বিধান নস্কর, বিধাননগর: চার ঘণ্টার মধ্যে বাগুইআটি বিউটি পার্লার কর্মী খুন কাণ্ডের কিনারা করল পুলিশ। নিহত মহিলার ফেসবুক ফ্রেন্ডকে গ্রেপ্তার করেছে বাগুইআটি থানার পুলিশ। ওই যুবকের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে মহিলা খুন হন বলেই দাবি তদন্তকারীদের। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে ধৃত যুবক।
নিহত অভিষিক্তা দে, পেশায় বিউটি পার্লারের কর্মী ছিলেন। সাত বছর আগে বিয়ে হয় তাঁর। বছর তিনেকের পুত্রসন্তানও রয়েছে অভিষিক্তার। সম্প্রতি ওই মহিলার সন্তান তাঁর বাবার বাড়িতে রয়েছে। বাগুইআটিতে স্বামীর সঙ্গে থাকতেন মহিলা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ মহিলার স্বামী বাড়ি থেকে বেরন। তিনি জানান, সেই সময় স্ত্রী বাড়িতেই ছিলেন। সাড়ে এগারোটা নাগাদ স্ত্রীকে ফোন করেন তিনি। ফোন বেজে বেজে কেটে যায়। বেলা বারোটার পর থেকে দফায় দফায় স্ত্রীকে ফোন করেন। তবে কোনওবারই ফোন ধরেননি মহিলা। সন্ধেয় বাড়ি ফেরেন। দেখেন ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। কয়েকবার দরজা ধাক্কা দেন। তবে কোনও সাড়াশব্দ পাননি মহিলার স্বামী। বাধ্য হয়ে তাঁর কাছে থাকা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ঘরে ঢোকেন মহিলার স্বামী।
ঘরে ঢুকে কার্যত অবাক হয়ে যান মহিলার স্বামী। তিনি দেখেন ঘরের মধ্যে পড়ে রয়েছে মহিলার নিথর দেহ। তড়িঘড়ি পুলিশকে খবর দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বাগুইআটি থানার পুলিশ। মহিলার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠান। এদিকে, পুলিশের কাছে নিহত মহিলার ফেসবুক ফ্রেন্ড কৌশিক সাহার কথা বলেন তাঁর স্বামী। তার সঙ্গে কয়েকদিন ধরে সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে বলেও জানান। এরপর পুলিশ ওই বাড়ি লাগোয়া সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। তাতে কৌশিক সাহাকে দেখতে পান তদন্তকারীরা। তার সূত্র ধরে কৌশিকের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে নাগেরবাজারের মুড়াগাছা থেকে কৌশিককে পাকড়াও করে পুলিশ।
ডিসি বিধাননগর এয়ারপোর্ট জোন ঐশ্বর্য সাগর জানান, পুলিশের জেরায় খুনের কথা স্বীকার করে কৌশিক। সে জানায়, স্বামী বেরিয়ে যাওয়ার পর শুক্রবার সকালে ওই মহিলার বাড়িতে যায়। দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। কথা কাটাকাটির মাঝে মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। পুলিশ সূত্রে খবর, ৭-৮ মাস আগে মহিলার সঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় আলাপ হয় কৌশিক। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। দেখা সাক্ষাৎ করতে শুরু করে তারা। ৪-৫ মাস আগে কালীঘাটে বিয়েও করে তারা। এই খুনের ঘটনায় আর কেউ যুক্ত নেই বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। তবে ধৃতকে ১৪ দিনের হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।