সুকুমার সরকার ঢাকা: বিজয় দিবসে নজিরবিহীন অশান্তি বাংলাদেশের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ক্যাম্পাসে পাকিস্তানের পতাকা এঁকে পদদলিত করতে চেয়ছিলেন পড়ুয়ারা। তাঁদের বাধা দেওয়ার অভিযোগে মাঝরাতে উপাচার্যকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল শাখা ছাত্রদল। সোমবার রাত ১টা নাগাদ অর্থাৎ বিজয় দিবসের ঠিক প্রাক্কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। তারা রাতভর উপাচার্যের গাড়ি অবরোধ করে রাখেন।
জানা গিয়েছে, বিজয় দিবস উপলক্ষে রাত ১টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে পাকিস্তানের পতাকা আঁকা শুরু করেন শাখা ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকারের কয়েকজন নেতা-কর্মী। তাঁরা ক্যাম্পাসের গেট দিয়ে শিক্ষার্থীদের বাস বেরতে বাধা দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় প্রথমে প্রোক্টরিয়াল বডির সদস্য ও কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে তাঁদের বাধা দেন। এনিয়ে পড়ুয়াদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বাগবিতণ্ডা, হাতাহাতি ও ধাওয়া পালটা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদি হাসান হিমেল ও সদস্য সচিব শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা রাতভর প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তাঁরা উপাচার্যের গাড়ি অবরোধ করে রাখেন। পরে ভোর ৫টার দিকে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা অবরোধ তুলে নিলে ক্যাম্পাস ছেড়ে যান উপাচার্য-সহ প্রোক্টরিয়াল বডির সদস্যরা।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ''জুলাইয়ের পর আমরা মনে করেছিলাম, ভিন্নমতকে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানের গণহত্যা ও আমাদের মা-বোনের উপর অত্যাচারের প্রতীকী প্রতিবাদের জন্য একজনের উপর বাংলাদেশবিরোধী কিছু দালাল হামলা করেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও স্বৈরাচার কিংবা মবতন্ত্র আত্মপ্রকাশ করতে পারবে না।''
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেলের কথায়, ''বিজয়ের মাসে প্রতীকী প্রতিবাদে পাকিস্তানের পতাকা আঁকতে গেলে প্রথমে প্রোক্টরিয়াল বডির দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে আস-সুন্নাহ হলের কিছু শিক্ষার্থী সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। এসময় সাংবাদিকদের ওপরও হামলা করা হয়। ১৯৭১ এর গণহত্যায় কিছু পাকিস্তানি সমর্থকরা সমর্থন জুগিয়েছিল। তাদের প্রেতাত্মারা এখনো বাংলাদেশে রয়েছে। পাকিস্তানকে হেয় করলে তাদের অন্তরে জ্বালা করে। সেই জায়গা থেকে পাকিস্তানি পতাকা এঁকে প্রতীকী প্রতিবাদে তারা বাধা দিয়েছে।''
