সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশঙ্কা সত্যি করে অবশেষে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে এল আমেরিকা। ভারতীয় সময়ে বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্তে ধাক্কা খেলেও, এমনটাই যে হতে চলেছে তা গত কয়েকদিনে একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, এখানে ভারত ও চিনের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা হয়। এই চুক্তি আমেরিকার পক্ষে প্রতিকূল। উল্লেখ্য, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে এই চুক্তি নিয়ে সহমত হয়েছিল ১৯০টিরও বেশি দেশ।
[ফিলিপিন্সের ম্যানিলায় বন্দুকবাজের হামলায় নিহত ৩৪]
প্যারিস চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় ভারত ও চিনের প্রসঙ্গ টেনে তীর্যক সুরে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের উন্নত দেশগুলি থেকে বিরাট অঙ্কের আর্থিক সাহায্য পাচ্ছে ভারত ও চিন। ওই চুক্তিতে থাকার জন্য বিশ্বে আমেরিকা হাসির খোরাক হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রেও এই চুক্তি ক্ষতিকারক। এর ফলে আমেরিকার কয়লাখনি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বাকিরা মুনাফা লুটছে। ভারত ও চিনের উপর সরাসরি আঙুল তুলে ট্রাম্প বলেন, এই চুক্তি অনুসারে, ভারত চুক্তির শর্ত পূরণের জন্য কয়েকশো কোটি ডলার পাবে। পাশাপাশি, ভারতের সঙ্গে চিন আগামী বছরগুলিতে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের সংখ্যা দ্বিগুণ করার সুযোগ পাবে। এর ফলে ভারত ও চিন আমেরিকার তুলনায় অনেক বেশি আর্থিক সুযোগ সুবিধা পাবে।
প্রসঙ্গত, আমেরিকার ওই ঘোষণার সময় ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও চিনের বৈঠক চলছিল। ওই ঘোষণার খবর সেখানে পৌঁছতেই তৈরি হয় হতাশার বাতাবরণ। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন অ্যান্ড এনার্জি’ কমিশনার মিগুয়েল আরিয়াস কানেতে বলেন, আমেরিকার প্যারিস চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় একটি বড় ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়েছে। এ বার সেই জায়গা বিশ্বের অন্য কোনও বড় দেশকে পূরণ করতে হবে। এক মার্কিন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁর মেয়ে ইভাঙ্কা।
[হিন্দু ঐতিহ্য ধরে রাখতে মন্দিরেও এবার পোশাক বিধি]
উল্লেখ্য, ওবামার সময় থেকে ইউরোপের সঙ্গে এই চুক্তির মাধ্যমে মজবুত সম্পর্ক ধরে রেখেছিল আমেরিকা। যার ফলে ওই মহাদেশে নিজের প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি চিন। তবে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে ইউরোপে প্রতিপত্তি বিস্তার করার সুযোগ পেয়ে গিয়েছে বেজিং বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞরা।