HbA1c টেস্টেই ধরা পড়ে সুগারের নিখুঁত মাত্রা। কেন জরুরি এই পরীক্ষা? জানাচ্ছেন সেরাম অ্যানালিসিস সেন্টারের কর্ণধার সঞ্জীব আচার্য। শুনলেন পৌষালী দে কুণ্ডু।
ফাইনাল পরীক্ষার আগে কয়েকদিন বইয়ে মুখ গুঁজে ভাল ফলাফল করলেই কি কোনও পড়ুয়াকে মেধাবী বলা উচিত? না কি সারাবছর পড়াশোনা করে সাপ্তাহিক পরীক্ষায় ভাল নম্বর পাওয়া ছাত্রর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে? ব্লাড সুগার টেস্টের ক্ষেত্রে সাধারণ সুগার টেস্ট আর HbA1c সুগার টেস্টের মধ্যেও তুলনাটা ঠিক এরকম। যে সব ডায়াবেটিক রোগী অনিয়ম করেন, তাঁদের চিকিৎসার জন্য HbA1c আইডিয়াল।
টি-২০ সুগার টেস্ট
আপনি হয়তো সাধারণ ব্লাড সুগার টেস্টের দিন বা তার আগের দিন খাওয়াদাওয়া কন্ট্রোল করে, ঠিকমতো ওষুধ খেলেন বা ইনসুলিন নিলেন, তখন রিপোর্টে শুধুমাত্র সেই দিনের সুগার লেভেল দেখাবে। সে ক্ষেত্রে সুগার সারা সপ্তাহ ধরে যে লেভেলে থাকে তা কিন্তু ধরা পড়ে না। আর ওই তাৎক্ষণিক সময় কন্ট্রোল করে নেওয়া সুগারের রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকও রোগীর জন্য ওষুধের ডোজ ঠিক করে ফেলেন। তাতে কিন্তু মোটেও রোগীর লাভ হয় না।
[আরও পড়ুন: টানা বসে কাজ করায় বাড়ছে কোমরের যন্ত্রণা? অবশ্যই মেনে চলুন এসব পরামর্শ]
ফাঁকি মারলেই পড়বে ধরা
HbA1c গত তিন মাসের সুগারের গড় রিপোর্ট দেয়। এতে সারাক্ষণ রোগীর ব্লাড সুগার লেভেল কেমন থাকছে তা নিখুঁত ধরা পড়ে। রোগী নিয়মিত ওযুধ খাচ্ছেন কি না, ডাক্তারের পরামর্শমতো লাইফস্টাইলে পরিবর্তন এনেছেন কি না, শরীরচর্চা-হাঁটাহাঁটি করেও সুগার কন্ট্রোলে রাখার চেষ্টা করছেন কি না তা সব রিপোর্ট দেখেই ধরতে পারেন ডাক্তার। একইসঙ্গে রোগীর গড় সুগারের মাত্রা দেখে পরবর্তী সময়ের জন্য তার কোন ওষুধ কত ডোজের লাগবে তাও নির্ধারণ করতে পারেন চিকিৎসক।
এমনি সুগার টেস্টে রক্তে যে পরিমাণ সুগার রয়েছে তা ধরা পড়ে। গ্লাইসেটেড হিমোগ্লোবিন বা HbA1c রক্তে হিমোগ্লোবিনের ভিতরে বিটা ও আলফা চেনে ঢুকে সেখানে শর্করার মাত্রা চিহ্নিত করে। মনে রাখতে হবে, লোহিতকণিকার এই চেনে যে পরিমাণ শর্করা ঢুকে যায় তা কিন্তু ওষুধ বা ইনসুলিন দিয়ে কমানো যায় না। একটি লোহিতকণিকার আয়ু প্রায় ১২০ দিন। তার মানে আজ আমাদের শরীরে যে পরিমাণ শর্করা লোহিতকণিকায় ঢুকছে সেটি আগামী চার মাস আমাদের রক্তে থাকছে। তাই আজ কেউ HbA1c টেস্ট করে যদি দেখেন রেজাল্ট খারাপের দিকে, আর তারপর কন্ট্রোল শুরু করে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফের HbA1c টেস্ট করান তখনও কিন্তু পুরনো লোহিতকণিকাগুলি জীবিত থাকার জন্য রেজাল্ট খারাপই হবে। তাই তিন-চার মাস অন্তর এই টেস্ট করানোই উচিত। আপনি যেদিন থেকে সুগার কন্ট্রোলের নিয়ম মানা শুরু করবেন সেদিন থেকে তিন মাস পর আপনার লোহিতকণিকায় সুগারের পরিমাণ কমতে শুরু করবে।
অনেক রোগীকেই বলতে শোনা যায়, তাঁর সাধারণ সুগার টেস্টে সুগার লেভেল ১০০ আর HbA1c-র রিপোর্ট ৮.৫। এক্ষেত্রে বুঝতে হবে রোগীর এমনি টেস্টের আগে কিছু ভাবে কন্ট্রোল করে নিয়েছিলেন, তাই কম এসেছে। আর HbA1c থেকে স্পষ্ট হবে তিনি হাই ডায়াবেটিক পেশেন্ট।
[আরও পড়ুন: জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা থেকে আত্মহননের চেষ্টা? প্রিয়জনকে বাঁচান এসব উপায়ে]
চিনুন HbA1c
৬-এর কম : নর্মাল
৬-৭ : মোটামোটি কন্ট্রোল
৭-৮ : খারাপ কন্ট্রোল
৮-এর বেশি : খুব খারাপ
খরচ কি বেশি?
সাধারণ ব্লাড সুগার টেস্ট প্রতি মাসে করতে প্রায় ১০০ টাকা খরচ হয়। HbA1c তিন-চার মাস অন্তর করাতে হয়। খরচ পড়ে প্রায় ৪০০ টাকা। অর্থাৎ খরচ প্রায় একই।
The post সুগারে অনিয়ম করছেন? এই পরীক্ষা করা হলেই ধরা পড়বে ফাঁকি appeared first on Sangbad Pratidin.