স্টাফ রিপোর্টার: লক্ষ্মীবারেই বাঙালির নববর্ষ। এখন থেকে মিষ্টির দোকানে নববর্ষের অর্ডার আসতে শুরু হয়েছে। গতবছর নববর্ষে ঘরবন্দি থাকতে হয়েছিল বাঙালিকে। এ বছরও নববর্ষের মুখে করোনার প্রকোপ বেড়েছে। তবে ভোট থাকায় মনে বল পেয়েছেন মিষ্টি বিক্রেতারা। নতুন বছরে মিষ্টিমুখ করাতে প্রস্তুত মিষ্টির দোকানগুলো। ক্রেতা টানতে কেউ আবার ট্র্যাডিশনালের সঙ্গে ফিউশন মিষ্টিও রাখছে। কেউ আবার পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য দিয়ে ক্রেতাদের মন ভরাতে চাইছে।
পয়লা বৈশাখে মিষ্টির চাহিদা বেশি থাকে। মিষ্টি দিয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকে বাঙালি। এ বছর ভোটের আবহে নববর্ষ। ভোট থাকায় পয়লা বৈশাখের (Bengali New year) দিন মিষ্টির চাহিদা আরও বেশি থাকবে বলে মনে করছেন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। বউবাজারে নামকরা মিষ্টির দোকান ভীমচন্দ্র নাগ। সন্দেশের জন্য বিখ্যাত। ভীমচন্দ্র নাগের মিষ্টি খেয়ে কুক অ্যান্ড কেলভির বড়সাহেব মোহিত হয়ে একটি ঘড়ি উপহার দিয়েছিলেন। বাংলা হরফে লেখা সেই ঘড়ি এখনও বউবাজারের দোকানে রয়েছে। প্রায় তিনশো বছরের পুরনো এই মিষ্টির দোকান। ট্র্যাডিশনাল সন্দেশের সঙ্গে ফিউশন মিষ্টিও এখন রাখা হচ্ছে। তবে নববর্ষে ভীম নাগের ট্র্যাডিশনাল সন্দেশের চাহিদা বেশি থাকে।
[আরও পড়ুন: ‘চিংড়ি চিজ চুরমুর’ থেকে ‘কষা মাংস’, পয়লা বৈশাখে সব পাবেন ‘লর্ড অফ দ্য ড্রিঙ্কস’-এ]
পয়লা বৈশাখে ঐতিহ্যবাহী দিলখুশ, রোজ ক্রিম, আবার খাব, মনোহর প্যারাডাইস, বাদশা ভোগের চাহিদা থাকে। ভীমচন্দ্র নাগের কর্ণধার প্রদীপ নাগ বলেন, প্রায় ২৫ রকম মিষ্টি রয়েছে এখানে। এরমধ্যে ফিউশন মিষ্টিও রয়েছে। তবে ট্র্যাডিশনাল সন্দেশ এখানে মূল আকর্ষণ। নববর্ষের সময় সন্দেশের চাহিদা থাকে বলে আলাদা করে স্পেশ্যাল কোনও মিষ্টি বানানো হয় না। তিনি বলেন, “পয়লা বৈশাখে মিষ্টির চাহিদা থাকে। নববর্ষের জন্য অর্ডার আসতেও শুরু করেছে। তবে এবার ভোট থাকায় মিষ্টির চাহিদা আরও বেশি থাকবে বলে আশা করছি।”
ভীম নাগের পাশে রয়েছে নবকৃষ্ণ গুঁই। ছানার মুড়কি এবং রামবোঁদের জন্য বিখ্যাত এই মিষ্টির দোকান। পেস্তা ও ছানা দিয়ে তৈরি ‘নেহরু’ এখানকার সিগনেচার মিষ্টি। মতিলাল নেহরুকে নিজের হাতে এই মিষ্টি তৈরি করে খাইয়েছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ গুঁই। তারপর থেকে এটি নেহরু মিষ্টি নামে পরিচিত। এখানে দোল, নববর্ষ, রথ, পুজো, ভাইফোঁটায় স্পেশ্যাল আইটেম থাকে। দোলে ক্ষীর পোয়া এদের বিখ্যাত। নববর্ষের জন্য থাকে মন্ডা-মিঠাই। ছানার পাক দিয়ে এই মন্ডা তৈরি করা হয়। কাঁচাগোল্লার থেকে একটু শক্ত থাকে মন্ডা। সাদা বোঁদে দিয়ে তৈরি করা হয় মিঠাই। মন্ডা-মিঠাইয়ের দাম থাকে ১৫ টাকা। সুপ্রভাত গুঁই বলেন, প্রায় একশো বছর ধরে এই ট্র্যাডিশন চলে আসছে। বাঙালির প্রতিটি উৎসবের জন্য বিশেষ মিষ্টি রাখা হয়। নববর্ষে একশো বছর ধরে বাঙালিকে মন্ডা-মিঠাই খাওয়ানো হচ্ছে। পয়লা বৈশাখের এক সপ্তাহ আগে থেকে মন্ডা-মিঠাইয়ের জন্য ক্রেতারা অর্ডার দিয়ে রেখেছেন।
[আরও পড়ুন: রঙের উৎসবে রঙিন রেসিপি, আপনার জন্য পাত সাজিয়ে তৈরি কলকাতার এই রেস্তরাঁগুলি]
মিষ্টিপ্রিয় বাঙালির জন্য নতুন বছরে ইকো পার্কে (Eco Park) থাকছে বিশেষ আয়োজন। মিষ্টি হাবেও থাকছে নববর্ষ স্পেশ্যাল মিষ্টি। পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবীন পাল জানান, ইকো পার্ক মিষ্টি হাবে নববর্ষ উদযাপন করা হবে। মিষ্টি ব্যবসায়ীরা সেখানে নিজেদের স্পেশ্যাল মিষ্টি নিয়ে আসবেন। ফুড ব্লগাররা নিজেদের কাউন্টার দিতে পারবেন।