সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউনুসের বাংলাদেশে শিল্পী-সাহিত্যিকদের উপর কট্টরপন্থীদের খাঁড়া নেমেছিল আগেই। এবার তাদের হামলায় কালিমালিপ্ত হল বিখ্যাত 'অমর একুশে' বইমেলাও! সোমবার ঢাকার বইমেলার একটি স্টলে 'বিতর্কিত' সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিনের বই রাখা হয়েছিল। অভিযোগ, সেখানেই হামলা চালায় একদল 'বিদ্রোহী ছাত্র'। ফতোয়া জারি হয়, ওই বইগুলি সরাতে হবে। তাতে প্রকাশক রাজি না হওয়ায় স্টল ভাঙচুর করা হয়। ভাইরাল সেই ভিডিও নিজের এক্স হ্যান্ডলে শেয়ার করে তীব্র নিন্দা করেছেন তসলিমা নিজেই। 'জেহাদি কার্যকলাপ' বলে উল্লেখ করে ইউনুস সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি।
এনিয়ে মঙ্গলবার সকালে বিবৃতি জারি করেছে ইউনুস সরকার। এধরনের হামলা বরদাস্ত নয়, বার্তা দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়ছেন দেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। তবে তা নিছকই লোক-দেখানো বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের একটা বড় অংশের।
হাসিনাহীন ঢাকায় এবার 'অমর একুশে' বইমেলার চিত্রই আলাদা। বইমেলা চত্বরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগে রাখা হয়েছে আবর্জনা ফেলার পাত্র, যার নাম দেওয়া হয়েছে 'হাসিনাবিন'। এই দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছেন অনেকেই। এমন নির্লজ্জ প্রতিবাদের প্রদর্শন কোনও সুরুচিসম্পন্ন সমাজের কাজ হতে পারে না বলে গর্জে উঠেছে সংস্কৃতি মহলের বৃহত্তর অংশ। এই নিয়ে যখন চারপাশে তর্কবিতর্ক, তখনই বইমেলায় বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত তসলিমা নাসরিনের সৃষ্টির উপর কোপ পড়ল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সোমবার বইমেলায় সব্যসাচী প্রকাশনীর ১২৮ নং স্টলে আচমকা হামলা চালায় একদল ছাত্র। এই প্রকাশনা সংস্থা থেতে তসলিমা নাসরিনের বই প্রকাশিত হয়েছে। তাই তা বিক্রির জন্য রাখা ছিল স্টলে। হামলাকারীদের আপত্তি সেখানেই। নিজেদের 'বিদ্রোহী' বলে পরিচয় দিয়ে তারা কার্যত ফতোয়া জারি করে, স্টলে তসলিমার কোনও বই রাখা চলবে না, তা সরাতে হবে। এরপর নিজেরাই সাহিত্যিকের সমস্ত বই ছুঁড়ে ফেলে। শুরু হয় ভাঙচুর। অশান্তির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে হামলাকারীদের বাধা দেয়। তবে তার আগে ক্ষতি যা হওয়ার হয়েই গিয়েছিল।
মঙ্গলবার সকালে এনিয়ে ইউনুস বিবৃতি দিয়ে জানান, ''এধরনের ঘটনা বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও উদারতার পরিপন্থী। দেশের ভাবাবেগের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। একুশে বইমেলা লেখক-পাঠকের সাক্ষাতের স্থল। সেখানে এমন হামলা নিন্দনীয়। যে কোনও মূল্যে এসব রুখতে হবে। পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের কড়া শাস্তি দেবে। বইমেলার নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হবে।''
