সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আইএসএফ-বিজেপি (BJP) আঁতাঁতের অভিযোগে সুর আরও চড়াল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার শাসকদলের অভিযোগ, আইএসএফকে তুলে আনতে নির্বাচন কমিশনকেও প্রভাবিত করেছে বিজেপি। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) দাবি, কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়েছে বিজেপি। ভোটপর্ব মিটলেই যথাযথ সময়ে এই অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাবে শাসক শিবির।
রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election 2023) মনোনয়ন পর্ব মেটার পরই শুক্রবার রাতে রাজ্য রাজনীতিতে একপ্রকার বিস্ফোরণ হয়েছে। তৃণমূল মুখপাত্ররা আইএসএফ (ISF) বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি এবং বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইয়ের (Nityanda Rai) পিএ’র বিধানসভা ভোটের সময় হওয়া গোপন হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। দলের মুখপাত্রদের টুইট করা চ্যাটের স্ক্রিনশট রিটুইট করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Abhishek Banerjee)।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ, সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে কমিশন ও রাজ্য]
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের সময় হওয়া ওই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করে ভাঙড় থানার আইসি এবং সেকেন্ড অফিসারকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও নিত্যানন্দ রাইয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন নৌশাদ (Nawsad Siddique)। অভিষেক তাঁর টুইটে লেখেন, ‘‘এই চ্যাট থেকে প্রমাণিত যে বিজেপি নেতারা রাজ্যের ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের সময় নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করেছিল। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে? তৃণমূল বলছে, “ওই চ্যাটই প্রমাণ করে কিছু মানুষকে ভুল বোঝানোর জন্য আইএসএফ দলটি গঠিত হয়েছে এবং ব্যবহৃত হয়েছে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে আইএসএফ এবং আইএসএফের মাধ্যমে বামপন্থীদের অন্ধ তৃণমূল বিরোধী জোট হয়েছে।” শুধু তাই নয়, আইএসএফ এবং বিজেপির আঁতাঁতের আরও একটি ‘প্রমাণ’ এদিন পেশ করেছে তৃণমূল। দলের তরফে সাংবাদিক বৈঠকে আইএসএফ প্রতিষ্ঠাতা আব্বাস সিদ্দিকির একটি ছ’সেকেন্ডের ভিডিও-ও প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে আইএসএফের প্রতিষ্ঠাতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, “আমরা যারা বিজেপিকে পছন্দ করি তারা তৃণমূলকে ভোট দিয়ে কী করব?”
কুণাল ঘোষ বলছেন, “নৌশাদ সিদ্দিকি-কৈলাস বিজয়বর্গীয়র (Kailash Vijayvargiya) এই স্ক্রিনশট যদি সত্য হয়, তাহলে এটা প্রমাণিত যে আইএসএফকে সামনে রেখে নৌশাদ সিদ্দিকি-সহ কয়েকজন বিজেপির হাতে তামাক খাচ্ছে। আমরা এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে নওসাদের কোনও ব্যাখ্যা এখনও পাইনি। আমরা দাবি করছি অবিলম্বে বলুন, এই স্ক্রিনশট ঠিক না ভুল? ভুল হলে আপনি মানহানির মামলা করতে পারেন। ফৌজদারি মামলাও করতে পারেন।” পরক্ষণেই কুণালের হুঁশিয়ারি, “সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসও যথাসময়ে সুপ্রিম কোর্টে যাবে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকার সৌজন্যে বিজেপি কীভাবে নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করেছে তার প্রমাণ হচ্ছে পুলিশ আধিকারিকদের বদলির সুপারিশ যাচ্ছে নৌশাদ সিদ্দিকির মাধ্যমে। কীভাবে নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করেছিল বিজেপি আইএসএফকে প্রমোট করার জন্য। সেটা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টে যাবে।”
[আরও পড়ুন: অশান্তির অভিযোগ সত্ত্বেও পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন বিরোধীদের, কোন দলের ক’টি মনোনয়ন?]
যদিও তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠকের পরই একটি ভিডিও বিবৃতি প্রকাশ করে নৌশাদ দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আইএসএফ বিধায়কের বক্তব্য,”মানুষকে বিভ্রান্ত করতে আইএসএফের নামে গুজব ছড়াচ্ছে তৃণমূল। ভোট পর্বে আমি বিভ্রান্ত হবে না। ভোট মিটলে আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে আইনি পদক্ষেপ নেব।”