স্টাফ রিপোর্টার: রাজ্যের সমবায়গুলিকে আরও স্বচ্ছ ও সক্রিয় করতে বড় পদক্ষেপ নবান্নর। মঙ্গলবার জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করে মুখ্যসচিব জানিয়ে দিলেন, সমবায় সমিতিগুলিকে আরও শক্তিশালী করতে জেলাশাসকের নেতৃত্বে প্রতিটি জেলায় কমিটি তৈরি করা হবে। সমিতির অধীনে থাকা ব্যাংকগুলির লেনদেন বাড়ানো এবং সমিতির যাবতীয় তথ্য কম্পিউটার-বন্দি করার মতো লক্ষ্যপূরণে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে। যাতে কোর-ব্যাংকিং পরিষেবার সুবিধা পান সমবায় ব্যাংকের গ্রাহকরা।
এদিনের বৈঠকে সমবায় ও পঞ্চায়েত দপ্তর ছাড়াও ছিলেন স্বাস্থ্যদপ্তরের সচিবরা। সরকার গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণে প্রায় দুই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করতে চলেছে। গুণগত মান বজায় রেখে এপ্রিলের মধ্যে রাস্তাগুলির কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠী, নির্মল বাংলা প্রকল্পে শৌচালয় নির্মাণ, পেনশনের মতো বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। ঠিক হয়েছে, স্কুলের কাছাকাছি থাকা অঙ্গনওয়াড়িকে স্কুলের মধ্যে স্থানান্তরিত করা হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দ্রুত ক্রেডিট লিংকেজ করা হবে। কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো পিছিয়ে থাকা জেলাগুলোকে কাজের গতি বাড়িয়ে প্রকল্প শেষ করতে বলা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: খাদ্যমন্ত্রকের আশ্বাসে প্রথম দিনেই রেশন ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত, ২০ ফেব্রুয়ারি রাজভবন যাচ্ছেন ডিলাররা]
গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি সমবায় সমিতি। সমবায়ের অধীনে ব্যাংকও রয়েছে। যারা স্বনির্ভর গোষ্ঠী, মৎস্যজীবী, কৃষিজীবীদের সহজ শর্তে ঋণ দেয়। সম্প্রতি সমবায় সমিতিগুলির আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত হিসাব এবং অডিট রিপোর্ট চেয়ে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে অমিত শাহের (Amit Shah) সমবায় মন্ত্রক। চিঠিতে সমবায়ের যাবতীয় তথ্য কেন্দ্রীয় পোর্টালে নথিভুক্ত করার কথাও বলা হয়। সমবায় সমিতি এবং ব্যাংক নিয়ে বিরোধী দলনেতা নয়াদিল্লিতে নালিশ ঠুকেছিলেন। তার প্রেক্ষিতেই নবান্নে এই চিঠি এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, বাংলায় সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। গ্রামীণ এলাকা উন্নয়ন এবং কৃষিকাজ সচল রাখতে বড় ভূমিকা নেয় সমিতিগুলি।
আসলে ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেই সমবায় ব্যবস্থার পুনর্গঠনে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দপ্তর সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই রাজ্যজুড়ে ২,৬৩১টি কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট তৈরি করা হয়। সমবায় ক্ষেত্রে বাজেটও বাড়ানো হয়। এক লক্ষ পরিবারকে পশুপালন ক্ষেত্রে স্বনির্ভর করতে ১৮০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে সমবায় ব্যাংকগুলি। কিষান ক্রেডিট কার্ড, মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ডের সুবিধাও নিশ্চিত করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: বাংলা ও ত্রিপুরার পরিস্থিতি কী? লকেটের কাছে জানতে চাইলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী]
এদিনের বৈঠকেও স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের ঋণদানের ব্যাপারে সমবায়গুলিকে আরও অগ্রণী ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, ২ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে রাজ্যে। যার অর্ধেকটাই পূরণ হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিতে লেখা হচ্ছে সাফল্যের রূপকথা। যেগুলি একসূত্রে গেঁথে উদাহরণ হিসাবে প্রকাশ্যে আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দ্রুত ক্রেডিট লিংকেজ করার পদক্ষেপও করা হয়েছে।