shono
Advertisement

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি যুদ্ধের পথে তৃণমূল!

সরকারি সূত্রে খবর, ভারতীর পথেই আরও কয়েকজন বদলি হওয়া অফিসার কমিশনের বদলির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন৷ The post নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি যুদ্ধের পথে তৃণমূল! appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 02:27 PM May 29, 2016Updated: 08:59 AM May 29, 2016

বিশেষ সংবাদদাতা: নির্বাচন মিটে গেলেও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ মিটছে না তৃণমূলের৷ কমিশন কি পশ্চিমবঙ্গের ভোটে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েছিল? এই বিতর্ক তুলে এবার জাতীয় স্তরে প্রচারে নামছে বাংলার শাসক দল৷ এমনকী, বেশ কিছু ঘটনা সামনে এনে আইনি যুদ্ধ করা যায় কি না, তা নিয়েও দলে আলোচনা শুরু হয়েছে৷ সমস্ত তথ্য একত্রিত করার জন্য দলের দুই সিনিয়র নেতা সুব্রত বক্সি ও মুকুল রায়কে নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এ ব্যাপারে খুব শীঘ্রই দলীয় তরফে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে পরবর্তী পদক্ষেপ ঘোষণা করা হবে৷

Advertisement

শুরু থেকে শেষ, এবারের ভোটে প্রবল সক্রিয়তা দেখা গিয়েছে নির্বাচন কমিশনের৷ সাত দফায় ভোট থেকে, ভিন রাজ্যের প্রচুর বাহিনী, অতীতের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছে৷ তৃণমূলের প্রশ্ন, এত আয়োজনের কী দরকার ছিল? রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ততটা কি খারাপ ছিল? তাহলে একটি বুথ কেন্দ্রেও পুনর্নির্বাচনের প্রয়োজন হয়নি কেন? সত্তরের উপর অফিসার বদলি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর অতিসক্রিয়তা, ভোটারদের উপর আক্রমণ, ক্লাব, মন্দির, বিয়েবাড়িতে তালা লাগিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা এই দু’মাসে ভোটকে কেন্দ্র করে ঘটেছে৷ এমনই তথ্য বিধায়কদের কাছ থেকে পেয়েই চলেছে নেতৃত্ব৷ তৃণমূলের আরও অভিযোগ, বিরোধীরা গুরুত্ব পেলেও তাঁদের কোনও বক্তব্য পাত্তা পায়নি৷ বরং একতরফাভাবে শাসক দল টার্গেট হয়েছে৷ বিরোধীরা এবার রেকর্ড অভিযোগ করেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে৷ পরে জানা গিয়েছে, তাদের ৫৭ হাজার অভিযোগের মধ্যে ৫৪ হাজারই ভুয়া৷ এমনকী, মুখ্যমন্ত্রীকে শোকজ করা হয়েছে যে ইস্যুতে সেই ঘোষণা আদর্শ আচরণবিধি জারির অনেক আগেই করা হয়েছিল৷ এক্ষেত্রেও অগ্র-পশ্চাত্‍ বিবেচনা হয়নি৷ কেন এমন হবে? যদি রাজনৈতিক দল ভুল করে তাহলে তা নিয়ে যেমন ব্যবস্থা নেওয়ার আইন রয়েছে, তাহলে কমিশন ভুল করলে তা ধরবে কে? বস্তুত, এই ইস্যুকে সামনে এনে কমিশনের বিরুদ্ধে জাতীয় স্তরে বিতর্ক নিয়ে যেতে চাইছে নেতৃত্ব৷

মুখ্যমন্ত্রী ইতিপূর্বেই সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় না তুললেও ‘দিল্লির রাজনৈতিক সন্ত্রাস’-এর অভিযোগ করেছেন৷ নির্বাচন সভাতেই তিনি এ নিয়ে সরব হন৷ শনিবার বিধায়ক হিসাবে শপথ নিতে বিধানসভায় গিয়েছিলেন মমতা৷ সেখানে দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন৷ তখনই অনেকেই নানা তথ্য তুলে ধরেন৷ ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠমহলে বলেন, “দিল্লি থেকে এসে যারা মস্তানি করে গেল তা মানা যায় না৷ কলকাতায় এমন ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল যে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভোট দিতেই আসেননি৷ তাহলে তৃণমূল প্রার্থীরা আরও বেশি ভোটে জিততেন৷” উল্লেখ্য, এর পরও এবার কলকাতায় ১১টি আসনই জিতেছে তৃণমূল৷

২১১ আসনে নজিরবিহীন জয়৷ ঐতিহাসিক রেড রোডে তারকাখচিত মঞ্চে শপথ৷ পুরনো ও নতুনদের সংমিশ্রণে মন্ত্রিসভা গঠন৷ এর পর আবার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া৷ মানুষের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিশ্রুতি৷ মুখ্যমন্ত্রীর আর পিছন ফিরে তাকানোর কিছু নেই৷ তাঁর বিচারে বিরোধীদের যোগ্য জবাব দিয়েছে রাজ্যের মানুষ৷ এমনভাবে হারিয়েছে সিপিএমকে যে তারা অস্তিত্বের সংকটের মুখে৷ পটভূমি এমন হলেও, তৃণমূল শিবির কিছুতেই ভুলতে পারছেন না নির্বাচনের সময় কীভাবে সমস্ত সিদ্ধান্ত তাদের বিরুদ্ধে গিয়েছে৷ তাই উৎসবের মধ্যেও কয়েকটি বিষয়ের হেস্তনেস্ত চান স্বয়ং মমতা৷ সেই প্রেক্ষিতেই দলের সিনিয়র নেতাদের সমস্ত অভিযোগ ফাইলবন্দি করার নির্দেশ দিয়েছেন৷ সব তথ্য সামনে এনে বিষয়টিকে জাতীয় বিতর্কের রূপ দিতে চান তিনি৷

এদিকে, কমিশনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মামলা করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ৷ তাঁকে নির্বাচন কমিশন ভোটের সময় বদলি করে৷ তখন অবশ্য তিনি নকশাল দমন এলাকায় একটি বিশেষ পদে ছিলেন৷ সেই পদ থেকেই আচমকা কমিশন তাঁকে অপসারিত করে৷ আচরণবিধি উঠতেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার পদে নিয়ে আসেন৷ কী কারণে তাঁকে ভোটের সময় বদলি করা হয়েছিল, তা জানতে চেয়েই কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি৷ সরকারি সূত্রে খবর, ভারতীর পথেই আরও কয়েকজন বদলি হওয়া অফিসার কমিশনের বদলির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন৷ আচরণবিধি উঠতেই অবশ্য কলকাতার নগরপাল-সহ অনেককেই নিজের পদে ফিরিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷

The post নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি যুদ্ধের পথে তৃণমূল! appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement