নন্দন দত্ত, বীরভূম: সিবিআই হেফাজতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল বগটুইকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের (Lalan Sheikh)। রামপুরহাটের পথসাথীতে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পেই তার মৃত্যু হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ঘটনার তদন্তে নামছে জেলা পুলিশ। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করেছেন কুণাল ঘোষ।
২১ মার্চ বগটুই কাণ্ডের পর দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া ছিল লালন শেখ। পরিবারের তরফে বারবার দাবি করা হয়েছিল, ঘটনার দিন বাড়িতেই ছিল না লালন। ফলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তার কোনও যোগ নেই। তবে তদন্ত যত এগিয়েছে, ক্রমশ স্পষ্ট হয়েছে লালন যোগ। পরবর্তীতে গত ৩ ডিসেম্বর রাতে লালনকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, টাকা পয়সা ফুরিয়ে যাওয়ায় এলাকায় এসেছিল লালন। সেই সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই থেকে রামপুরহাটের পথসাথী অর্থাৎ সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পেই ছিল লালন। সেখানেই চলছিল জিজ্ঞাসাবাদ। সোমবার বিকেল ৪ টে নাগাদ প্রকাশ্যে আসে লালন শেখের মৃত্যুর খবর। পুলিশকে বিষয়টা জানায় সিবিআই। স্বাভাবিকভাবেই ঘটনাটি জানাজানি হতেই শোরগোল ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
লালনের দিদি জানিয়েছেন, দিন কয়েক আগে লালনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ওর গ্রামে। সেখানে নাকি ধৃত পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছিল, সিবিআই হেফাজতে প্রচন্ড মারধর করা হয়। মৃত্যুর আশঙ্কাও করেছিল লালন। সেটাই সত্যি হল। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। গোটা ঘটনার তদন্ত করবে জেলা পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ‘রোজ চরিত্রহনন হচ্ছে, আর কেউ মন্ত্রী হতে চাইবে না’, আদালতে দাঁড়িয়ে বললেন পার্থ]
এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই ইঙ্গিতে শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। বলেন, “বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ১২ তারিখে বড় কিছু করবে বলতে এটাকেই বলেননি তো? এত বড় ঘটনা! তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ একটা চরিত্র তার মৃত্যু ঘটল সিবিআই হেফাজতে। সিবিআইয়ে অনেক দক্ষ অফিসার আছেন। কিন্তু এটা কেন ঘটল? ” লালনকে মেরে ফেলা হয়নি তো? এই প্রশ্নও তোলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ সন্ধেয় বড়শাল গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ (Bhadu Sheikh) খুন হন। এরপর রাতে বগটুইতে একের পর এক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজেও খোদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নিহতদের পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন। তবে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে বর্তমানে বগটুই এবং ভাদু শেখ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেই সময় থেকেই লালন শেখের খোঁজ চালাচ্ছিল তদন্তকারীরা। কিন্তু হদিশ মিলছিল না তার। ৯ মাস পর সিবিআইয়ের জালে ধরা পড়েছিল লালন শেখ।