shono
Advertisement

নাইজেলদা আমাকে ইচ্ছে করে ফেলে দিয়েছিল: মানালি

একান্ত আলাপচারিতায় নাইজেল-মানালি ভাগ করে নিলেন ‘গোত্র’র অভিজ্ঞতা। The post নাইজেলদা আমাকে ইচ্ছে করে ফেলে দিয়েছিল: মানালি appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:13 PM Aug 22, 2019Updated: 08:14 PM Aug 22, 2019

আগামিকাল অর্থাৎ শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং নন্দিতা রায় পরিচালিত ‘গোত্র’। এই ছবি যে সমসাময়িক সমাজের এক জ্বলন্ত প্রতিচ্ছবি তুলে ধরবে, তাতে সন্দেহ নেই। সেই সুবাদে মুক্তির প্রাক্কালে জাতপাত, ধর্ম-গোত্র ভেদাভেদ থেকে ক্যামেরার নেপথ্যের দুষ্টু-মিষ্টি কেমিস্ট্রির ঝাঁপি খুললেন নাইজেল আক্কারা এবং মানালি মণীষা দে। শুনলেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ

Advertisement

ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন জুটি নাইজেল-মানালি। ক্যামেরার নেপথ্যে দুষ্টু-মিষ্টি কেমিস্ট্রির ব্যাপারে শুনব..

মানালি: প্রথম দিন আমার আর নাইজেলদা, কারও মধ্যে হাই-হ্যালোই হয়নি।

নাইজেল: কেননা, তুমি দেরি করে স্ক্রিপ্ট রিডিংয়ে ঢুকেছিলে।

মানালি: (হেসে) আমার শুটিং ছিল। কারণ আমি তো মেগা সিরিয়াল করি।

মানালি: শুটিং করতে গিয়ে আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে আমাদের। তা এখনও আছে। কোঅ্যাক্টর হিসেবে মানালি খুবই যত্নশীল, সাপোর্টিভ এবং স্পন্টেনিয়াস।

মানালি: নাইজেলদাকে দেখে যতটা শান্ত-গম্ভীর ভেবেছিলাম। ততটা নয়। কিন্তু ও যদি আমার বন্ধু না হত, আমার পক্ষেও ঝুমা পালের চরিত্রে অভিনয় করা কঠিন হয়ে উঠত।

নাইজেল: আর হ্যাঁ, মানালি প্রচণ্ড বদমায়েশি করে! এমনকী, সেটেও। (হেসে)

রিয়েল লাইফেও কী মানালি এরকমই চঞ্চল?

নাইজেল: একদমই তাই। আমিও সুযোগ ছাড়িনি ওর লেগ পুল করার। একটা মজার কথা বলি। একটা দৃশ্য আছে। যেখানে মানালিকে হাতে করে ধরেছিলাম। আর ও গাছ থেকে ফুল পারতে গিয়েছিল। সেখানে দেখা গিয়েছে মানালি ব্যালেন্স হারিয়ে উপর থেকে পড়ে গেল। কিন্তু ওটা আমি ইচ্ছে করেই ফেলে দিয়েছিলাম ওকে (হাসি)। 

মানালি: ওটা স্ক্রিপ্টে মোটেই ছিল না। কিন্তু এত স্বতঃস্ফুর্তভাবে ব্যাপারটা হয়েছিল যে, শিবুদা-নন্দিতাদি ওই দৃশ্যটা রেখে দেয়।

নাইজেল: অফস্ক্রিনেও ঝুমা-তারেকের একটা মিষ্টি সম্পর্ক। মিষ্টি রসায়ন।

[আরও পড়ুন: আজকের প্রেক্ষাপটে বড়পর্দায় শরৎচন্দ্রের ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’, মূল চরিত্রে ঋত্বিক চক্রবর্তী]

শিবুদা কতটা কড়া?

নাইজেল: স্ট্রিক্ট তো বটেই! কিন্তু স্বাধীনতাও দেয়। একটা আর্টিস্টের পক্ষে এর থেকে বেশি কমফর্ট জোন আর কি-ই বা হতে পারে। শুটের সময়ে হেসে-খেলে অনায়াসে কাজ বের করে নিতে পারে শিবুদা। আর দাদা ‘কাট’ বলল না মানেই আমরা ভয়ে জবুথবু হয়ে যেতাম।

মানালি: ইনফ্যাক্ট, শিবুদা ‘কাট’ শব্দটা উচ্চারণ করতও না। নন্দিতাদি যেমন ভাল শট দিলে এসে জড়িয়ে ধরত। কিন্তু শিবুদা কোনওরকম রিঅ্যাকশন দিত না। আমি আর নাইজেল চিন্তায় পড়ে যেতাম শিবুদার মুখের দিকে তাকিয়ে, যে আদৌ ঠিকঠাক শটটা দিতে পারলাম তো! আমরা জিজ্ঞেস করার সাহসও পেতাম না ওকে।

নাইজেল: নন্দিতাদি কমিউনিকেট করে। কিন্তু শিবুদা গম্ভীর থাকে। একমাত্র ঠিকঠাক এক্সপ্রেশন না পেলেই এসে ধরিয়ে দিত। শিবুদার এক্সপ্রেশন দেখলে এমনিতেই প্রেমে পড়ে যেতে ইচ্ছে করে। 

নাইজেল-মানালির কাছে ‘গোত্র’র অফার এল কীভাবে..

