shono
Advertisement

Breaking News

সেই ফুটফুটে শিশু আর নেই, মানতেই পারছে না তিলজলা, চোখের জলে ভাসছেন মা

ধৃত অলোক কুমারকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
Posted: 08:26 PM Mar 27, 2023Updated: 08:26 PM Mar 27, 2023

অর্ণব আইচ: ৩১ আগস্ট ২০১৫। দিনটার কথা মনে পড়লেই ডুকরে কেঁদে উঠছেন মা। প্রায় আট বছর আগে ওই দিনটায় যে কোল আলো করে এসেছিল মেয়ে। গত জন্মদিনেও কত মজা করেছিল মেয়েটি। কাটা হয়েছিল কেক। জ্বলে উঠেছিল সাতটি মোমবাতি। বন্ধু, পরিজন, প্রতিবেশীদের হাততালির শব্দে মুখর হয়ে উঠেছিল ঘর। মেয়েটি মা-বাবাকে বলেছিল, এই বছর আরও বড় করে যেন তার জন্মদিন পালন করা হয়। কেকটাও যেন মাপে আরেকটু বড় হয়। মা-বাবাকে তার মনোমত উপহার দিতে বলেছিল সে। এই দিনটার কথা মনে করিয়ে দিতেই শুধু মা নয়, কেঁদে ফেলছেন প্রতিবেশীরাও। প্রত্যেকের একটাই দাবি, “ফাঁসি চাই লোকটার।” অর্থাৎ অভিযুক্ত অলোক কুমারের তাদের মতে, যেভাবে খুন করেছে, তাতে এর কমে অন্য কোন শাস্তি পাওয়ার যোগ্য নয় সে।

Advertisement

তিলজলা শ্রীধর রায় রোডের বাসিন্দা ওই পরিবারটির দুই সন্তান। নির্যাতিতা ও নিহত নাবালিকার এক চার বছরের ভাইও রয়েছে। তিলজলা এলাকার একটি স্কুলে প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল ওই নাবালিকা। পড়াশোনায় খুব খারাপ ছিল না। এদিন স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষিকারা দেখা করতে আসেন নাবালিকার পরিবারের লোকেদের সঙ্গে। মা ও পরিবারের অন্যদের সঙ্গে কথা বলার পর চোখে জল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, স্বভাবে অত্যন্ত মিষ্টি ছিল মেয়েটি। সব প্রতিবেশীদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল তার। তাই প্রত্যেকেই তাকে ভালোবাসতেন। মেয়েটির মা জানান, মাঝেমধ্যেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে তাদের মেয়ে এদিক-ওদিক, প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে খেলাধুলাও করত। তারা কোনদিন মেয়েকে বারণ করেননি। তাই রবিবার সকালে যখন কিছুক্ষণের জন্য মেয়েকে দেখতে পাননি, তখন প্রথমে তারা কিছুই ভাবেননি বুঝতে পারেননি যে, কত বড় সর্বনাশ হয়ে গেছে মেয়ের।

[আরও পড়ুন: ‘সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করুন, দেশকে বাঁচান’, রাষ্ট্রপতিকে কাছে পেয়ে আরজি মমতার]

পরিবারের কয়েকজন সদস্যের দাবি, তারা যখন থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তখন কিছুটা দেরি করেছিল পুলিশ। যদি দেরি না করত, তাহলে হয়তো এত বড় ঘটনা ঘটত না। যদিও পুলিশের মতে, মেয়েটিকে অপহরণ করার এক ঘন্টার মধ্যেই তাকে খুন করা হয়। মা জানান, মেয়েকে বাড়ির কিছু-কিছু কাজ করতে দিতেন। তার মধ্যে একটি হচ্ছে বাইরে গিয়ে জঞ্জাল ফেলা। এ ছাড়াও ছোটখাটো কিছু কেনাকাটা করতেও বের হত মেয়ে। কিন্তু ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি যে, জঞ্জাল ফেলার সময় কেউ মেয়ের উপর নজর রাখছে। কারণ ওই পাড়ায় অনেক ছেলে ও মেয়েই আছে, তাদের কাউকে টার্গেট করেনি ওই যুবক। অভিযুক্ত অলোককুমারকে যে তারাও খুব ভালভাবে চিনতেন তা নয়। তবে পাড়ায় দেখেছেন। মায়ের দাবি, তার মেয়েকে অভিযুক্ত বস্তায় পোরার জন্য এমনভাবে দড়ি দিয়ে বাধে যে, তাতে তার সারা দেহে দাগের চিহ্ন রয়ে যায়। ছোট একটি বস্তার মধ্যে এমনভাবে তাকে ভরা হয় যে, ভেঙে যায় হাড়। এমনকি মায়ের দাবি, স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে মেয়ের কান ও মাথার কাছে আঘাত করা হয়। তাই মেয়ের দেহটি দেখার পর শিউরে উঠেছিলেন মা, অন্য প্রতিবেশী ও পরিজনরাও।

[আরও পড়ুন: DA আন্দোলনের মাঝেই সুখবর! রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ভাতা, পেনশন বৃদ্ধি নবান্নের]

এদিকে ধৃত অলোক কুমারকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। অন্যদিকে থানা ভাঙচুরের জন্য ধৃত ২ জনকে জামিন দিয়েছেন বিচারক।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement