নব্যেন্দু হাজরা: বিষ্ণুপুরের মতিচুর লাড্ডু, সাদা বোঁদে, মালদহের রসকদম্ব, কানসাট, হুগলির জনাইয়ের মনোহরা, বহরমপুরের ছানাবড়া, কৃষ্ণনগরের সরপুরিয়া, নবদ্বীপের ক্ষীরদই। এমনই নাম-না-জানা, স্বাদ-না-পাওয়া মিষ্টিই এবার পাওয়া যাবে কলকাতায়। নোনাপুকুর ট্রামডিপোতেই তৈরি হচ্ছে মিষ্টি হাব। হারিয়ে যাওয়া মিষ্টি ফিরিয়ে আনতে সেখানে বিভিন্ন জেলার মিষ্টি পাওয়া যাবে সেখানে।
যে জেলার যে মিষ্টি বিখ্যাত, তা-ই মিলবে এই হাবে। সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী এ বিষয়টি নিয়ে মিষ্টি উদ্যোগ (মিষ্টি প্রস্তুতকারকদের সংগঠন) এবং কয়েকজন নামকরা মিষ্টি ব্যবসায়ীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ওই ট্রামডিপোতে এই হাব তৈরির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার নকশাও তৈরি করা হচ্ছে। ক্ষুদ্র-মাঝারি ও কুটিরশিল্প দপ্তরের তরফে পুরো পরিকাঠামো দেওয়া হবে। আপাতত ঠিক হয়েছে, ২০টি দোকান ওখানে হবে। সবক’টি দোকানই থাকবে বিভিন্ন জেলার মিষ্টির। পুরো কাচের হবে এই হাব।
রসগোল্লা, সন্দেশের বাইরেও যে নানা মিষ্টি হয়, এই শহরের মানুষের তা অনেকেরই অজানা। কলকাতায় বসে যেগুলোর স্বাদ খুব একটা পান না তাঁরা। তা খেতে গেলে সেই জেলায় যেতে হয়, নয়তো কাউকে দিয়ে আনাতে হয়। সবসময় তা হয়ে ওঠে না। এবার রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মিষ্টি হাব তৈরি হলে সেই আক্ষেপ মিটবে।
[আরও পড়ুন: বকেয়া DA-র দাবিতে মিছিলের অনুমতি দিল হাই কোর্ট, কড়া প্রশ্নের মুখে রাজ্য]
তবে নিউটাউনের মিষ্টি হাবে যে মিষ্টি পাওয়া যায়, তা এখানে পাওয়া যাবে না। রাজ্যের মুখ্যসচিব দিনকয়েক আগেই বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে ছিলেন একাধিক দপ্তরের আধিকারিক ও নামকরা কয়েকটি মিষ্টির দোকানের মালিকরা। ঠিক হয়েছে, এখানে যে দোকানগুলো তৈরি হবে তা ভাড়া নিতে হবে মালিকদের। তবে কত করে ভাড়া হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি।
নবান্নসূত্রে খবর, ওখানে কাজ শুরু করতে এখনও কিছু প্রক্রিয়া বাকি এবং জমি ট্রামের। সেখানে পরিকাঠামো তৈরি করবে ক্ষুদ্র শিল্প-মাঝারি দপ্তর। ফলে কিছু আইনি প্রক্রিয়া আছে। তবে প্রশাসনের কর্তারা জানান, এই মিষ্টি হাবের সঙ্গে রাজ্যের সম্মান জড়িয়ে আছে। তাই গুণগত মানের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ফুড সেফটির নিয়ম মেনেই তৈরি করতে হবে মিষ্টি। ওখানে থাকবে একটা টেস্টিং ল্যাবরেটরি, একটা প্যাকেজিং সেন্টার। ল্যাবরেটরিতে দুধ থেকে শুরু করে চিনি, সবেরই গুণগত মান দেখা হবে।
মিষ্টি উদ্যোগের সভাপতি ধীমান দাস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মিষ্টি হাব তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তাই এটার সঙ্গে আমাদের রাজ্যের সম্মান জড়িয়ে আছে। এখানকার মিষ্টির গুণগত মানের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। হরিয়ে যাওয়া মিষ্টিগুলোকে এখানে নিয়ে আসা হবে।’’ এই সংগঠনের সদস্য সৈকত পালের দোকান হাওড়ায়। তিনি বলেন, ‘‘এখানে মূলত বিভিন্ন জেলার বিখ্যাত মিষ্টিগুলো পাওয়া যাবে। ফলে শহরের মানুষও জেলার মিষ্টি কলকাতায় বসেই খেতে পারবেন।’’