগর যেতে পারবেন না যশোদাবেন। পুলিশের বাধায় কান্নায় ভেঙে পড়েন যশোদা। প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, কারণ জানতে চাওয়া হলে পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, ‘উপর মহল’ থেকে নির্দেশ এসেছে, এর বেশি তাঁরা কিছু জানেন না। এরপর পুলিশের কাছে বহু অনুনয়-বিনয় করেন যশোদাবেন। কিন্তু তাতেও তাঁরা অনড়ই ছিলেন। প্রায় সারাদিন নিজের ঘরেই ‘নজরবন্দি’ ছিলেন যশোদাবেন। টিভিতেই শাশুড়ির অন্তিমযাত্রা দেখেন। যতক্ষণ না মোদি আমেদাবাদ ছাড়ছেন, ততক্ষণ গৃহবন্দি হয়ে থাকেন যশোদা ও তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা।
যশোদা জানান, স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব থাকলেও শাশুড়ি হীরাবেনের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল। হীরাবেন অসুস্থ থাকাকালীন প্রায়ই তাঁর স্বাস্থ্যের খবর নিতেন যশোদা। হীরাবেনের মৃত্যুর খবরে তিনি ভেঙে পড়েন। উল্লেখ্য, ১১ বছর বয়সে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিয়ে হয় যশোদাবেনের। পাঁচবছর পর তিনি সংসার শুরু করেন শ্বশুরবাড়ি এসে। কিন্তু তাঁদের দাম্পত্য টিকেছিল মাত্র ৩ মাস। এর পর মোদি সংসার ধর্ম ত্যাগ করেন।