সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) কট্টর সমালোচক ক্রেমলিনের ‘শত্রু’ অ্যালেক্সেই নাভালনির (Alexei Navalny) মুক্তির দাবিতে ফের উত্তাল রাশিয়া (Russia)। আটক করা হয়েছে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি আন্দোলনকারীকে। শনিবারও দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল তারা। এরপর ফের রবিবারও একই ভাবে শুরু হয় জমায়েত। কনকনে ঠান্ডা কিংবা গ্রেপ্তারির ভয়কে অগ্রাহ্য করেই তারা পথে নামে। আন্দোলনকারীদের রুখতে কঠোর ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় পুলিশকে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে মস্কো-সহ অন্যান্য শহরে লকডাউন জারি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রধান সাতটি মেট্রো স্টেশনও। মস্কোর প্রাণকেন্দ্রে পথও আটকে দেওয়া হয়। শুরু হয় কড়া তল্লাশি। তুষারপাতের মধ্যেই রাস্তায় শয়ে শয়ে রায়ট পুলিশ মোতায়েন করা হয় আন্দোলনকারীদের আটকাতে। তবে এত কিছু করেও বিক্ষোভকে পুরোপুরি দমন করা যায়নি। মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ক্রমশ অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। উত্তর মস্কোর যে জেলে নাভালনি বন্দি হয়ে রয়েছেন, সেদিকেও মিছিল করতে দেখা যায় আন্দোলনকারীদের। তারা নাভালনির মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিল। আবার আরেক দলকে দেখা যায় পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে মাথার উপরে হাত তুলে ‘আমরা তোমাদের শত্রু নই’ স্লোগান দিতে।
[আরও পড়ুন: অস্বস্তি বাড়ল ট্রাম্পের! প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের হয়ে মামলা লড়তে নারাজ আইনজীবীরা]
আন্দোলন দমন করতে পুলিশ হাজার হাজার আন্দোলনকারীকে আটক করে। অন্তত ৪,৫৬৭ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়াও। স্বামীর মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আগে যাঁকে ইনস্টাগ্রামে লিখতে দেখা গিয়েছিল, ”আমরা চুপ করে থাকলে ওরা আগামিকালই আমাদের মধ্যে থেকেও কারও সঙ্গে এমন করতে পারে।”
৪৪ বছরের নাভালনিকে গত ১৭ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিনই তিনি জার্মানি থেকে দেশে ফিরেছিলেন। গত বছর তাঁকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই ষড়যন্ত্রের জন্য তিনি পুতিনকে দায়ী করেছিলেন। ক্রেমলিন এমন দাবিকে পত্রপাঠ উড়িয়ে দিয়েছিল। পরে গ্রেপ্তারির ভয়কে অগ্রাহ্য করেই তিনি মস্কোতে ফিরে আসেন। এরপরই তাঁকে জেলবন্দি করা হয়। তারপর থেকেই তাঁর মুক্তির দাবিতে শুরু হয়েছে আন্দোলন। প্রসঙ্গত, ২০২১-এ নোবেল শান্তি পুরস্কারের (Nobel Peace Prize) জন্য মনোনীত হয়েছেন নাভালনি।