মানালি: হঠাৎই ফোন পেয়েছিলাম। মেগার কাজে ছিলাম তখন।

নাইজেল: নন্দিতাদি ফোন করে বলল বেটা একটা কাজ আছে। এই চরিত্রটা কিন্তু ‘মুক্তধারা’র ইউসুফ না। এর জন্য তোমায় অনেক কিছু শিখতে হবে। ১৫ দিন সময় রয়েছে।

‘গোত্র’র ইউএসপি কী?

নাইজেল: মানুষকে ভালবাসার জন্য কিংবা কাছে আসার জন্য কোনও ধর্ম বা গোত্রের দরকার নেই। এটা এখনকার সময়ের জন্য ভীষণ প্রাসঙ্গিক। সেটা এই গল্পতে কাজ করতে করতে আমাদের মনে হয়েছে। এই ছবিও সেটাই বলে। 

মানালি: একদমই। শিবুদা-নন্দিতাদির ছবি মানেই আজকের সমাজ-পরিস্থিতি নিয়ে কোনও না কোনও মেসেজ থাকবেই। এক্ষেত্রেও তাই। ওদের প্রতি দর্শকদের একটা এক্সপেকটেশন থাকে। ওরা সেটা পূরণ করার চেষ্টাও করে। ‘গোত্র’র ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হবে না।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধর্ম-সম্প্রদায়িকতা নিয়ে কী মত?

মানালি: ব্যক্তিগতভাবে ভারী অদ্ভুত লাগে। কারণ, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য মন্ত্রে’ বিশ্বাসী আমি। সবার আগে আমি একজন মানুষ। অসুস্থ ব্যক্তিকে রক্ত দিতে হলে নিশ্চয় কোন ধর্মাবলম্বী মানুষের রক্ত, তা জিজ্ঞেস করব না!

নাইজেল: তাই না? আমার কিন্তু বি পজেটিভ… (হেসে)

মানালি: আমারও।

নাইজেল: লাগলে বোলো, দিয়ে দেব (হেসে)। আমরা সবাই একই বাস্তুতন্ত্রের জীব। বাঁচার জন্য ধর্ম-গোত্রর উর্দ্ধে গিয়ে পারস্পারিক সাহায্য খুব দরকার। 

তোমাদের নিজেদের জীবনে এরকম কোনও ঘটনা..

মানালি: আমার বাড়িতে কোনওদিনই ধর্ম নিয়ে ছুঁৎমার্গ নেই। মুসলিম পরিচারিকাও আমাদের বাড়িতে দীর্ঘদিন কাজ করেছে। আমি যেখানে থাকি পিকনিক গার্ডেন। তার আশেপাশেই কিন্তু তোপসিয়া, পার্ক সার্কাস। নানারকম লোক বসবাস করে। আমি কোনও দিন ধর্ম দিয়ে মানুষকে বিচার করিনি। কিন্তু আজকাল ধর্মের দোহাই দিয়ে ভেদাভেদ, মারপিট চারদিক থেকে যেরকম খবর আসে, শুনি আর স্তম্ভিত হই।

[আরও পড়ুন: ফের জুটি বাঁধছেন সন্দীপ্তা-রাহুল, অপেক্ষা শুরু টেলিদর্শকদের ]

নাইজেল: জন্মগত আমি খ্রিস্টান। ছোট থেকেই আমি নাস্তিক ছিলাম। তবে একসময়ে এক কঠিন পরিস্থিতিতে আমার ধর্ম নিয়ে জানার ইচ্ছে জাগে। প্রথমে বাইবেল পড়লাম। তারপর কোরান-গীতা পড়েছি। বিভিন্ন ঠাকুর-দেবতার পুজোর মন্ত্র পড়ে দেখেছি। কিন্তু পরে মনে হয়, ভগবান তো একজনই। আমার তো এতগুলো ভাষায় তাঁকে বোঝানোর দরকার নেই যে আমি কী চাই। তখন ২০০৭ সাল। মেডিটেশন করা শুরু করি। আমি বিভিন্ন ধরনের মানুষদের নিয়ে কাজ করি। যেমন- রূপান্তরকামী, মাদকাসক্ত, যৌনকর্মী। সেখানে কালীদি বলে একজন প্রবীণ যৌনকর্মী আসতেন। উনি রিহার্সালের মাঝেই একদিন কোঁচড়ে মুড়ি নিয়ে খাচ্ছিলেন। আমি নিজে চেয়ে নিয়েই খেলাম। সেদিন থেকে উনি আমায় ‘ছেলে’ বলে ডাকে। কাজ করতে গিয়ে এরকম অনেককে পেয়েছি। যারা ভিন ধর্মের। কিন্তু আমার খুব কাছের।

মানালি: আমার কাছে নাইজেলদা মানেই ‘অভিজ্ঞতা’র ঝুড়ি।

ঝুমা পালের (মানালি) চোখে তারেক আলি কেমন?

তারেক ঝুমার ভাল লাগার মানুষ। খুব গম্ভীর। পাত্তা দেয় না। কিন্তু টুইস্ট রয়েছে কেমিস্ট্রিতে।

তারেকের (নাইজেল) চোখে ঝুমা পাল (মানালি)..

নীল দিগন্ত, রঙ্গবতী। সব রঙে মাখামাখি ব্যাপার।

 

The post নাইজেলদা আমাকে ইচ্ছে করে ফেলে দিয়েছিল: মানালি appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement