সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতি মাসে তাঁদের অ্যাকাউন্টে বেতন ঢোকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিক হিসাবে পান প্রচুর সুযোগ-সুবিধা। তাও লোভ কমে না! রাজ্যে আর্থিকভাবে দুর্বল ও বয়স্কদের জন্য বরাদ্দ পেনশনের টাকা চুরি করে নিজেদের পকেটে ঢোকানোর অভিযোগ রাজ্যের উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে।
প্রায় ৬২ লাখ সরকারি পেনশনভোক্তার টাকা নিজেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করার অভিযোগে বিদ্ধ কেরলের প্রায় ১৫০০ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন গেজেটেড অফিসার, কলেজের অধ্যাপক, হাই স্কুলের শিক্ষকরাও। কেরলে গরিবের পেনশন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই হইহই শুরু হয়ে গিয়েছে। কেরলের অর্থমন্ত্রী কে এন বালাগোপাল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারের শীর্ষকর্তাদের এই দুর্নীতি জানাজানি হতে অস্বস্তি বেড়েছে বাম সরকারের। যদিও মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এখনও এ প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি।
বয়স্ক ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ৬২ লক্ষ মানুষের জন্য প্রতি মাসে ১৬০০ টাকা পেনশন বরাদ্দ করেছে কেরল সরকার। সেই অর্থ পেনশনভোক্তারা ঠিকমতো পাচ্ছেন কি না তা নিয়ে একটি সমীক্ষা চালাচ্ছিল রাজ্য অর্থ দপ্তর। তখনই আর্থিক বেনিয়মের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। কেরলের অর্থমন্ত্রী বলেন, “কাদের অ্যাকাউন্টে পেনশনের টাকা ঢুকেছে সেগুলি চিহ্নিত করার কাজ চলছে। উদ্ধার হওয়া পেনশনের অর্থ প্রকৃত উপভোক্তারা যাতে সুদ সমেত পান তার জন্য ব্যবস্থা করা হবে।"
গরিবের পেনশন নিজের অ্যাকাউন্টে ঢোকানোর তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন হাই স্কুলের শিক্ষক আছেন, তিরুবনন্তপুরম ও পালাক্কাড়ের দু'টি কলেজের দু'জন অধ্যাপক। এছাড়া স্বাস্থ্য দপ্তরের উচ্চপদে কর্মরত ৩৭৩ জন ও জনশিক্ষা দপ্তরের ২২৪ জন পেনশন স্কিমের টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ। এছাড়া মেডিক্যাল শিক্ষা দপ্তরের ১২৪, আয়ুর্বেদ বিভাগের ১১৪, প্রাণিসম্পদ বিভাগের ৭৪ ও পিডব্লুডিতে কর্মরত ৪৭, প্রযুক্তি শিক্ষা বিভাগের ৪৬, হোমিওপ্যাথি বিভাগের ৪১, কৃষির ৩৫, শুল্ক দপ্তরের ৩৫, বিচারবিভাগের ৩৪ জন সরকারি আধিকারিকও গরিব মানুষের পেনশন প্রকল্পের টাকা নিজেদের পকেটে পুরেছেন। এছাড়াও আরও বেশ কিছু সরকারি দপ্তরের শীর্ষকর্তারা পেনশন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মীরা কী করে এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হলেন, এই চক্রের মাথা কে, আপাতত সেই উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত বিজয়ন সরকার। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইতিমধ্যেই ১০ হাজার সরকারি কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বাম সরকারের এই কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে বিরোধী দলগুলিও।