সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন। এবার পদত্যাগ করলেন মালদ্বীপের সেই দুই মন্ত্রী। খুব শীঘ্রই ভারত সফরে আসার কথা রয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর। তার আগেই ইস্তফা দিয়েছেন ওই দুই মন্ত্রী। 'চিনপন্থী' মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পর থেকে দিল্লি-মালে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে চিড় ধরে। তার মধ্যে আগুনে ঘি ঢালে সেই বিতর্কিত মন্তব্য। ভারত বিরোধীতার জেরে প্রবল ক্ষোভের মুখে পড়ে এখন অবস্থান বদল করেছেন মুইজ্জু। দিল্লির সঙ্গে বন্ধুত্ব পুনরায় মজবুত করতে উদ্যোগী তিনি।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরের পর থেকে তাল কাটে দিল্লি-মালের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের। সংঘাত তুঙ্গে ওঠে। মোদিকে নিয়ে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেন যুব, তথ্য ও শিল্প মন্ত্রকের দুই মন্ত্রী মালশা শরীফ এবং মরিয়ম শিউনা-সহ আর এক মন্ত্রী আবদুল্লাহ মাহজুম মজিদ। এমনকী ভারতের সমুদ্র সৈকতগুলো নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত বলেও কটাক্ষ করেন সেদেশের কয়েকজন নেতা। তার পরই নিন্দার ঝড় ওঠে। গোটা ভারত জুড়ে শুরু হয় ‘বয়কট মালদ্বীপ’। এর পরই প্রবল চাপে পড়ে ওই তিন জনকে সাসপেন্ড করে মুইজ্জু সরকার। রয়টার্স সূত্রে খবর, মঙ্গলবার মালশা ও মরিয়ম মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার সদম্ভ ঘোষণা ট্রাম্পের! ‘পুতিন গিলে খাবে আপনাকে’, খোঁচা কমলার]
আর এদিনই সাংবাদিক সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর কার্যালয়ের প্রধান মুখপাত্র হেনা ওয়ালিদ জানান, খুব শীঘ্রই ভারত সফরে যাবেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। তিনি বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। এনিয়ে আলোচনা চলছে। প্রসঙ্গত, গত ৯ জুন মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ভবনে উপস্থিত ছিলেন মুইজ্জু। খোশ মেজাজে দুই রাষ্ট্রনেতাকে কথা বলতে দেখা যায়। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, ক্ষমতায় এসেই দেশ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিলেন মুইজ্জু। মালদ্বীপের 'ইন্ডিয়া ফার্স্ট' নীতি থেকে সরে এসে ভারত বিরোধীতার সুর শোনা যায় তাঁর গলায়। এর মাঝে মোদিকে অপমান করায় মালদ্বীপের অনুদানে বড়সড় কাটছাঁট করে দেয় দিল্লি। তার উপর রেকর্ড হারে ভারতীয় পর্যটক কমে যাওয়ায় জোর ধাক্কা খেয়েছে সেদেশের অর্থনীতি। ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর ফল হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে মালদ্বীপ। এর ফলে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্রের অন্দরে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে এক অনুষ্ঠানে ভারতকে তাদের ‘ঘনিষ্ঠতম’ সঙ্গী বলে উল্লেখ করেছিলেন মুইজ্জু। বিশ্লেষকদের মতে, তৃতীয়বার মোদি সরকারের ক্ষমতায় আসায় দুদেশের সম্পর্ক ঠিক করে নিতে চাইছেন মুইজ্জু। যাতে আগামিদিনে জনগণের ক্ষোভে গদি হারাতে না হয় তাঁকে।